যাদের ক্যান্সার হয় তাদের একটি প্রশ্ন ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে। ক্যান্সার খুব ভয়াবহ একটি রোগ, ক্যান্সারে আক্রান্ত বেশির ভাগই মানুষ মারা যায়। তবে, সব ধরনের ক্যান্সারে মৃত্যু হয় না। সময়ের মধ্যে সঠিক চিকিৎসা গ্রহন করলে এই রোগ ভালো হয়ে যায়, যার সংখ্যা খুবই কম। এই কারণে আক্রান্ত ব্যাক্তি থেকে শুরু করে আত্বীয় স্বজন সবাই চিন্তিত হয়ে পড়ে। সুখবর হলো বর্তমানে ক্যান্সার রোগের অনেক উন্নত ঔষধ এবং চিকিৎসা রয়েছে। এর ফলে, ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা কমে আসছে।
ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে এক কথায় বললে এর উত্তর দেওয়া অসম্ভব। আপনি যদি একজন মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে বিশ্বাস করুন মানুষ কতদিন বাঁচবে সেটি আল্লাহর উপর নির্ভর করে। সত্যি কথা বলতে, ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে সেটা ডাক্তাররা পর্যন্ত বলতে পারে না। তবে, কিছু গবেষনায় ক্যান্সার আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিদের একটি তালিকা তৈরি করেছে এর থেকে বোঝা যায় ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তি কত দিন বাঁচতে পারে। তাহলে গবেষণা অনুযায়ী জেনে নেওয়া যাক ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে?
Table of Contents
ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে
মার্কিন ক্যান্সারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্যান্সার থেকে বেঁচে যাওয়া প্রায় ১৮% শতাংশ রোগ নির্ণয়ের পর ২০ বছরের বেশি বেঁচে আছেন এবং ৬৭% শতাংশ রোগ নির্ণয়ের পর প্রায় ৫ বছর বা তারও বেশি বেঁচে আছেন। বাংলাদেশের ডাক্তারদের মতে ক্যান্সারের আক্রান্ত রোগীরা ৬ মাস থেকে ৫ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। কিছু কিছু রোগী ১০-২০ বছর বা তারও বেশি বেঁচে থাকে।
বর্তমানে সঠিক সময়ে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে ক্যান্সার পাঁচ বছরের বেঁচে থাকার হার ৬৮% শতাংশ। তবে, এটি নির্ভর করে ক্যান্সারের ধরন এবং স্থানের উপর। যেমন: অগ্নাশয় ক্যান্সারে বেঁচে থাকার হার ১২%, খাদ্যনালী এবং লিভার ক্যান্সারে বেঁচে থাকার হার ২১%, ফুসফুসের ক্যান্সারে বেঁচে থাকার হার ২৩%, লিউকেমিয়া ক্যান্সার বেঁচে থাকার হার ৬৬%, নন-হজকিন লিম্ফোমা ক্যান্সারে বেঁচে থাকার হার ৪৭-৭৪%, স্তন ক্যান্সারে বেঁচে থাকার হার ৭৫-৯১ %, কোলোরেক্টাল ক্যান্সারে বেঁচে থাকার হার ৫০-৬৫%, কিডনি ক্যান্সারে বেঁচে থাকার হার ৫০-৭৭%, প্রোস্টেট, টেস্টিকুলার এবং থাইরয়েড ক্যান্সারে বেঁচে থাকার হার ৯০-৯৮% শতাংশ।
ক্যান্সারের বেঁচে থাকার হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি শুধুমাত্র উন্নত দেশগুলোতে সম্ভব হচ্ছে। যেমন; উপরে উল্লেখিত বেঁচে থাকার হার মার্কিন ক্যান্সারে রিপোর্ট অনুযায়ী। তাই, আপনি যদি ক্যান্সারে বেশি দিন বাঁচতে চান তাহলে আপনাকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত দেশ গুলো থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। কারণ, শুধুমাত্র সঠিক এবং বিলাসবহুল চিকিৎসার মাধ্যমে ক্যান্সার রোগ ভালো করা সম্ভব, অন্যতায় অল্প সময়ে মৃত্যু নিশ্চিত।
ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে এই কথা কোন ডাক্তার বলেন না এবং এটি বলাও সম্ভব না। ক্যান্সারের ধরন, চিকিৎসার ধরন এবং শরীরের কোন স্থানে ক্যান্সার হয়েছে ইত্যাদি সকল কিছু মিলিয়ে নির্ভর করবে ক্যান্সার হলে আপনি কতদিন বাঁচবেন। সর্বশেষ একটাই কথা ক্যান্সার হলে উন্নত এবং বিলাসবহুল চিকিৎসার প্রয়োজন, অন্যতায় বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেক কম।
ক্যান্সার কি
