আপনার যদি সবসময় তীব্র মাথা ব্যাথা হয়, তাহলে মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি ঔষধের নাম জেনে নিন। দ্রুত মাথা ব্যথা কমানোর ঔষধ গুলো আপনাকে অনেক উপকার করবে।
অনেকে আছেন অতিরিক্ত পরিশ্রম ও চিন্তা করলেও তাদের মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে যায়। আবার দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার কারণে অনেকের মাথাব্যথা হয়। এছাড়া জ্বর, আঘাত, ঠান্ডা ইত্যাদির কারণে সবসময় মাথা ব্যথা লেগেই থাকে। যাইহোক, মাথা ব্যথা খুব সাধারণ একটি সমস্যা। প্রত্যেকেই তাদের জীবনে অন্তত একবার হলেও মাথা ব্যথা অনুভব করেছে। বিশ্বে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ টিরও বেশি বিভিন্ন ধরণের মাথাব্যথা রয়েছে। প্রতিটি মাথা ব্যথা ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিশ্বের প্রায় ৪৫ থেকে ৫২ শতাংশ মানুষ প্রতি বছর মাথা ব্যথায় ভোগেন।
১০০ জনের মধ্যে ৬৫ থেকে ৭৮ জনের তাদের জীবনের কোনো না কোনো সময়ে মাথাব্যথা হয়, যা খুবই কষ্টদায়ক। বিশেষ করে মস্তিষ্কের টিউমার, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ইত্যাদির কারণে মাথা ব্যথা খুব মারাত্মক হয়ে থাকে। সাধারণত, ৩০ বছরের কম বয়সী ব্যক্তিদের মাথাব্যথার ঝুঁকি কম থাকে। এই ব্যথা ওষুধ এবং ঘরোয়া উপায়ে ভালো করা সম্ভব। তাহলে জেনে নিন মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি ওষুধের নাম এবং দ্রুত মাথা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়।
Table of Contents
মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি ঔষধের নাম
মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি ঔষধের নাম গুলো হলো:
- Tufnil
- Napa extra
- Tolfem
- Anilic
- Arain
- Migratol
- pizo-a 1.5
- Paracetamol
- Namitol
- Ibuprofen
1. Tufnil (টাফনিল)
টাফনিল হলো একটি মাথা ব্যথার ওষুধের নাম। হালকা থেকে মাঝারি ব্যথা ও মাইগ্রেন ব্যথায় এই ঔষধ সেবন করার পরামর্শ দেওয়া হয়। মাথা ব্যথা তীব্র হলে টাফনিল ১০০/২০০ মিলিগ্রাম দিয়ে একটি বা দুটি করে খেতে হয়।
টাফনিল ট্যাবলেট বাচ্চাদের জন্য উপযুক্ত নয়। এটা শুধুমাত্র প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য। এছাড়া এটি ভরা পেটে খেতে হয়। তবে, টাফনিল সব ধরনের মাথা ব্যথায় কাজ করে। এটি মাইগ্রেন জনিত মাথা ব্যথায় সবচেয়ে বেশি কাজ করে থাকে।
টাফনিল ট্যাবলেট খাওয়ার পর যদি রোগীর কোন সমস্যা দেখা দেয়। যেমন; এলার্জি বেড়ে যাওয়া, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, শরীরে পানি আসা, পেট ব্যাথা, ক্লান্তি ইত্যাদি হলে এই ঔষধটি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। গর্ভাবস্থায় ও সন্তানকে দুধ খাওয়ানোর সময় টাফনিল ট্যাবলেট এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
চিকিৎসকরা, মাথা ব্যথার পাশাপাশি আঘাত জনিত ব্যথা, অপারেশন পরবর্তী ব্যথা ও কাটা চেরা ব্যথায় এই ঔষধটি সেবন করার পরামর্শ দিয়ে থাকে।
বাজারে একটি ২০০ মিলিগ্রাম টাফনিল ট্যাবলেট এর দাম ১০ টাকা। এক পাতা টাফনিল ট্যাবলেট এর দাম ১০×১০= ১০০ টাকা।
