ফুসফুসের ইনফেকশন দূর করার উপায় সম্পর্কে আমাদের জানা উচিত আমাদের শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ন একটি অঙ্গ। বিভিন্ন কারণে আমাদের শরীরে ফুসফুসের ইনফেকশন হয়ে থাকে। আবার, ফুসফুসে ইনফেকশন হওয়ার কারণে আমাদের শরীরের রোগ বা নানা ধরনের ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে যাদের ধূমপান, অ্যালকোহল পান করার অভ্যাস রয়েছে এবং কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত তাদের এই রোগ আরো জটিল আকার ধারণ করে। তাই, আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে ফুসফুসের ইনফেকশন দূর করার উপায় সম্পর্কে।
শিশু ও বয়স্ক উভয়ের এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে শীতকাল এই সময়টাতে ফুসফুসের সমস্যা বেড়ে যায়। ফুসফুসে ইনফেকশন হলে সর্বপ্রথম চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে। চিকিৎসার পাশাপাশি কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে ফুসফুসের ইনফেকশন দূর করা যায় সেটি এখনো বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে, তাই আর্টিকেলটা শেষ পর্যন্ত দেখতে থাকুন।
Table of Contents
ফুসফুসের ইনফেকশন দূর করার উপায়
ফুসফুসের ইনফেকশন দূর করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন, বিশ্রাম নিন, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন, সবসময় মুখে মাস্ক পড়ুন, ধূমপান বন্ধ করুন, বাষ্পীয় বাতাসে শ্বাস নিন, পিঠে ম্যাসাজ করুন, মধু বা আদা দিয়ে গরম চা খান, হলুদ কাঁচা বা গুঁড়া করে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে পান করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী একটি নির্ধারিত অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহন করুন।
উল্লেখিত এই কয়েকটি কাজ করলে খুব দ্রুত ফুসফুসের ইনফেকশন থেকে ভালো হওয়া সম্ভব। তবে ফুসফুসের ইনফেকশন হলে শরীরের বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে। তাই, দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এছাড়া নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহন করতে হবে। অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং ধূমপান, অ্যালকোহল ফুসফুসের সমস্যা বাড়িয়ে দেই। তাই সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ এবং এই আর্টিকেলে দেওয়া ঘরোয়া উপায় গুলো মেনে চলুন।
ফুসফুসের ইনফেকশন দূর করার ঘরোয়া উপায়
ফুসফুসের সমস্যা দূর করার উপায় নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো দেখে নিন।
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা
পানি পান করার মাধ্যমে ফুসফুসের ইনফেকশন বা ফুসফুসের সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। ফুসফুসে সংক্রমণ হলে ফুসফুসের কাজ করার ক্ষমতা কমে যায়। এর ফলে কাশির সাথে কফ যাওয়া, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি আরো সমস্যা হতে পারে। পানি বা তরল আপনার ফুসফুসে থাকা কফ আলগা করতে সাহায্য করে। তাই, পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
বিশ্রাম নেওয়া
শরীরের যে রোগ হোক না কেন বিশ্রামের কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে ফুসফুসে সংক্রমণ হলে শারীরিক পরিশ্রম কম করতে হবে। নিজেকে বিশ্রামে রাখতে হবে। বিশ্রাম আপনার ফুসফুসের সংক্রমনকে দূর করতে সাহায্য করবে। তাই, বাড়িতে থাকুন এবং অতিরিক্ত ব্যায়াম বন্ধ করুন। ব্যায়াম করা ভালো তবে অতিরিক্ত না।
বাষ্পীয় বাতাসে শ্বাস নেওয়া
বাতাসের আদ্রতা তৈরি করতে বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করার জন্য হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন। এটি আপনাকে আপনার শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি দেবে। বাজারে ২০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে হিউমিডিফায়ার পাওয়া যায়। অথবা আপনি চাইলে হিউমিডিফায়ার ছাড়া আরেকটি উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন। তার জন্য একটি বাটিতে গরম জল নিন, এরপর আপনার মুখটি বাটির খুব কাছাকাছি রাখুন।
