রাতে ঘুম না আসলে করণীয় কি

আপনার যদি রাতে ঘুম না হয় তাহলে আপনার জানা উচিত রাতে ঘুম না আসলে করণীয় কি? সুস্থ থাকার জন্য একজন মানুষের প্রতিদিন কমপক্ষে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। বর্তমানে একজন মানুষ সারাদিন পরিশ্রম করার পরেও সঠিক ভাবে ঘুমাতে পারে না। মূলত যারা টেলিভিশন, মোবাইল, ইন্টারনেটে আসক্ত তাদের সবচেয়ে বেশি এই সমস্যা হয়।

পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমানোর ফলে স্বাস্থ্য, মেজাজ ইত্যাদি ভালো থাকে। ঘুমের অভাবে স্বাস্থ্যের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। বয়স অনুযায়ী প্রতিটি মানুষের ঘুমের চাহিদা ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু প্রাপ্ত বয়স্কদের কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা এবং শিশুদের কমপক্ষে ৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত।

তবে, মাঝের মধ্যে বিভিন্ন সমস্যার কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম নাও হতে পারে। মাঝের মধ্যে হলে সেটি তেমন সমস্যা নেই। কিন্তু, সবসময় যদি রাতে ঘুম না আসে তাহলে ঘুম না আসার কারণ এবং ঘুম বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে জানা উচিত। তাহলে জেনে নিন রাতে ঘুম না আসলে করণীয় কি?

রাতে ঘুম না আসলে করণীয় কি?

রাতে ঘুম না আসলে ঘুম থেকে উঠে বা ঘুমানোর আগে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন। হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করলে আপনার শরীর অনেকক্ষণ ঠান্ডা থাকবে এবং রাতে ভালো ঘুম হবে। ঘুম না আসলে ঠান্ডা স্থান নির্বাচন করুন। অন্ততপক্ষে, রুমে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করুন এবং ঘুমানোর আগে চা, কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

আপনি যে স্থানে ঘুম যাবেন সেই স্থান যদি গরম থাকে তাহলে আপনার ঘুমের সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে বালিশ এবং বিছানা গরম হলে আপনি ঘুমাতে পারবেন না। তাই ঘুমানোর আগে নিজে ঠান্ডা হয়ে নিতে পারেন এবং ঘুমানোর স্থান অবশ্যই ঠান্ডা রাখতে হবে।

আপনার যদি সবসময় রাতে ঘুম না আসে তাহলে আপনাকে দিনে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ব্যায়াম করতে হবে। দিনে কমপক্ষে ৩০ মিনিট সূর্যের আলোতে থাকার অভ্যাস করুন। এছাড়া, ঘুমানোর ৩০ মিনিট আগে মোবাইল, ইন্টারনেট, টেলিভিশন ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে হবে।

রাতে ঘুম না আসার অন্যতম কারণ হলো সঠিক খাদ্য পান না করা এবং অনিয়মিত জীবনযাপন করা। তাই ভালো ঘুমের জন্য প্রতিদিন খাবারের তালিকায় কলা, মধু, দুধ, আখরোট, টমেটো, শসা, সরিষা, ব্রকলি, বেদানা, বাদাম, চকলেট, ইত্যাদি ম্যাগনেশিয়াম ও মেলাটোনিনযুক্ত খাবার খেতে হবে। এই সকল খাবার খেলে আপনি রাতে ভালো ঘুমাতে পারবেন।

আরো পড়ুন: ফুসফুসের ইনফেকশন দূর করার উপায়

ঘুম না আসার কারণ

ঘুম না আসার অন্যতম কারণ হলো মানসিক চাপ বা টেনশন। এছাড়া, আরো অনেক গুলো কারণে ঘুম আসে না। যেমন; অনিদ্রা, নার্কোলেপসি, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়া, ঘুমানোর সময় ডিজিটাল ডিভাইস চালানো, ঘুমানোর আগে চা কফি বা ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খাওয়া ইত্যাদি।