2. Napa extra (নাপা এক্সট্রা)
মাথা ব্যথা ও মাইগ্রেন জনিত সমস্যার জন্য নাপা বা নাপা এক্সট্রা খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। জ্বর জনিত মাথা ব্যথার জন্য নাপা এক্সট্রা অনেক কার্যকরী। কিন্তু নাপা এক্সট্রাতে ক্যাফেইন নামক এক ধরনের উপাদান থাকে, যার ফলে ঘুম হয় না। তবে এটি মাথা ব্যথা দূর করে।
মাথা ব্যথার জন্য ঘুম অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই, বেশিরভাগ চিকিৎসক এই ঔষধটি এড়িয়ে যায়। তবে নাপা এক্সট্রা না খেয়ে শুধুমাত্র নাপা বা এইচ ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে। এতেও মাথা ব্যথা কমবে।
যদি আপনার মাথা ব্যথা দুশ্চিন্তার কারণে না হয়ে মাইগ্রেন জনিত সমস্যার কারণে হয় তাহলে আপনি নাপা এক্সট্রা খেতে পারেন।
১২ বছরের নিচে কম বয়সী শিশুরা এই ঔষধটি খেতে পারবে না। ঔষধটি প্রয়োজন অনুযায়ী প্রতি ৪-৬ ঘণ্টা পর পর একটি করে খাওয়া যাবে। ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮ টির বেশি খাওয়া যাবে না। নাপা এক্সট্রা খাওয়া পর যদি বিভিন্ন পার্শপ্রতিক্রিয়া দেখেন তাহলে এটি এড়িয়ে চলুন।
১ টি নাফা এক্সট্রা এর দাম ২.৫০ টাকা। এক পাতা নাপা এক্সট্রা দাম ১২×২.৫০=৩০ টাকা।
আরো পড়ুন: অতিরিক্ত ঘুম দূর করার উপায়।
3. Tolfem (টলফেম)
যেকোন ধরনের তীব্র মাথা ব্যাথার জন্য টলফেম ঔষধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। হালকা থেকে মাঝারি মাথা ব্যথার জন্য টলফেম ট্যাবলেট দিনে ১০০ থেকে ২০০ মিলিগ্রাম দিনে ৩ বার খেতে হয়। তীব্র মাইগ্রেনের ব্যথায় এটি ভালো কাজ করে।
টলফেম ঔষধের তেমন কোন ক্ষতিকারক দিক নেই। তবে, ডাক্তারের অনুমতি ছাড়া গর্ভবতী মহিলারা এটি খেতে পারবে না।
মাথা ব্যথা হঠাৎ করে তীব্র হয়ে গেলে গ্যাস্টিকের ঔষধের সাথে টলফেম ঔষধটি খেলে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে মাথা ব্যথা দূর হয়ে যাবে। টলফেম স্কয়ার কোম্পানির একটি মেডিসিন। এটি বাজারে পাওয়া যায়।
১ টি টলফেম ট্যাবলেট এর দাম ১০ টাকা। ১ পাতা টলফেম ট্যাবলেট এর দাম ১০×১০=১০০ টাকা।
4. Anilic (এনিলিক)
এনিলিক হলো দ্রুত মাথা ব্যথা কমানোর ঔষধ। এটি ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির একটি ঔষধ। ডাক্তার মাইগ্রেন জনিত মাথা ব্যাথা, হালকা থেকে মাঝারি মাথা ব্যথা, জ্বরে মাথা ব্যথার জন্য এনিলিক ঔষধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে।
হালকা থেকে মাঝারি মাথা ব্যথায় এনিলিক ট্যাবলেট দিনে ৩ বার খাওয়া যাবে। ঘুম না আসার কারণে মাথা ব্যথা, অল্প পরিশ্রমে মাথা ব্যথা ইত্যাদিতে এই ট্যাবলেটটি খাওয়া যাবে।
উচ্চ রক্তচাপ, অ্যাজমা, পাকস্থলীর আলসার, যকৃৎ সংক্রমণ এবং বয়স্ক রোগীরা এনিলিক ঔষধ খাওয়ার সময় ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
১ টি এনিলিক ট্যাবলেট এর দাম ৯ টাকা। এক পাতা বা ১০ টি এনিলিক ট্যাবলেট এর দাম ৯০ টাকা।
5. Arain (এ্যারেইন)