তারপর, আপনার মাথার পিছনে একটি কাপড় দিন যাতে আপনার মাথা এবং গরম পানির বাটিটি ঢেকে যায়। এভাবে দিনে কয়েক মিনিট বাষ্পীয় বাতাসে শ্বাস নিন। আর আপনি যদি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করেন তাহলে শোয়ার ঘরে এটি সারারাত চালিয়ে রাখতে পারেন এবং মাঝে মাঝে এটি পরিষ্কার করতে হবে।
সবসময় মুখে মাস্ক পড়া
স্কুল, কলেজ, অফিস, বাজারে যাওয়ার সময় মাস্ক পড়ুন। বাইরের ময়লা আবর্জনা ফুসফুসের সংক্রমণ আরো বাড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়া করোনা ভাইরাস (Covid 19) ফুসফুসের সমস্যা বাড়িয়ে দেই। তাই বাহিরে যাওয়ার সময় মাস্ক পড়ার চেষ্টা করুন।
ধূমপান বন্ধ করা
ফুসফুসের ইনফেকশন হওয়ার অন্যতম কারণ ধূমপান। আপনার যদি ধূমপানের অভ্যাস থাকে তাহলে দ্রুত ধূমপান এড়িয়ে চলুন। ধুমপন ফুসফুসের সমস্যা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বাড়িয়ে দিতে পারে।
পিঠে ম্যাসাজ করা
ফুসফুসে আটকে থাকা শ্লেষ্মা দূর করার জন্য পিঠে ম্যাসাজ করুন বা তাপ দিন। আপনি আপনার বন্ধু বা পরিবারের কাউকে বলুন আপনার পিঠে তাপ দেওয়ার জন্য বা ম্যাসাজ করে দেওয়ার জন্য। প্রথমে আপনাকে সামনের দিকে ঝুঁকতে হবে এরপর আপনার পিঠের ম্যাসাজ শুরু করতে বলুন। শ্লেষ্মা বের করার জন্য এটি অনেক কার্যকরী। এছাড়া এর ফলে আপনি শ্বাসকষ্ট থেকে কিছুটা মুক্তি পেতে পারেন।
মধু বা আদা দিয়ে গরম চা খাওয়া
ফুসফুসের ইনফেকশন দূর করার জন্য মধু বা আদা দিয়ে গরম চা অনেক কার্যকরী। এটি আপনার ফুসফুসের অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি দিয়ে আপনাকে আরাম দিবে। তাই, এক্ষুনি ঘরে আদা বা মধু দিয়ে গরম চা বানিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করুন।
হলুদ কাঁচা বা গুঁড়া করে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে পান করা
হলুদ শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর করে। হলুদে থাকা কারকিউমিন শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর করে এবং ফুসফুস প্রাকৃতিকভাবে পরিষ্কার করে। এছাড়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেই। তাই, আপনি চাইলে হলুদের সাথে দুধ মিশিয়ে খেতে পারেন।
পুদিনার চা
পুদিনাতে বিভিন্ন ঔষুধি গুণ রয়েছে। এটি ফুসফুসের সংক্রমন থেকে শুরু করে গলা ব্যথা, শ্লেষ্মা দূর করে। সে কারণে আপনি চাইলে প্রতিদিন পুদিনার চা খেতে পারেন।
রসুন
এতে রয়েছে অ্যালিসিন ফলে রসুন উচ্চ অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান সমৃদ্ধ, যা ফুসফুসের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা খুব দ্রুত দূর করে। এছাড়া রসুন খাওয়ার ফলে ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি ও হাঁপানি কমানো সম্ভব।
উপরের এই সকল ঘরোয়া উপায় এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবনযাপন করলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ফুসফুসের ইনফেকশন দূর করা সম্ভব।
আরো পড়ূনঃ পিরিয়ডের সময় কি কি খাওয়া যাবে না?
ফুসফুসে ইনফেকশন হলে করণীয়
ফুসফুসে ইনফেকশন হওয়ার পর এর সাধারণ লক্ষণ গুলো দেখার সাথে সাথে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে দেখা করতে হবে। যেমন; যদি ২ সপ্তাহের বেশি কাশি হয়, উচ্চ মাত্রায় জ্বর হয়, কাশি সাথে রক্ত বের হয়, বুকে ব্যাথা ও শাসকস্ট হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উত্তম।
এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। যেমন: শাকসবজি, ফলমূল, রসুন, আদা,হলুদ ইত্যাদি। পর্যাপ্ত পরিমান বিশ্রাম নিতে হবে। ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে হালকা ও মাঝারি ধরণের ব্যায়াম করতে হবে।
ফুসফুস পরিষ্কার করার উপায়
ফুসফুস পরিষ্কার রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহন করতে হবে। এর পাশাপাশি নিয়মিত সাধারন ব্যায়াম ও বাষ্পীয় বাতাসে শ্বাস নেওয়া বা শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে হবে। এছাড়া গ্রিন টি, হলুদ, মধু, আদা, রসুন ইত্যাদি ফুসফুসের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় এবং ফুসফুস পরিষ্কার রাখে। সামুদ্রিক মাছে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা ফুসফুস পরিষ্কার রাখার জন্য কার্যকরী।
