মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার

বিভিন্ন শরীরিক সমস্যার কারণে মহিলাদের কোমর ব্যথা হতে পারে। বিশেষ করে ১০০ জনের মধ্যে ৮০ জন জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে কোমর ব্যথা রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এমনকি প্রতিটি গর্ভবর্তী মহিলা গর্ভবস্থায় কোমরের ব্যথা অনুভব করে থাকে। এছাড়াও আরো বিভিন্ন কারো রয়েছে সে সকল কারণে মহিলাদের কোমর ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক। তাহলে মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে এই আর্টিকেল থেকে বিস্তারিত জেনে নিন।

মহিলাদের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণে কোমরের ব্যথা হওয়া একটি সাধারণ বিষয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই ব্যথা খুব বেশি আকারে হতে পারে আবার কিছু ক্ষেত্রে এটি হালকা আকারে হতে পারে। এই ব্যথা অনেক সময় দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে আবার দ্রুত ভালো হওয়ার সম্ভনা থাকে। তাই কোমরের ব্যথা হওয়া মহিলাদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবনযাপন করা উচিত। তবে, গবেষকদের মতে মহিলাদের কোমর ব্যথা হওয়ার পিছনে যেসকল কারণ রয়েছে সে সকল থেকে বেরিয়ে আসতে পারলে এত থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার

মহিলাদের কোমর ব্যথার অনেকগুলো কারণ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম কারণ গুলো হলো: গর্ভাবস্থায় (হরমোনের পরিবর্তন), মানসিক চাপ, মাসিক, পেশী টান, মেরুদণ্ডের সমস্যা, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, কিডনি পাথর, কিডনি সংক্রমণ, মাংসের দুর্বলতা, সায়াটিকা, এন্ডোমেট্রিওসিস, অস্টিওআর্থারাইটিস, ডিসমেনোরিয়া, ইত্যাদি। মূলত এই সকল সমস্যা বা রোগের কারণে মহিলাদের কোমর বা পিঠে ব্যথা হয়।

মহিলাদের কোমরে বা পিঠে ব্যথা হলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কোমর ব্যথা হওয়ার পিছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। তাই, রোগীর কোমর ব্যথা কি কারণে হয়েছে, কোথায় হয়েছে এবং কোমর ব্যাথা সারানোর সহজ উপায় কি ইত্যাদি সকল কিছু জানার জন্য একজন চিকিৎসকের প্রয়োজন। চিকিৎসকের পাশাপাশি যেসব ঘরোয়া উপায়ে কোমরের ব্যথা দূর করা সম্ভব সে সকল সম্পর্কে জানতে হবে।

মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ

মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ সমূহগুলো হলো:

গর্ভাবস্থা

গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে মহিলাদের কোমর ব্যথা হওয়া খুবই স্বাভাবিক। লিগামেন্ট এর মাধ্যমে আমাদের শরীরের হাড় ও জয়েন্ট (গিরা) একে অপরের সাথে সংযুক্ত হয়। আর, গর্ভাবস্থায় এই সকল লিগামেন্ট ঢিলেঢালা হয়ে যায়। এর ফলে পিঠে বা কোমরের নিচ অংশে হাড় গুলোর উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ার কারণে মহিলাদের কোমর ব্যথা হয়। এছাড়া, এই সময় শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং হরমোনের পরিবর্তন হয়।

মাসিক

মাসিক চলাকালীন মহিলাদের জরায়ু সংকুচিত হয়, এই ফলে মাসিক বা পিরিয়ডের মহিলাদের প্রচণ্ড ব্যথা হয়। এই ব্যথা খুব সহজে কমে না। এই সময় মহিলাদের অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়। তবে, ঘরোয়া কিছু উপায়ে ব্যথা কিছুটা কমানো সম্ভব। পিরিয়ডের সময় কোমরের ব্যথা হলে কি করবেন সেটি নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

কিডনি পাথর ও কিডনি সংক্রমণ

কিডনিতে পাথর হলে অথবা কিডনি সংক্রমণ / হলে পেটে এবং কোমরে ব্যথা হতে পারে। তবে, এটি খুবই কম ঘটতে দেখা যায়। পিঠ বা কোমরের ডান ও বাম পাশে মৃদু ব্যথা হওয়া কিডনিতে পাথরের লক্ষণ। আরেকটি সাধারণ লক্ষণ হলো প্রস্রাব করার সময় হালকা রক্ত যেতে পারে।