হালকা থেকে মাঝারি মাথা ব্যথা, মাইগ্রেন জনিত মাথা ব্যথা ও তীব্র মাথা ব্যথার জন্য ডাক্তার এ্যারেইন ঔষধ খাওয়ার পরামর্শ দেয়। এটি হালকা থেকে মাঝারি ব্যথার জন্য দিনে ৩ বার খাওয়া যাবে। মাইগ্রেন জনিত তীব্র মাথা ব্যথায় এটি ২ ঘণ্টা পর আরেকটি খাওয়া যাবে।
এই ঔষধটি খালি পেটে খাওয়া যাবে না। এটি খাবার খাওয়ার পর খেতে হয়। গর্ভাবস্থায় এই ঔষধটি এড়িয়ে যেতে হবে। ডাক্তার খাওয়ার অনুমতি দিলে খাওয়া যাবে। জ্বরের জন্য এই ঔষধের সাথে নাপা এক্সট্রা খাওয়া যাবে।
কিছু কিছু রোগে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যেমন; ডায়রিয়া, উচ্চ রক্তচাপ, অ্যাজমা, যকৃত সংক্রমণ ইত্যাদি।
১ টি এ্যারেইন ট্যাবলেট এর দাম ১০ টাকা। এক পাতা অর্থাৎ ১০ টি এ্যারেইন ট্যাবলেট এর দাম ১০×১০=১০০ টাকা।
6. Migratol (মাইগ্রেটল)
ডাক্তাররা সাধারণত মাথা ব্যথায় ভোগা রোগীদের মাইগ্রেটল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। বিভিন্ন কারনে মাথা ব্যাথা হতে পারে। যেকোন মাথা ব্যথায় এটি খাওয়া যেতে পারে।
অপারেশনের পর মাথা ব্যথা করা, অতিরিক্ত জ্বরের কারণে মাথা ব্যথা, দুশ্চিন্তার কারণে মাথা ব্যথায় এই ঔষধটি খাওয়া যাবে। হালকা থেকে মাঝারি মাথা ব্যথায় এটি দিনে ৩ বার খাওয়া যাবে।
মাইগ্রেটল হলো বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি কোম্পানির একটি ঔষধ। ১ টি মাইগ্রেটল ট্যাবলেট এর দাম ১০ টাকা। এক পাতা বা ১০ টি মাইগ্রেটল ট্যাবলেট এর দাম ১০×১০=১০০ টাকা।
আরো পড়ুন: কিডনি ব্যথা দূর করার উপায়
7. pizo-a 1.5 (পিজো – এ)
পিজো – এ ০.৫ এই ঔষধটি মাইগ্রেন ও তীব্র মাথা ব্যাথায় ভালো কাজ করে। অস্থিরতায় এই ঔষধটি খাওয়া যেতে পারে। রাতে ঘুমানোর সময় ঘুম আসে না বা অস্থিরতা কাজ করে তাদের জন্য এই ভালো কাজ করে।
প্রতিদিন রাতে খাবার খাওয়ার পর একটি করে পিজো – এ এই ঔষধটি খেতে হবে। তবে এটি খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। বাজারে বা ফার্মেসিতে এই ঔষধটি পাওয়া যাবে।
১ টি পিজো – এ ০.৫ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট এর দাম ৩.০১ টাকা। এক পাতা বা ১০টি পিজো – এ ট্যাবলেট এর দাম ৩০.১০ টাকা।
8. Paracetamol (প্যারাসিটামল)
জ্বর ও ব্যথা উপশম করার জন্য ডাক্তাররা প্যারাসিটামল খাওয়ার পরামর্শ দেই। জ্বর জনিত মাথা ব্যথায় প্যারাসিটামল ভালো কাজ করে। যেকোন ব্যথায় প্যারাসিটামল খাওয়া যায়। যেমন: মাথা ব্যাথা, শরীর ব্যথা, দাঁতের ব্যথা, কানে ব্যথা ইত্যাদি।
গুরুতর কিডনি রোগীদের প্যারাসিটামল খাওয়ার সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ডাক্তারের অনুমতি ছাড়া খাওয়া যাবে না।
যারা ১০ গ্রামের বেশি প্যারাসিটামল সেবন করে তাদের যকৃত সমস্যা হতে পারে। তাই, ২টি প্যারাসিটামল এর চাইতে একটি টাফনিল ট্যাবলেট অধিক কার্যকরী।
9. Namitol (নেমিটল)
নেমিটল তীব্র মাথা ব্যাথা ও দ্রুত মাথা ব্যথা কমানোর ঔষধ হিসেবে পরিচিত। নেমিটল ঔষধ টি এ সি আই লিমিটেড কোম্পানি তৈরি করে থাকে। চিকিৎসক, এটি মাইগ্রেন জনিত মাথা ব্যথা, জ্বরে মাথা ব্যথা ও হালকা থেকে মাঝারি যেকোন ব্যথায় খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে।