এক নজরে বিস্তারিত জেনে নিন ঘুম না আসার কারণ সমূহ:

মানসিক চাপ বা টেনশন

এই সমস্যার কারণে সাধারণত আমাদের ঘুম আসে না। গবেষনায় দেখা গেছে যে, ঘুমানোর সময় মানুষের মাথায় নানা দুশ্চিন্তা চলে আসে ফলে এটি ঘুমের সমস্যা করে। তাই, যত দুশ্চিন্তা রয়েছে সব গুলো ঘুমানোর আগে করে নিতে হবে। এরপরেও, ঘুমানোর সময় কিছু না কিছু চিন্তা চলে আসে। সেক্ষেত্রে আপনার নিজেকে কন্ট্রোল করা শিখতে হবে এবং চিন্তা মুক্ত থাকতে হবে।

অনিদ্রা বা ইনসমনিয়া রোগ

আপনি অনেক চেষ্টা করার পরেও ঘুমাতে পারছেন না। অনেক সময় ঘুম আসে আবার হঠাৎ মধ্যরাতে যেন জেগে যাচ্ছেন ইত্যাদি ইনসমনিয়া রোগের কারণ। একে এক কথায় অনিদ্রা বলা হয়। অনেক এটিকে সাধারণ সমস্যা বলে, তেমন গুরুত্ব দেই না। ঘুমের সময় নিয়মিত এই সমস্যা হলে শরীরের স্বাস্থ্যের অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে।

শব্দে ব্যাঘাত

ঘুমানোর সময় বাইরে থেকে কোন শব্দ আসলে এটি ঘুমের সমস্যা তৈরি করতে পারে বা ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে। তাই, সবসময় শান্ত পরিবেশ ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে। এছাড়া, ফ্যান চালিয়ে ঘুমালে বাইরের শব্ধ অনেকটা কম আসবে। এরপরেও, যদি আপনি বাইরের শব্ধ আটকাতে না পারেন তাহলে এয়ারপ্লাগ লাগিয়ে ঘুমান।

আরামদায়ক ঘুমের পরিবেশের অভাব

ঘুমের পরিবেশ যদি আরামদায়ক না হয় অর্থাৎ ঘুমানোর সময় যদি আজে বাজে চিন্তা আসে, বেশি ঠান্ডা বা গরম লাগে ইত্যাদি ক্ষেত্রে ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে।

ঘুমের অনিয়মিত রুটিন

যদি এমন হয় আজকে ঘুম গেছেন রাত ১০ টাই, আগামীকাল ঘুমাবেন রাত ১ টাই তাহলে ঘুমের সমস্যা হতে পারে। সবসময় সঠিক সময়ের মধ্যে ঘুমাতে হবে। আপনি রাতে ১০ টাই ঘুমান বা ১২ টাই ঘুমান সবসময় একই সময়ে ঘুমাতে হবে।

ঔষধ সেবন করার কারণে

বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবন করার ফলেও ঘুমের সমস্যা হতে পারে। ঠিকমতো ঘুম নাও হতে পারে। যেমন; উদ্বেগ জনিত সমস্যার ঔষধ ইত্যাদি।

নার্কোলেপসি

ঘুমের সময়টা নষ্ট করে নার্কোলেপসি নামক রোগটি। এটি বেশির ভাগ সময় মস্তিষ্কে ক্ষতি করে থাকে। এই রোগের ফলে পেশির ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণও চলে যাওয়ার মতো সম্ভবনা রয়েছে। তাই, রোগী ক্লান্ত হয়ে যায়, কাজের মাঝখানে ঘুমিয়ে যায়, আরো নানা সমস্যা।

রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম

এই রোগের কারণে রোগীরা ঠিকমতো ঘুমাতে পারে না। ঘুমানোর সময় পায়ের বিভিন্ন সমস্যা দেখ দেয়। যেমন; ঝাঁকুনি, চুলকানি, খিঁচুনি এবং পায়ের ভিতরে নানা সমস্যা অনুভব হয়। ফলে, এটি ঘুমের সমস্যা তৈরি করে।