মেরুদণ্ডের সমস্যা

অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস, অস্টিওআর্থারাইটিস ইত্যাদি মেরুদন্ডের সমস্যার কারণে মহিলাদের কোমর ব্যথা হতে পারে। অস্টিওআর্থারাইটিস হলো একটি সাধারণ ডিজেনারেটিভ জয়েন্ট রোগ। এই রোগটি বেশির ভাগই প্রাপ্তবয়স্ক দের প্রভাবিত করে। পিঠের পেছনে শক্ত হয়ে যাওয়া অস্টিওআর্থারাইটিস রোগের লক্ষণ।

অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন

সঠিক নিয়মে জীবন যাপন না করার কারণেও কোমরে বা পিঠে ব্যথা হতে পারে। যেমন; আপনি যদি ধূমপান, অ্যালকোহল পান করেন, ব্যায়াম না করেন, পুষ্টিকর খাবার না খান তাহলে এই রোগ হতে পারে। এছাড়া, একটানা অনেকক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকার কারণেও কোমরে ব্যথা হতে পারে।

সায়াটিকা

সায়াটিকা আসলেই একটি স্নায়ুজনিত সমস্যা, অনেকে এই সমস্যা কে বাতের ব্যথা মনে করে থাকে। কোমর এবং পা দুই জায়গায় সায়াটিকা হতে পারে। কারো ক্ষেত্রে কোমর ও পায়ের একপাশে আবার কারো ক্ষেত্রে কোমরের দুই পাশে ও পায়ের দুই পাশে সায়াটিকে হতে পারে।

অনেকের ক্ষেত্রে সায়াটিকা ব্যথা কোমরে হয় না, শুধুমাত্র উরুর পিছন থেকে শুরু করে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত সায়াটিকা ব্যথা হয়। এই ব্যথা বেশিরভাগই একপাশে হয়ে থাকে। অনেক সময় সায়াটিকা ব্যথা সহ্য করার মতো ক্ষমতা থাকে না, এই ব্যথা এতটাই তীব্র যে বসে বা দাঁড়িয়ে থাকা যায় না। তবে, শুয়ে থাকলে বা কিছুক্ষন হাঁটলে এই ব্যথা হালকা কমে।

কিন্তু, এই ব্যথায় একটানা হাটা, বসা, শুয়ে থাকা যায় না। কিছুক্ষন হাঁটার পরেও পায়ে ব্যথা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় রোগী যদি টানা ২ সপ্তাহ বিশ্রাম নেই এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খাই তাহলে সায়াটিক ব্যথা ভালো হয়ে যায়।

এই ব্যথা একবার ভালো হয়ে যাওয়ার পরেও আবার হতে পারে, তাই অবহেলা করা যাবে না। যদি ৩ মাসের মধ্যে ব্যথা না কমে, রোগী যদি শুয়ে থাকার পরেও ব্যথা লাগে, পা অবশ হয়ে যায় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অস্ত্রোপচার মাধ্যমে এর চিকিৎসা করতে হবে।

আরো পড়ূনঃ ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা | মহিলাদের কোমর ব্যথার প্রতিকার

  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন: ঘরোয়া উপায়ে কোমরের ব্যথা দূর করার জন্য নিয়মিত সর্বনিম্ন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করতে হবে। নিয়মিত একই সময়ে ব্যায়াম করার ফলে পিঠে ও কোমরের ব্যাথা ভালো হয়ে যায়। মহিলাদের গর্ভাবস্থায় কোমরের ব্যথা হবে এটা স্বাভাবিক, এই সময় অবশ্যই কয়েকটি ধাপে হালকা ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়াম করার ফলে শরীরের অন্যান্য রোগ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
  • দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসা যাবে না: এক জায়গায় অনেকক্ষণ ধরে বসে থাকলে কোমরে ব্যথা হতে পারে। তাই, একটু পর পর জায়গা চেঞ্জ করুন এবং একটু হাঁটুন। বসার সময় সবসময় ৯০° অ্যাঙ্গেলে বসার চেষ্টা করতে হবে।
  • সঠিক বিছানায় ঘুমাবেন: অবশ্যই শক্ত ফোম বা ম্যাট্রেসে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। নরম কোন ম্যাট্রেসে বসবেন না বা ঘুমাবেন না।
  • ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখুন: অতিরিক্ত ওজনের ফলে কোমর থেকে শুরু করে পা পর্যন্ত ব্যথা করতে পারে। তাই, নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে অথবা সঠিক জীবন যাপনের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রন রাখার চেষ্টা করুন। আপনি যদি ব্যায়াম না করে ওজন কমাতে চান তাহলে ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় আর্টিকেলটি পড়ুন।
  • রসুন ও সরিষা তেল দিয়ে কোমরে ম্যাসাজ করুন: কয়েকটি রসুন, কালোজিরা এবং সরিষা তেল একটি পাত্রে নিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন। তারপর, ঠান্ডা হয়ে গেলে তেলটি আপনার কোমরে ম্যাসাজ করুন। এভাবে, রাতে ঘুমানোর আগে কয়েকদিন করলে কোমরের ব্যথা ভালো হয়ে যাবে।
  • গরম পানির ব্যাগ ব্যবহার করুন: তলপেটে ব্যথা, কোমরের ব্যথার ক্ষেত্রে গরম পানির ব্যাগ অনেক উপকারী। গরম পানির ব্যাগ ব্যবহার করার ফলে প্রচন্ড যন্ত্রনা থেকে আরাম পাওয়া যায়। দিনে দুইবার গরম সেঁক দিতে পারেন।
  • গরম গরম আদা চা খান: আপনার যদি কোমরের ব্যথা থাকে তাহলে আপনি গরম আদা চা খেতে পারেন, এটি কোমরের ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে।
  • প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন: এত কিছু করার পরেও যদি আপনার কোমরের ব্যাথা না কমে তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। কোমরের ব্যাথা সাধারণ বিষয় নয়, তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