যাদের মাথা ব্যথা সহজে কমে না, দুশ্চিন্তার কারণে মাথা ব্যথা হয়, অপারেশনের পর মাথা ব্যথা, অতিরিক্ত জ্বরের কারণে মাথা ব্যথা করে তারা নেমিটল ঔষধটি খেতে পারবে। হালকা থেকে মাঝারি ব্যথায় এটি দিনে ৩ বার খাওয়া যাবে।
১ টি নেমিটল ট্যাবলেটের দাম ১০ টাকা। এক পাতা বা ১০টি নেমিটল ট্যাবলেট এর দাম ১০০ টাকা।
10. Ibuprofen (আইবুপ্রোফেন)
আইবুপ্রোফেন ঔষধটি জ্বর, মাথা ব্যাথা, কোমরের ব্যথা ও মাইগ্রেন জনিত সমস্যায় খাওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক দিনে ৩ বার করে ৪০০ মিলিগ্রাম আইবুপ্রোফেন খেতে পারে। ৫ কেজি কম ওজনের শিশুরা এই ঔষধটি খেতে পারবে না।
যদি আইবুপ্রোফেন খাওয়ার পর বুক জ্বালা করে ও বমি বমি ভাব হয় তাহলে এটি খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
যারা প্রয়োজনের চাইতে বেশি মোবাইল, কম্পিউটার, টেলিভিশনে সময় নষ্ট করে তাদের ঔষধে কাজ করে না। তাই এগুলো ব্যবহার করা কমাতে হবে। মোবাইল এবং কম্পিউটারের ব্যবহার করার সময় ফটোসান ব্লু কাট চশমা পরতে হবে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের অভাবে মাথা ব্যথা হয়ে থাকে। তাই দিনে কমপক্ষে ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে। এছাড়া, একটানা বেশি ক্ষণ কাজ করা যাবে না।
শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না থাকলে মাথা ব্যথা হতে পারে। তাই দ্রুত মাথা ব্যথা দূর করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। সারাদিনে, কমপক্ষে ২ লিটার পানি পান করা উচিত। পাশাপাশি অতিরিক্ত চা, কফি খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
আরো পড়ুন: আঁচিল দূর করার ক্রিমের নাম ও ঘরোয়া উপায়।
জ্বর মাথা ব্যাথার ঔষধের নাম
শরীরে জ্বর জনিত মাথা ব্যথায় টাফনিল, প্যারাসিটামল, নাপা / নাপা এক্সট্রা, এনিলিক, মাইগ্রেটল, ঔষধ গুলো ভালো কাজ করে। এছাড়া, জ্বর ও মাথা ব্যথা একসাথে হলে এ্যারেইন এর সাথে নাপা এক্সট্রা খাওয়া যাবে।
মাথা ব্যথা কমানোর উপায়
- মাথা ব্যথা কমানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমান বিশ্রাম নিতে হবে, স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, চিন্তা মুক্ত থাকতে হবে এবং ব্যথা বেশি তীব্র হলে ডাক্তারের অনুমতি নিয়ে মাথা ব্যথার ঔষধ সেবন করতে হবে। পাশাপাশি কম্পিউটার, মোবাইল, সূর্যের আলো এবং দূরের ভ্রমন এড়িয়ে চলতে হবে।
- মাথা ব্যথায় চা কফি খেতে পারেন, এতে কোন সমস্যা নেই। চা, কফিতে থাকা ক্যাফিন মাথা ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। চায়ের সাথে অদা ও লবঙ্গ মিশিয়ে খেলে আরো ভালো হবে।
- সূর্যের আলো বা যেকোন অতিরিক্ত আলোর কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে। আবার কম আলোর কারণেও মাথা ব্যথা ও চোখের সমস্যা হতে পারে। তাই, সূর্যের আলো থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজন হলে বাহিরে যাওয়ার সময় সানগ্লাস পড়বেন। কাজ বা পড়াশোনা করার সময় বেশি আলো দেয় এমন লাইট ব্যবহার করতে হবে।
- যে সকল লোকজন বেশি চিন্তা করে তাদের সবসময় মাথা ব্যথা হয়। আপনি যত বেশি হাসি খুশি থাকবেন তত আপনার মন ভালো থাকবে এবং মাথা ব্যথা দূর হবে।