আমাদের শরীরে অসংখ্য কোষ রয়েছে, শরীরের কিছু কোষ যখন অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পায় তখন যে রোগ সৃষ্টি হয় সেটিই ক্যান্সার হিসেবে পরিচিত। ক্যান্সার শরীরের এক অংশ থেকে অন্য অংশে খুব সহজে ছড়িয়ে পড়ে। এটির শরীরের স্বাভাবিক টিস্যু ধ্বংস করার ক্ষমতা রয়েছে। ক্যান্সার অনেক মারাত্বক এবং ভয়াবহ একটি রোগ, যার থেকে মুক্তি পাওয়া বেশ কঠিন।
ক্যান্সার কিভাবে হয়
ডিএনএ-তে সমস্যা বা পরিবর্তনের কারণে ক্যান্সার হয়। এছাড়া, বিকিরণ বা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিকের সংস্পর্শে কারণেও ক্যান্সার হতে পারে। তবে এই কারণটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্পষ্ট নয়। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে জানায়, যেখানে বায়ু দূষণের মাত্রা বেশি সেখানে ফুসফুস ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যাও বেশি। এর থেকে বলা যায় যে বায়ু দূষণ ক্যান্সারের অন্যতম কারণ।
এছাড়া ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে সেগুলো হলো:
- তামাক ব্যবহার করা।
- বায়ু দূষণ।
- অ্যালকোহল সেবন।
- সূর্য থেকে অতিবেগুনি বিকিরণ।
- অতিরিক্ত ওজন।
- পরিবারের পূর্বে কারো থাকলে।
- অস্বাস্থ্যকর খাবার
- হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV) এবং হেপাটাইটিস ভাইরাস সংক্রমণ।
আরো পড়ুনঃ আঁচিল দূর করার ক্রিমের নাম ও ঘরোয়া উপায়।
ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণ
- ত্বকের পরিবর্তন দেখা যায়
- ক্ষুধা কমে যাওয়া
- খুব ক্লান্ত বোধ করা
- দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা গলা ভাঙা
- কাশির সময় রক্ত
- বমিতে রক্ত
- প্রস্রাবে রক্ত
- মলত্যাগে পরিবর্তন আসে
- মলের সাথে রক্ত যাওয়া
- জ্বর, রাতে ঠান্ডা লাগা বা ঘেমে যাওয়া
- অস্বাভাবিক রক্তপাত হওয়া
- মানসিক অস্বস্তি
- শরীরের যে কোন জায়গায় চাকা বা দলা দেখা দেয়া
- হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস পাওয়া
- দীর্ঘদিনের ব্যথা
- খাবার গ্রহণে সমস্যা (বদহজম বা অস্বস্তি)
আরো পড়ুন: পিরিয়ডের সময় কি কি খাওয়া যাবে না?
ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা
- ডিম
- চর্বিহীন মাংস, মাছ
- মুরগি
- দুগ্ধজাত দ্রব্য
- বাদাম
- শুকনো মটরশুটি
- ডাল
- আপেল
- কলা
- স্যুপ
- বেরি
- দই
- কমলালেবু
- জলপাই তেল
- কম লবণযুক্ত খাবার
- করলা
- গাজর
- শালগম
- টমেটো
- কুমড়া
- ব্রকলি
- ফুলকপি
- বাঁধাকপির
নোট: ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার খাবেন, অন্যথায় নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনবেন।
ক্যান্সার থেকে বাঁচার উপায়
- বায়ু দূষণ এড়িয়ে চলা: বায়ু দূষণ হলো ক্যান্সার হওয়ার অন্যতম কারণ, তাই সবসময় বায়ু দূষণ এলাকা ত্যাগ করতে হবে।
- তামাক, ধূমপান, অ্যালকোহল ইত্যাদি কে না বলুন: এগুলো ফুসফুস ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। এছাড়া জরায়ু, কিডনি, পাকস্থলী ইত্যাদি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে: যাদের অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যায় তাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে। তাই, ওজন বাড়ানো যাবে না। ওজন যদি বাড়িয়ে যায় তাহলে ওজন কমানোর চেষ্টা করুন।
- নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে: প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ব্যায়াম করতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হবে রাতের খাবারের পর নিয়মিত হাঁটবেন এবং দুপুরের খাবার খাওয়ার পর হালকা ব্যায়াম করবেন। প্রতিদিন একই সময়ে ব্যায়াম করা খুবই কার্যকর।
- সূর্য থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে: যদিও, উষ্ণ সূর্যের আলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তবে, অতিরিক্ত সূর্যের আলো ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। বিশেষ করে সকাল ১০ থেকে ৪ টার সময় সূর্যের আলো অনেক ক্ষতিকর। যদি, বিশেষ কাজে এই সময় আপনার বাহিরে যাওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে আপনি লম্বা হাতের শার্ট, প্যান্ট, টুপি, সানগ্লাস এবং ছাতা নিয়ে বের হতে করেন।