উপরে কোমর ব্যাথা সারানোর সহজ উপায় সম্পর্কে বলা হয়েছে, যদি এইসব সঠিক ভাবে মেনে চলা হয় তাহলে ব্যাথা দ্রুত দূর হবে।

আরো পড়ূনঃ গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসে পেট ব্যথা হওয়ার কারণ

গর্ভবতী মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ

শরীরের বিভিন্ন জয়েন্ট এবং হাড় লিগামেন্ট এর মাধ্যমে একে ওপরের সাথে যুক্ত থাকে, কিন্তু গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভাবস্থায় এসব লিগামেন্ট নরম হয়ে যায়। যার ফলে গর্ভবতী মহিলাদের কোমর ব্যথা হয়। আমাদের শরীরে সুতার মতো কিছু টিস্যু রয়েছে এই সকল টিস্যু কে লিগামেন্ট বলা হয়।

গর্ভবতী মহিলাদের আরো অনেক গুলো কারণে কোমরের ব্যথা হতে পারে। যেমন; এই সময় শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায় যার ফলে পেশির উপর চাপ বাড়ে, হরমোনের সমস্যা হয় এবং অলস সময় কাটানোর কারণে এই ব্যাথা হয়। এছাড়া যারা একের অধিক বাচ্চা গর্ভধারণ করে তাদের কোমরের ব্যথা হতে পারে।

আরো পড়ূনঃ ছেলেদের মুখে ব্রণ দূর করার উপায়

গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা সারানোর সহজ উপায়

  • গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলারা বেশির ভাগই অলস সময় কাটিয়ে থাকে, যায় ফলে কোমরের ব্যাথা বৃদ্ধি পায়। তাই, এই সময় নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে হাঁটতে হবে। নিজেকে সবসময় সচল রাখার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে এই সময় কোমর ও পিঠের ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
  • ভারী জিনিস ওঠানামা করা যাবে না।
  • গোসল করার সময় কুসুম বা হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন।
  • গোসল করার আগে বা পড়ে রসুন ও সরিষা তেল দিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে কোমরে ম্যাসাজ করুন।
  • কাজ করার সময় পিঠ বাঁকা করবেন না। পিঠ সোজা ঘরে বা অফিসে কাজ করুন।
  • বাজার করার সময় যদি ব্যাগ বহন করতে হয় তাহলে দুই হাতের ব্যাগের ওজনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখুন।
  • শুধুমাত্র সমতল বা ফ্লাট জুতা পড়ুন।
  • নিচে থেকে কোন কিছু নেওয়ার সময় অতিরিক্ত ঝুঁকবেন না। ভালো হয় আগে হাঁটু ভাঁজ করে নিবেন এরপর মেঝে থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসটি তুলে নিবেন।
  • চিৎ হয়ে ঘুমাবেন না। কিছুক্ষণ ডান দিকে আবার কিছুক্ষণ বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমাবেন। হাঁটুর ফাঁকে একটি বালিশ দেওয়া উত্তম।
কোমর ব্যথার ওষুধের নাম
  • ডাক্তার যদি নিষেধ না করে তাহলে গর্ভাবস্থায় কোমরের ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল খেতে পারেন। ঔষধের গায়ে বা কাগজে থাকা লেখা গুলো অবশ্যই পড়ে নিবেন।