- অদা, পুদিনা পাতা, লবঙ্গ মাথা ব্যথার জন্য অনেক কার্যকরী। আর বেশি বেশি পানি পান করুন। সম্ভব হলে আপনার সঙ্গিনীকে দিয়ে মাথা ম্যাসাজ করিয়ে নিন।
আরো পড়ুন: ওষুধ ছাড়াই ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
মাথা ব্যাথার খাবার
মাথাব্যথা হলে রোগীদের নিয়মিত আদা, চা/কফি, কলা, লবঙ্গ, বাদাম, মধু, দুধ, ডিম, কিসমিস, খেজুর, তরমুজ, চকলেট, পানি ইত্যাদি খাওয়া উচিত। মাথা ব্যথায় খাবার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই বেশি বেশি স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।
মাথা ব্যথা হলে যে সকল খাবার খাওয়া যাবে না
মাথা ব্যথা হলে অতিরিক্ত চকলেট ও কফি, ধূমপান, আইসক্রিম, পনির, চিনি, রং দেওয়া খাবার, ভাঁজা খাবার, সস, আচার, অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার, দোকানের অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে যেতে হবে।
আরো পড়ুন: ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর ১০ লক্ষণ
মাথা যন্ত্রণা কমানোর ঘরোয়া উপায়
বিশেষজ্ঞদের মতে মাথা যন্ত্রণা কমানোর জন্য একটি তোয়ালেতে কয়েকটি বরফের টুকরো মুড়ে নিতে হবে। এরপর, কপালে এই বরফের প্যাক দিয়ে সেঁক দিন। কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ মিনিট কপালরে সাথে লাগিয়ে রাখতে হবে। যদি ফ্রিজে বরফ না থাকে তাহলে ঠান্ডা বা নরমাল পানি দিয়ে গোসল করতে হবে। এই কাজগুলো করলে অল্প কিছুক্ষনের মধ্যে মাথা যন্ত্রনা কমে যাবে। সাইনাসের সমস্যা হয় তাহলে মাথার পিছনে গরম সেঁক দিন।
মাথা যন্ত্রনা কমানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমান পানি খেতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমান পানি না থাকার কাৰণে মাথা যন্ত্রনা হতে পারে। তাই, একজন সুস্থসবল মানুষের প্রতিদিন ৭-৮ গ্লাস বা ২ লিটার সমপরিমাণ পানি পান করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমানে পানি খেলে মাথা যন্ত্রনা কমে যাবে। মাথা ব্যথা অল্প শুরু হওয়ার সাথে সাথে এক কাপ কফি খেলে মাথা ব্যথা দূর হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
মাথা ব্যথা অনেক গুলো কারণে হতে পারে, বিশেষ করে যারা চুল শক্ত করে বেঁধে রাখে তাদের মাথা যন্ত্রনা সমস্যাটি বেশি হয়ে থাকে। তাই প্রয়োজন না হলে চুল খুলে রাখুন বা হালকা করে চুল বেঁধে রাখুন তাহলে ধীরে ধীরে মাথা যন্ত্রনা কমে যাবে। মাথা যন্ত্রনা কমানোর জন্য আদার চা অনেক উপকারী। যাদের মাথা যন্ত্রনা হয় তাদের উচিত দুধ চায়ের পরবর্তীতে আদার চা খাওয়া।
অনেকে আছেন টানা ১ ঘন্টা পর্যন্ত চুইংগাম চিবিয়ে থাকে। দীর্ঘক্ষন চুইংগাম চিবানোর জন্যেও মাথা যন্ত্রনা হতে পারে। তাই, মাথা যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেতেচুইংগাম কম খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এছাড়াও, ঘাড়ে ম্যাসেজ করলে মাথা যন্ত্রনা অনেকটা কমে আসে। পাশাপাশি পুদিনার চা খেলে মাথা যন্ত্রনা সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যাবে।
fAQ
মাইগ্রেনের সবচেয়ে ভালো ঔষধ কোনটি?