চিকিৎসকদের মতে, মূলত উপরের উল্লেখিত এই সমস্যা গুলোর কারণে ঘুম হয় না। তারা আরো বলে, এই সমস্যা গুলো ছাড়াও আরো নানা কারণে ঘুমের সমস্যা তৈরি হতে পারে এটাই স্বাভাবিক। যেমন; ঘুমানোর আগে চা, কফি, তামাক, ধূমপান, ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খেলে, প্রতিদিন ব্যায়াম না করলে ইত্যাদি কারণে আপনার ভালোভাবে ঘুম না আসতে পারে।

আরো পড়ুন: ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে?

ঘুম বৃদ্ধির উপায় | ঘুম না আসলে কি করবো

  • চা, কফি, ক্যাফেইন জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা: অনেকের ঘুমানোর আগে চা, কফি খাওয়ার মতো অভ্যাস রয়েছে। এগুলো ঘুমকে নষ্ট করে দেওয়ার অন্যতম মাধ্যম। ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খাওয়ার পর ঘুমাতে গেলে সে ঘুমটা আর গভীর হয় না। ঘুম আসলেও মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ার মতো সম্ভবনা থাকে। তাই, ঘুমানোর আগে এই সকল খাবার খাওয়া যাবে না। আপনার ঘুম যদি বৃদ্ধি করতে চান তাহলে এগুলো এড়িয়ে চলুন।
  • হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করা: ঘুম না আসলে ঘুমানোর আগে হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন। অনেকে মনে করে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করলে শরীর ঠান্ডা থাকবে এবং ভালো ঘুম হবে। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা, বরং হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করলে দীর্ঘক্ষন সময় আপনার শরীর ঠান্ডা থাকবে এবং আপনার ঘুম বৃদ্ধি পাবে।
  • আরামদায়ক ঘুমের পরিবেশ তৈরি করা: আপনি যে রুমে ঘুমান সে রুমে যদি খুব বেশি গরম বা ঠান্ডা অনুভবা হয়, বাইরে থেকে কোন শব্দ আসে তাহলে আপনার ঘুমের সমস্যা হবে এইটা স্বাভাবিক। এই সামান্য বিষয় গুলো অনেকে গুরুত্ব দেয় না। যার ফলে ধীরে ধীরে শরীরের স্বাস্থ্য খারাপ হতে থাকে। তাই, শান্ত পরিবেশে ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
  • প্রতিদিন ২০ – ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা: চিকিৎসকরা বলে, যারা দিনের শুরুতে হালকা ব্যায়াম করে তারা রাতে ভালোভাবে ঘুমাতে পারেন। কারণ ব্যায়াম করার ফলে শরীর সক্রিয় থাকেন। তাই, দিনে কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত। আপনি চাইলে সাঁতার কাটা, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো ইত্যাদি মতো হালকা ব্যায়াম গুলো করতে পারেন।
  • দিনে কমপক্ষে ৩০ মিনিট সূর্যের আলোতে দাঁড়ানো: এটি আপনার নার্কোলেপসি রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করবে। সূর্যের আলোতে দাঁড়িয়ে থাকার মাধ্যমে আপনার মস্তিষ্ককে দিন ও রাতের পার্থক্য বোঝানোর চেষ্টা করতে হবে। ফলে রাতে আপনি আরামে ঘুমাতে পারবেন।
  • ২০ মিনিটের মধ্যে ঘুম না আসলে বিছানা ছেড়ে উঠে যাওয়া: আপনি যদি বিছানায় অস্বস্তি বোধ করেন, আপনার মনে হচ্ছে আপনার ঘুম আসবে না তাহলে ২০ মিনিট পর আপনি বিছানা থেকে উঠে যান। এরপর একটু হাটাহাটি করুন, বই পড়ুন অথবা আপনার হালকা পাতলা যা করতে ইচ্ছা করে সেটি করুন।
  • প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া: অনেকে আছেন যারা সময় না দেখে তাদের যখন ইচ্ছা তখন ঘুমাতে যায়। এইরকম হলে এটি দিন দিন ঘুমের সমস্যা তৈরি করবে। অনেকে এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয় না। কিন্তু, চিকিৎসকরা বলে যারা নির্দিষ্ট সময়ের ঘুমায় না তাদের শরীরের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি ঘুম না আসার সম্ভাবনা থাকে। নির্দিষ্ট সময় বলতে প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে হবে। আপনি যদি রাতের ১২ টা বাজে ঘুমান তাহলে আপনাকে প্রতিদিন ঐ সময়ে ঘুমাতে হবে।
  • ঘুমের ১০ মিনিট পূর্বে গরম দুধ পান করুন: গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমের কাছাকাছি সময়টাতে গরম দুধ খেলে এটি ঘুমের সময়টাকে বৃদ্ধি করে। এছাড়া, দুধের অনেক উপকারিতা রয়েছে।
  • ঘুমানোর আগে হালকা পরিশ্রম করা: গবেষণা অনুযায়ী, যারা পরিশ্রম করে বা ক্লান্ত অবস্থায় ঘুমাতে যান তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েন। এছাড়া, তারা দীর্ঘক্ষন সময় নিয়ে ঘুমাতে পারে। তাই, আপনার দিনে যে সকল কাজ থাকবে তার থেকে কিছু হালকা কাজ রাতের জন্য রেখে দিন। অবশ্যই শারীরিক পরিশ্রম হয় এমন কাজ করবেন।
  • দিনে না ঘুমানো ভালো: আমরা অলসের মতো সারাদিন ঘুমায়। কোন ব্যক্তি যদি দিনে ঘুমায় তাহলে সে রাতে ভালোভাবে ঘুমাতে পারবে না। তাই, সারাদিনে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত।