ফুসফুস ভালো রাখার জন্য প্রতিদিন ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। মাছ, দই, মাছ, মাংস, ডিম ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি রয়েছে যা ফুসফুসের জন্য অনেক উপকারী। গবেষণা অনুযায়ী, ভিটামিন ডি এর অভাবে শিশুদের শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে। তাই, শিশুদের বেশি বেশি ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে।
শুধু যে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খেলে হবে তেমনটা কিন্তু নয়। ভিটামিন ডি এর পাশাপাশি ভিটামিন সি জাতীয় খাবার ও খেতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে এমন কয়েকটি খাবার হলো: আমলকী, পেয়ারা, লেবু, আপেল, কমলা, ইত্যাদি। এগুলো শ্বাসনালির জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে এবং শ্বাসযন্ত্রে অক্সিজেন সরবরাহ করে।
ফুসফুসে ইনফেকশনের লক্ষণ | ফুসফুসের সংক্রমনের সাধারণ লক্ষণ
ফুসফুসের সংক্রমণের সাধারণ লক্ষণ গুলো হলো:
- সবসময় কাশি হওয়া
- দুর্গন্ধযুক্ত বা গন্ধহীন শ্লেষ্মা দেখা দেওয়া
- হালকা বা মাঝারি জ্বর হওয়া
- শ্বাস প্রশ্বাস নেয়ার সময় শ্বাসকষ্ট হওয়া
- গলা ব্যথা ও মাথা ব্যথা করা
- ঠান্ডা ভাব
- বমি বমি ভাব ও বমি
- পেশি ব্যথা
- ক্লান্তি লাগা
- ডায়রিয়া হওয়া
- কফ জমে যাওয়া
আরো পড়ূনঃ কিডনি পরিষ্কার করে এই ৯ খাবার
ফুসফুসে ইনফেকশনের ধরন
ফুসফুসে ইনফেকশন এর ধরন গুলো হলো:
- ব্রঙ্কাইটিস
- নিউমোনিয়া
- সর্দি কাশি
- বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস (যক্ষ্মা, করোনা ভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হুপিং কাশি ইত্যাদি)
আরো পড়ূনঃ ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণ ও প্রতিকার
ফুসফুস ইনফেকশনের ঔষধ | ফুসফুস রোগের চিকিৎসা
সাধারণত বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ এর কারণে ফুসফুসের সমস্যা দেখা দেয়। তাই, ফুসফুস পরিষ্কার রাখার জন্য একটি অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন। এছাড়া ভাইরাস বা ছত্রাকের কারণে ফুসফুস সংক্রমণ হলে অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধের প্রয়োজন হয়।
যদি এন্টিবায়োটিক কাজ না করে তাহলে বেশিরভাগ সময় আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনার শরীর নিজেই সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম হয়।
আপনি যদি এই আর্টিকেলে দেওয়া ঘরোয়া উপায় গুলো মেনে চলতে পারেন তাহলে আপনার শরীর নিজেই সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম হবে।
আরো পড়ুন: ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে
বুকে ইনফেকশন হলে করণীয়
বুকে ইনফেকশন হলে আদা ও লেবুর রস মিশ্রণ করে চা বানিয়ে খেতে পারেন, এতে বুকের কফ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। এছাড়া সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এক কোয়া রসুন খেতে পারেন, এতে শরীর গরম থাকবে। এর পাশাপাশি ঘুমপান ও মদ এড়িয়ে চলতে হবে।
সাধারণত ঠান্ডা লাগার বুকে কফ জমে যায়, গলা ব্যথা করে এর থেকে বুকে ইনফেকশন বা সংক্ৰমণও হতে পারে তাই এই সময় গরম চা, গরম দুধ, রসুন অনেক কার্যকরী। এগুলোর সাথে আপনি চাইলে মধুও খেতে পারেন। মধু গলা ও বুকের কফ দূর করতে সাহায্য করে।
সাধারণত গর্ভবতী মহিলা, শিশু, ধূমপান সেবন করা ব্যক্তিদের বুকে সংক্রমণ বেশি হয়ে থাকে। এছাড়া, যারা অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি খায় না একটানা অনেকক্ষণ ঠান্ডা স্থানে বসবাস করে তাদের এই সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। বায়ু দূষণ, ধূলাবালিও বুকের ইনফেকশনের জন্য দায়ী।
আরো পড়ুন: রাতে ঘুম না আসলে করণীয় কি?
ফুসফুস ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা
ফুসফুস ক্যান্সার রোগীর স্বাস্থ্য উন্নতি করার জন্য নিচের খাবারগুলো খেতে হবে:
- সবুজ শাকসবজি
- আপেল
- টমেটো
- কুমড়া
- কলা
- ব্রকলি
- মটরশুঁটি
- জলপাই তেল
- আঙ্গুর
- আনারস
- চর্বিহীন মাংস
- ডিম
- বাদাম
- চর্বিযুক্ত মাছ
FAQ
ফুসফুস ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় কি?