মাইগ্রেন জনিত মাথা ব্যথায় মাইগ্রেটল, টাফনিল, এনিলিক, এ্যারেইন এই ঔষধ গুলো ভালো কাজ করে।
মাথা ব্যথার জন্য কি ডাক্তার দেখানো উচিত?
মাথা ব্যথা যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে না যায় তাহলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ডাক্তার দেখানো উচিত। মাথা ব্যথা তীব্র হলে অনেক ক্ষতি হতে পারে।
মাথার পিছনে ব্যথা কেন হয়?
দুশ্চিন্তা, অপারেশন, আঘাত, জ্বর মাথার পিছনে ব্যথার জন্য দায়ী। এই ধরনের ব্যথা ১০ মিনিট থেকে কয়েকদিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
ঘন ঘন মাথা ব্যথা করে কেন?
অতিরিক্ত (চা, কফি), কম্পিউটার, ল্যাপটপ, টেলিভিশন এর পিছনে সময় নষ্ট করা, অতিরিক্ত পরিশ্রম, ঘুমের অভাব এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করার কারণে ঘন ঘন মাথা ব্যথা হয়।
মাইগ্রেনের লক্ষণ কি?
মাইগ্রেনের ব্যথা খুব তীব্র হয়। এটি মাথার যেকোনো এক পাশে হালকা থেকে তীব্র আকারে হয়ে থাকে। এই ব্যথায় বমি বমি ভাব হতে পারে, অস্থিরতা বেড়ে যাবে, কখনো বেশি গরম আবার কখনো বেশি ঠান্ডা অনুভব হতে পারে।
শেষ কথা
মাথা ব্যথা হওয়ার সাথে সাথে মাথা ব্যথার ঔষুধ খেতে হবে বিষয়টি তেমন নয়। কিছু কিছু মাথা ব্যথা রয়েছে বিশ্রাম নিলে ভালো হয়ে যায়। তাই মাথা ব্যথার সঙ্গে সঙ্গে ওষুধ খাবেন না। অনেকে সাধারণ মাথা ব্যথায় বেদনানাশক ওষুধ বা প্যারাসিটামল খেয়ে থাকে। সামান্য ব্যথায় ও যখন তখন ঔষধ খেলে কিডনি থেকে শুরু করে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের সমস্যা হতে পারে।
যদি আপনার অতিরিক্ত পরিশ্রম ও চিন্তা করার কারণে মাথা ব্যথা হয়ে থাকে তাহলে একটু বিশ্রাম নিন ভালো হয়ে যাবে। যদি মাথাব্যথা খুব তীব্র হয় এবং এক দিনের বেশি সময় ধরে থাকে, তাহলে আপনাকে দ্রুত ডাক্তারের সাথে দেখা করতে হবে।
মাথাব্যথার ধরন অনুযায়ী চিকিৎসা ও ওষুধ সেবন করলে ব্যথা দ্রুত ভালো হয়ে যায়। তবে মাথাব্যথার ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়। বেদনানাশক ওষুধ শরীরের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর। তাই আপনার কাছে অনুরোধ আপনি আপনার ডাক্তারের অনুমতি ছাড়া ঔষধ সেবন করবেন না।