গর্ভাবস্থায় ঘুম না আসলে করণীয়

গর্ভাবস্থায় মহিলাদের পেট একটু বড় হয়ে যায়, যার ফলে রাতে আরামে ঘুমাতে পারে না। যদি, গর্ভাবস্থায় ঘুম না আসে তাহলে ঘুমানোর সময় ১ বা ২ হাটু ভাঁজ করে রাখতে হবে। এরপর, ২ হাঁটুর মাঝখানে একটি বালিশ দিন এবং পেটের নিচেও একটি বালিশ ব্যবহার করুন। সেক্ষেত্রে আপনি আপনার সুবিধার মতো কোলবালিশ বা সাধারণ বালিশ ব্যবহার করতে পারেন।

সবসময় এক পাশ হয়ে ঘুমানো যাবে না। মাঝে মাঝে বা কিছুক্ষন পর পর ডান ও বাম পাশ হয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে। ঘুম আসার পর কোন পাশ হয়ে শুয়ে আছেন সেটা ভিন্ন কথা। তবে দীর্ঘক্ষন সময় এক পাশ হয়ে না শুয়ার চেষ্টা করবেন।

গর্ভাবস্থায় দিনে ঘুমানো কমিয়ে দিন। প্রয়োজনে রাতে একটু বেশি ঘুমিয়ে নিবেন। কারণ এই সময় ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে। মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে এবং এরপর যদি ঘুম না আসে তাহলে ঘুম থেকে উঠে একটু হাঁটুন অথবা হালকা কাজ করুন।

আরো পড়ুন: ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

গর্ভাবস্থায় যে সকল কারণে ঘুমের সমস্যা হতে পারে:

  • ঘন ঘন প্রসাব হওয়া
  • বমি বমি ভাব
  • পা কামড়ানো
  • দুশ্চিন্তা
  • পেট বড় হয়ে যাওয়া
  • গর্ভের শিশু নড়াচড়া করা
  • পিঠে ব্যথা
  • শ্বাসকষ্ট
এক নজরে জেনে রাখুন
  • গর্ভাবস্থায় মহিলাদের শারীরিক, মানসিক এবং বিভিন্ন ধরনের অভ্যাসের পরিবর্তন হয়। এছাড়া, এই সময় হরমোনের মাত্রা উঠানামা করে যার ফলে সব মিলিয়ে গর্ভাবস্থায় ঘুম না আসাটা স্বাভাবিক। এই সময় যদি আপনার ঘুম আসে এরপরেও আপনি আরামে ঘুমাতে পারবেন না। তবে এটি সবার ক্ষেত্রে নাও হতে পারে। তাই, শান্ত থাকতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে

বাচ্চার ঘুম না আসলে করনীয়

বাচ্চার ঘুম না আসলে সর্বপ্রথম চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উত্তম। এর পাশাপাশি ঘুমের পরিবেশ ঠিক রাখতে হবে। যেমন; পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন স্থানে শোয়াতে হবে, ঘুমের সময় প্রস্রাব করলে পরিষ্কার করে দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে, রুমের আলো হালকা অন্ধকার রাখতে হবে এবং রুম যাতে বেশি গরম বা ঠান্ডা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

শিশুর জন্মের পর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত তার ১১ থেকে ১৪ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। ৬ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশুদের ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।

বাচ্চারা কেন ঘুমাতে চাই না এক নজরে দেখে নিন:

  • বেশিরভাগ বাচ্চারা অন্ধকার রুমে ঘুমাতে চাই না।
  • বাচ্চারা ঘুমানোর সময় পরিবারের সদস্যরা খুব জোড়ে আওয়াজ করলে বাচ্চার ঘুম ভেঙে যায়।
  • ঘুমের সময় প্রস্রাব করে দিলে ঘুম ভেঙে যেতে পারে।
  • বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও নিয়মিত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না ঘুমালে এক পর্যায়ে গিয়ে তার ঘুমের সমস্যা হয়, ঘুম আসতে চায় না।
  • পরিস্কার পরিচ্ছন্ন আরামদায়ক বিছানা না হলে বাচ্চার ঘুমাতে চাই না।
  • কিছু কিছু সময় বাচ্চারা ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখে ভয় পায়, সেক্ষেত্রে তার ঘুমের সমস্যা হতে পারে বা ঘুম ভেঙে যায়।

আরো পড়ুন: দাঁতের মাড়ি শক্ত করার উপায়

ঘুম না আসলে দোয়া

ঘুম না আসলে দোয়া:

  • اَللّٰهُمَّ غَارَتِ النُّجُوْمُ، وَهَدَأَتِ الْعُيُوْنُ، وَأَنْتَ حَيٌّ قَيُّوْمٌ، لاَ تَأْخُذُكَ سِنَةٌ وَّلاَ نَوْمٌ يَا حَيُّ يَا قَيُّوْمُ أَهْدِئْ لَيْلِيْ، وَأَنِمْ عَيْنِيْ

তাড়াতাড়ি ঘুমানোর দোয়া বাংলা

তাড়াতাড়ি ঘুমানোর দোয়া বাংলা:

  • আল্লা-হুম্মা গা-রাতিন নুজুম, ওয়া হাদাআতিল উ’য়ুন, ওয়া আনতা ‘হাইয়ুন ক্বাইয়ুম, লা তাঅ্খুযুকা সিনাতুউ ওয়ালা নাওম, ইয়া ‘হাইয়ু ইয়া ক্বাইয়ুম, আহদিঅ্ লাইলী ওয়া আনিম ‘আইনি।

নোট: এই দোয়াটি (বুসিরি, ইতহাফুল খিয়ারাহ: ৬/৪৬২) এ বর্ননা করা হয়েছে। হাদীস টি যদিও দুর্বল তবে এটি আমলযোগ্য।

অনেক জানতে চাই ঘুম না আসলে কোন দোয়া পড়তে হয় তার জন্য উপরে ghumanor dua টি দেওয়া হলো।

আপনি যদি বিশ্বাসের সাথে ঘুমানোর আগে ghumanor dua টি পড়েন তাহলে নিশ্চিত আপনি রাতে আরামে ঘুমাতে পারবেন, ইনশাআল্লাহ।

এছাড়া, আপনি আপনার নিজের মনের ভাষায় আল্লাহর কাছে রাতে আরামের ঘুমের জন্য দোয়া করতে পারেন।

তবে আরো কিছু তাড়াতাড়ি ঘুমানোর দোয়া আছে যা বিভিন্ন হাদীস থেকে পাওয়া যায়। সেগুলো আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া রয়েছে দেখতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

FAQ

ঘুম না আসলে কি করা উচিত?