- নিয়মিত স্ক্রিনিং টেস্ট করতে হবে।
- স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।
- যৌন সংক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকতে হবে: হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) ক্যান্সার রোগের অন্যতম কারণ। তাই, নিরাপদ-যৌন অনুশীলন অনুসরণ করতে হবে এবং যৌন মিলনের সময় কনডম ব্যবহার করতে হবে।
- প্রযুক্তি ডিভাইস এড়িয়ে চলতে হবে: যেমন: টেলিভিশন, মোবাইল, কম্পিউটার, ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে হবে।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসে পেট ব্যথা হওয়ার কারণ।
ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ
- জ্বর বা কাঁপুনি
- লিভার বা প্লীহা বড় হয়ে যাওয়া
- ক্রমাগত অবসাদ, দুর্বলতা
- ঘন ঘন বা মারাত্মক সংক্রমণ
- ত্বকে ছোট লাল দাগ পড়া
- সহজেই রক্তপাত হওয়া
- অতিরিক্ত ঘামা, বিশেষত রাতে
- হাড়ে ব্যথা কিংবা শরীরে চাপ দিলে ব্যথা
- নাক থেকে বারবার রক্ত ঝরা
- ওজন কমতে থাকা
- জরায়ু ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে
- লিভার ক্যান্সার রোগী কতদিন বাঁচে
- ক্ষুধা কমে যাওয়া এবং বমি বমি ভাব হওয়া।
আরো পড়ুন: ফুসফুসের ইনফেকশন দূর করার উপায়
ক্যান্সার কি ভাল হয়
প্রাথমিক অবস্থায় শুরুর দিকে ক্যান্সার রোগ ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব। সাধারণত প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার রোগ সহজে ধরা পড়ে না। ফলে, শেষ পর্যায়ে গিয়ে ক্যান্সার রোগ ধরা পড়লেও চিকিৎসার অভাবে ক্যান্সার রোগ ভালো হয় না।
এখন পর্যন্ত সম্পূর্ন ভাবে ক্যান্সার রোগ ভালো করার কোন ঔষুধ বের হয় নি। তাই, ক্যান্সারের আক্রান্ত রোগীর মৃত সংখ্যা অনেক বেশি হয়ে থাকে। তবে, শুনে খুশি হবেন প্রায় গত কয়েক বছর ধরে ক্যান্সারে আক্রান্তদের বেঁচে থাকার হার তিনগুণ বেড়েছে। উন্নত দেশগুলোতে ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ভালো চিকিৎসা পেয়ে থাকে।
সাধারণত টেস্টিকুলার, ত্বক, থাইরয়েড, প্রোস্টেট, টেস্টিস এবং স্তনের ক্যান্সার গুলো সবচেয়ে নিরাপদ ক্যান্সার হিসেবে পরিচিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই সকল ক্যান্সারের ভালো চিকিৎসা রয়েছে।
FAQ
জরায়ু ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে?
কানাডিয়ান ক্যান্সার সোসাইটির রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের দেশের জরায়ু ক্যান্সারে ৫ বছর বা তারও বেশি বেঁচে থাকার হার ৮২% শতাংশ।
লিভার ক্যান্সার রোগী কতদিন বাঁচে?
প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৭ লাখ ৮০ হাজার মানুষ লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকে, এর মধ্যে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার মানুষ মারা যায়। এর কারণ লিভার ক্যান্সার সাধারণত শেষ পর্যায় গিয়ে ধরা পড়ে। প্রায় ৫% মানুষ চিকিৎসার মাধ্যমে আরো ৫-১০ বছর বা তার ও বেশি বেঁচে থাকে। প্রাথমিক অবস্থায় এটি ধরা পড়লে এবং সঠিক চিকিৎসা নেওয়ার মাধ্যমে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব।
স্টেজ ফোর ক্যান্সার রোগী কতদিন বাঁচে?
স্টেজ ফোর ক্যান্সার রোগীর শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এর মানে স্টেজ ফোর ক্যান্সার রোগী কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত বেঁচে থাকে। ক্ষেত্র বিশেষে অনেকে কয়েক বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। তবে এই না যে সবাই ৬ মাসের মধ্যে মারা যাবে। তাই এই বিষয়ে ভবিষ্যতবাণী না করায় উত্তম।
গলায় ক্যান্সার কেন হয়?