যদি আপনার শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, কথায় কথায় কাশি হয়, অল্পতেই ক্লান্ত লাগে, কাশি লেগে থাকে বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, গলা ব্যথা ও মাথা ব্যথা হয় তাহলে আপনার ফুসফুসে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি এইসব সমস্যা না হয় তাহলে আপনার ফুসফুস ভালো রয়েছে। তাই আপনার আগে ফুসফুসের লক্ষণ সম্পর্কে জানতে হবে, যা উপরে আলোচনা করা হয়েছে।
ফুসফুসে ইনফেকশন কেন হয়?
বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক ফুসফুসে প্রবেশ করে ফুসফুসের কোষগুলো আক্রান্ত করলে ফুসফুসে ইনফেকশন বা ফুসফুসের সমস্যা দেখা দেয়। সাধারণত, শ্বাসকষ্ট, সর্দি, জ্বর, কাশি ইত্যাদি ফুসফুসের সমস্যার লক্ষণ। ফুসফুসে ইনফেকশন হালকা থেকে গুরুতর পর্যন্ত হতে পারে যার ফলে সঠিক সময়ের মধ্যে চিকিৎসা নিতে হয়।
ফুসফুস পরিষ্কার করার খাবার কোনগুলি?
ফুসফুস ভালো রাখার খাবারের তালিকায় রয়েছে; সবুজ শাকসবজি, আমলকী, টমেটো, বেরি জাতীয় ফল, হলুদ, তুলসী, সবুজ চা, মধু ও আদার চা, লেবুজাতীয় ফল ইত্যাদি। এই সকল খাবার ফুসফুস ভালো রাখে।
ফুসফুসে পানি জমলে কি খাবার খেতে হবে?
ফুসফুসে পানি জমলে শাকসবজি, আখরোট, পেঁপে, পেয়ারা, বাঁধাকপি, আদা, হলুদ, রসুন, বার্লি, বাদাম, ডিম, জলপাই তেল, মটরশুঁটি, চর্বিহীন মাংস, আঙ্গুর, আনারস, বেরি, ইত্যাদি খাবার খেতে হবে।
ফুসফুস ক্যান্সারের ঘরোয়া চিকিৎসা কি?
ফুসফুস ক্যান্সারের ঘরোয়া চিকিৎসা হলো আপনাকে বেশি বেশি করে ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে হবে, পানি বা তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে, বিশ্রাম নিতে হবে, ধূমপান বন্ধ করতে হবে। এছাড়া, নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। যেমন; বাষ্পীয় বাতাসে শ্বাস নেওয়া, পিঠে ম্যাসাজ করা ইত্যাদি। এগুলোর কোন বিকল্প নেই।
কলা কি ফুসফুসের জন্য ভালো?
ফুসফুসের ভালো স্বাস্থ্যের জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ গ্রাম ফাইবার খাওয়া উচিত। কলাতে পটাশিয়াম ও ফাইবার উভয় রয়েছে। একটা কলা প্রায় ৩ থেকে ৫ গ্রাম ফাইবার সরবরাহ করে। সেক্ষেত্রে, কলা ফুসফুসের জন্য ভালো।
লেবু কি ফুসফুসের জন্য ভালো?
লেবু অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যা শ্বাস প্রশ্বাসের উন্নতি ঘটায়, ফুসফুস ভালো রাখে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
সবুজ চা কি ফুসফুসের জন্য ভালো?
অবশ্যই, গ্রিন টি বা সবুজ চা আপনার ফুসফুস পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। সবুজ চা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার, যা ফুসফুসের জন্য অনেক উপকারী। আপনি চাইলে সবুজ চায়ের সাথে লেবু, মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
কোন ব্যায়াম ফুসফুসের জন্য ভালো?
হাঁটা, দৌড়ানো, বাষ্পীয় বাতাসে শ্বাস নেওয়া, পিঠ ম্যাসাজ, যোগ ব্যায়াম, দড়ি লাফানো ইত্যাদি ব্যায়াম গুলো ফুসফুসের জন্য ভালো।
শেষ কথা
আপনি ঘরোয়া উপায়ে ফুসফুসের সমস্যা যতই ভালো করার জন্য চেষ্টা করুন না কেন আপনাকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ ফুসফুসের ইনফেকশন হলে এটি শরীরের বিভিন্ন রোগ তৈরি করতে পারে। তাই, সঠিক সময়ের মধ্যে চিকিৎসা গ্রহন না করলে ভবিষ্যতে ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। শিশু থেকে বয়স্ক সবার ফুসফুসের সমস্যা হতে পারে।
বিশেষ করে যাদের অতিরিক্ত ধূমপান, অ্যালকোহল, নেশা জাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তাদের এই সমস্যা সবার বেশি হয়ে থাকে। তাই, আপনি যদি ধূমপান করে থাকেন এক্ষুনি ছেড়ে দিন এবং বাহিরে বের হওয়ার সময় মাস্ক পড়ুন। এর পাশাপাশি খাবারের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। আর্টিকেলটা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ করে দিন, ধন্যবাদ।