ঘুম না আসলে বিছানা থেকে উঠে কিছুক্ষন হাঁটুন, হালকা কাজ করুন, বই পড়ুন। ঘুমানোর আগে গরুর দুধ খেতে পারেন। যদি সম্ভব হয় হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করুন।

১ মিনিটে ঘুম আসার উপায় কি?

১ মিনিটে ঘুম আসার কোন উপায় নেই। সাধারণত, মানুষের ২০ মিনিটের মধ্যে ঘুম আসে। এর মধ্যে যদি ঘুম না আসে তাহলে ঘুম বৃদ্ধি করার উপায় গুলো মেনে চলতে হবে।

মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে যায় কেন?

মাঝ রাতে শ্বাস প্রশ্বাসে বাধা পাওয়ার কারণে ঘুম ভেঙে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা রাতে ঘুমানোর সময় মোবাইল, ল্যাপটপ, টিভি ব্যবহার করে তাদের মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে যায়। এছাড়া, বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ার সমস্যা বাড়তে পারে।

রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম কি?

রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম হলো: ইনসমনিয়া বা অনিদ্রা রোগ। দীর্ঘদিন এই রোগ থাকলে শরীরের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে। এছাড়া, মেজাজ বিষণ্ণ হয়ে থাকে, সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব অনুভব হয়।

কি করলে ঘুম আসবে না?

ঘুমানোর আগে ডিজিটাল ডিভাইস যেমন; মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার চালানোর ফলে ঘুম আসে না। এছাড়া প্রতিদিন একই সময়ে না ঘুমালে, দুশ্চিন্তা করলে, আরামদায়ক পরিবেশে না ঘুমালে রাতে ঘুম আসে না।

কি খেলে রাতে ঘুম আসে না?

ঘুমানোর আগে ক্যাফেইন যুক্ত খাবার যেমন; চকলেট, চা, কফি খেলে রাতে ঘুম আসে না।

কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়?

ভিটামিন ডি এর অভাবে ঘুম কম হয়। এই ভিটামিন মেলাটোনিন হরমোন ক্ষরণে সাহায্য করে। ভিটামিন ডি-র অভাবে শরীর ক্লান্ত লাগে এবং উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।

শেষ কথা

রাতে ঘুম না আসলে সবাই যে ভুলটি করে সেটি হলো ঔষধ সেবন করা। অনেক ঔষধ সেবন করে রাতে দীর্ঘক্ষণ সময় ঘুমাতে পারে। তবে এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। তাই, আপনার কাছে অনুরোধ ঔষধ খাওয়ার মাধ্যমে ঘুম বৃদ্ধি করার চেষ্টা করবেন না।

রাতে ঘুম না আসলে করণীয় কি এই আর্টিকেলে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে আপনি সেগুলো মেনে চলুন ইনশাআল্লাহ আপনি আরামে ঘুমাতে পারবেন। আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে দোয়া পড়ে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন।

আমি “Health Bissoy” ও বাংলাদেশের অনেক ওয়েবসাইটে সহকারী কন্টেন্ট স্ট্রাটেজিস্ট হিসাবে কাজ করি। পড়াশোনার পাশাপাশি আমি একজন এসইও এক্সপার্ট এবং জুনিয়র ওয়েব ডেভেলপার। ২০২৩ সাল থেকে আমি বাংলাদেশের অনেক ওয়েব সাইটে কন্টেন্ট স্ট্রাটেজিস্ট ও ডিজাইনার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি।

Leave a Comment

error: Content is protected !!