গর্ভবতী মহিলাদের কোমর ব্যথার ব্যায়াম

ধাপ ১: একটি ফাঁকা স্থান নির্বাচন করুন। এরপর পিঠ মেঝের (ফ্লোরের) সাথে রেখে সম্পূর্ন চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন। তারপর, হাঁটু বাঁকা করুন এবং পায়ের তলা মেঝেতে সমতল / সোজা করে রাখুন। এরপর, আপনার পেটকে মেঝে (ফ্লোর) থেকে একটু উপরে করুন। এমন অবস্থায় ৩-১০ সেকেন্ড থাকার চেষ্টা করুন। এই ব্যায়ামটি দিনে ২০-৩০ বার করুন।

ধাপ ২: দেয়ালের সাথে আপনার পিট লাগান। আপনার পা দুটি দেয়াল থেকে সামান্য দূরে রাখুন। তারপর, উপরে নিচে উঠানামা করুন। ১০ থেকে ৩০ বার এটি করতে থাকুন।

ধাপ ৩: মেঝেতে বা ফ্লোরে দুই হাত এবং দুই পা শরীরের দুই পাশে সোজা করে শুয়ে থাকুন। এরপর, হাঁটু ভাঁজ না করে এক পা উপরে দিকে তুলুন। ১০ সেকেন্ড এভাবে থাকার পর পা নিচে নামান এবং আরেকটি পা একই ভাবে উপরে তুলে ১০ সেকেন্ড রাখুন। তারপর, দুই পা হাত দিয়ে একসাথে বুকের দিকে আনুন এভাবে ১০ সেকেন্ড থাকার পর স্বাভাবিক ভাবে সোজা হয়ে যান। ১০-৩০ বার এটি পূনরায় করতে থাকুন।

ব্যায়ামের ভিডিও দেখুন
  • এই তিনটি ব্যায়াম কিভাবে করতে হয় সেটি প্র্যাকটিক্যাল ভাবে ফেসবুক থেকে দেখে নিতে পারবেন। তার জন্য এখানে ক্লিক করুন

কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথার কারণ

কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথাকে আমরা সায়াটিকা বলে থাকি। কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথা হয় দীর্ঘতম স্নায়ু সায়াটিক স্নায়ুর উপর চাপের কারণে। যখন কোমরের হাড় বা মেরুদন্ড বৃদ্ধি পায় তখন নার্ভের উপর চাপ পরে ব্যাথা পা পর্যন্ত চলে যায়। বসা, হাঁটা, ঘুম এক কথায় সবসময় পায়ে ব্যাথা হয়ে থাকে।

চিকিৎসকদের মতে, এই ব্যথা মহিলাদের এবং ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।

আরো পড়ুন: ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর ১০ লক্ষণ

সায়াটিকা হলে করণীয়

  • নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযাযী ব্যায়াম করতে হবে।
  • একটানা এবং ঝুকে কাজ করা যাবে না।
  • শক্ত বিছানায় শোয়ার চেষ্টা করতে হবে।
  • বেশি সময় নিয়ে বসে থাকতে হয় এমন কাজ করা বা ভ্রমন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • সিঁড়ি এড়িয়ে চলতে হবে।
  • চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে গরম সেক দেওয়া।

সায়াটিকা হলে ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই, আপনাকে অবশ্যই ব্যায়াম করতে হবে, যদি আপনার ভালো চান। তবে ব্যায়াম চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হতে হবে।

FAQ

মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ কি?

মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ হলো; সায়াটিকা, গর্ভাবস্থায়, কিডনি সংক্রমণ, মাংসপেশির টান, কিডনিতে পাথর, মেনোপজ, অস্টিওপোরোসিস ইত্যাদি।

মানসিক চাপের কারণে কি কোমরে ব্যথা হয়?

অবশ্যই, মানসিক চাপের কারণে আপনার কোমরে ব্যথা হতে পারে। কোমরের উপরে এই ব্যথা খুব তীব্র হয় এবং কোমরের নিচে ব্যথা চিনচিনে হয়ে থাকে। হঠাৎ কোমরের ব্যথা স্ট্রেস বা মানসিক চাপের কারণে হয়ে থাকে।

শেষ কথা

নারী এবং পুরুষ উভয়ের কোমরের ব্যথা ও পিঠের ব্যথা হতে পারে। কিন্তু, মহিলাদের কোমরে ব্যথা হলে বসে থাকা উচিত না। ঘরোয়া উপায়ের পাশাপাশি সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে কোমরের ব্যাথা কমে যায়। আশা করি এই আর্টিকেল থেকে মহিলাদের কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আপনি জানতে পেরেছেন। যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Comment

error: Content is protected !!