ধূমপান, তামাক, মদ, অ্যালকোহল, পান মসলা ইত্যাদি গলায় ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেই। এছাড়া ফলমূল, শাকসবজি, স্বাস্থ্যকর খাবার না খাওয়ার ফলেও গলায় ক্যান্সার হতে পারে। পরিবেশ বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শের কারণেও গলায় ক্যান্সার হতে পারে।
গলায় ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে?
গলায় ক্যান্সার হলে রোগীদের ৫ বেঁচে থাকার হার প্রায় ৬০% শতাংশ। মুখে বা গলায় ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যুর হার ১.৮% শতাংশ। তবে এটি সম্পূর্ন চিকিৎসা, রোগী এবং ক্যান্সারের ধরনের উপর নির্ভর করে। শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক উভয়কেই এটি প্রভাবিত করতে পারে।
গলায় ক্যান্সার কি দ্রুত বৃদ্ধি পায়?
না, এটি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। গলায় ক্যান্সারের আকার প্রতি ২ থেকে ৩ মাস পর দ্বিগুণ হতে পারে। তবে বলা যায় অন্যান্য টিউমারের চাইতে গলায় ক্যান্সার দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
গলায় ক্যান্সার কেমন হয়?
গলায় ক্যান্সার হলে আপনি লক্ষ্য করতে পারবেন আপনার ঘাড়ের এক বা দুই পাশে ফুলে গেছে। এছাড়া, ঘা বা লাল ও সাদা দুই ধরনের ছোপ দেখতে পাবেন। এটি গলার পিছনে অথবা মুখে উভয় জায়গায় হতে পারে।
গলায় ক্যান্সার কাদের বেশি হয়?
সাধারণত, ৬০ বছরের উপর বয়সের সবচেয়ে বেশি গলায় ক্যান্সার রোগ দেখা দেয়। তবে, এটি যেকোনো বয়সে হতে পারে। কিন্তু, ৪০ বছরের কম বয়সীদের এই রোগ সবচেয়ে কম দেখা যায়।
স্তন ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে?
স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে প্রায় ৮৯% শতাংশ রোগী ৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। এছাড়া, ৮৩% শতাংশ রোগী ১০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে এবং ৬৮% শতাংশ রোগী ১৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। তবে, তবে প্রাথমিক অবস্থায় রোগীর সঠিক চিকিৎসা পেলে সে স্তন ক্যান্সার থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পেতে পারেন।
কোন ধরনের স্তন ক্যান্সার ভালো হয় না?
মেটাস্ট্যাটিক স্তন ক্যান্সার পুরোপুরি নিরাময় করা যায় না। কারণ, এই ক্যান্সার শরীরের অন্যান্য অঙ্গ যেমন; লিভার, হাড়, হার্ট, ফুসফুস, মস্তিষ্ক ইত্যাদি সব জায়গায় ছড়িয়ে যেতে পারে।
ব্লাড ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে
গবেষণা করে দেখা গেছে লিউকেমিয়া বা লিউকেমিয়া রক্তে ক্যান্সার আক্রান্ত ৬৬ শতাংশ মানুষ প্রায় ৫ বছর বা তার বেশি সময় বেঁচে থাকতে পারে। বাকি ৩৪ শতাংশ মানুষ এর আগেই মারা যায়। সাধারণত, ব্লাড ক্যান্সার ব্যথাহীন হয়ে থাকে, এরপরেও কিছু ব্যক্তি ব্যাথা অনুভব করতে পারে। রোগী যদি সময়ের মধ্যে সঠিক চিকিৎসা নিতে না পারে তাহলে ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। বিশেষ করে মাইলোমা নামে এক ধরনের ব্লাড ক্যান্সার রয়েছে যার চিকিৎসা থাকার পরেও এটি ভালো হয় না।
শেষ কথা
এই আর্টিকেলে ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে সেটি নিশ্চিত ভাবে বলা হয় নি। এই আর্টিকেলে বেশির ভাগই বলা হয়েছে, ক্যান্সার রোগীরা ৫ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। এর মানে এই না যে সবাই শুধুমাত্র ২০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। গবেষণা অনুযায়ী, ১০০ জনের মধ্যে কম সংখ্যক মানুষ হয়তো বেশিদিন বাঁচতে পারে আর কিছু সংখ্যক মানুষ অল্প সময়ের মধ্যে মারা যায়। এর উপর ভিত্তি করে এই আর্টিকেলে ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে সেটি আলোচনা করা হয়েছে। যাইহোক, আপনি যদি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার চেষ্টা করুন এবং বেশি বেশি আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। ধন্যবাদ।