চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা – চোখ ফোলা কমানোর ঘরোয়া উপায়

ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, এলার্জি, ধুলাবালি, ছত্রাক ইত্যাদি কারণে চোখ ওঠা রোগ হয়ে থাকে। চিকিৎসার পাশাপাশি ঘরোয়া উপায়ে চোখ উঠা রোগ ভালো করা সম্ভব। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আপনাকে জানানো হয়েছে চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা করার নিয়ম সম্পর্কে। আশা করি এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনি চোখ ফোলা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এবং আপনার উপকার হবে।

প্রতিটি মানুষ চোখ ছাড়া অচল। আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ গুলোর মধ্যে চোখ অন্যতম। চোখ অন্ধ হয়ে গেলে বা চোখ না থাকলে আমরা কিছুই দেখতে পারতাম না। অনেক বিভিন্ন ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমন এবং অন্যান্য কারণে আমাদের চোখের ক্ষতি হয়ে থাকে। এর ফলে চোখ নষ্ট হয়ে যায় বা চোখে দৃষ্টি শক্তি কমে যায়। তাই সবসময় চোখ ভালো রাখতে চাইলে প্রথম থেকে চোখের যত্ন নিতে হবে।

চোখের বিভিন্ন ধরনের রোগ রয়েছে তার মধ্যে চোখ উঠার রোগ অন্যতম। প্রতিটি মানুষের একবার হলেও এই রোগ হয়ে থাকে। বিভিন্ন ভাইরাস, এলার্জি, ছত্রাক এবং অন্যান্য কারণে এই রোগ সৃষ্টি হয়। সঠিক সময়ের মধ্যে চিকিৎসা গ্রহন করলে এবং ঘরোয়া উপায় গুলো মেনে চললে এই রোগ খুব শীগ্রই ভালো হয়ে যায়। তাহলে চলুন চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা

চোখ উঠলে নিয়মিত চোখ পরিষ্কার করতে হবে। তাই, প্রথমে কিছু পানি ফুটিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। এরপর, পানি গুলো ঠান্ডা হয়ে গেলে এক টুকরো পরিষ্কার সুতি কাপড় সেই পানিতে ভিজিয়ে নিতে হবে। তারপর, কাপড় দিয়ে আলতোভাবে চোখে জমে থাকা পুঁজ এবং ময়লা গুলো পরিষ্কার করে নিন। দিনে এই কাজটি কয়েকবার করলে সাধারণত চোখ ওঠা রোগ ভালো হয়ে যায়।

সেক্ষেত্রে দুটি চোখের জন্য আলাদা কাপড় এবং পানি ব্যবহার করার জন্য চেষ্টা করতে হবে। এছাড়া, এক কাপড় এক বারের বেশি ব্যবহার করা যাবে না। প্রতিবার নতুন কাপড় কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে চোখের পাপড়ি গুলো মুছে নিতে হবে।

এছাড়া চোখ ঠান্ডা রাখার জন্য এবং চোখে আরাম পাওয়া জন্য ঠান্ডা পানি বা বরফ দিয়ে চোখে সেক নেওয়া যেতে পারে। এর জন্য ফ্লানেলের কাপড় হালকা ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে কিছুক্ষণ চোখে আলতো ভাবে ধরে রাখবেন। এটি নিয়মিত কয়েকবার করার ফলে চোখ ফোলা কমানো সম্ভব এবং চোখের জ্বালাপোড়া ও কমে আসবে।

এক নজরে জেনে রাখুন
  • চোখ পরিষ্কার করার জন্য সবসময় আলাদা কাপড় ব্যবহার করতে হবে।
  • ১ মাসের কম বয়সী নবজাতকের চোখ উঠলে বা এর লক্ষণ দেখা দিলে তাকে ডাক্তার দেখাতে হবে।
  • চোখ ওঠা রোগ থাকা অবস্থায় লেন্স ব্যবহার করা যাবে না।
  • পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
  • ঘন ঘন চোখে হাত দেওয়া যাবে না।
  • ছোট ছোট লেখা বা জিনিস দেখা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • মোবাইল / কম্পিউটার দেখা যাবে না।
  • ময়লা, মোবাইলের আলো, ধুলাবালি থেকে বাঁচার জন্য সানগ্লাস পড়া যেতে পারে।
  • চোখে ঘষাঘষি তো দূরের কথা চোখে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। যদি চোখে হাত দেওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে প্রথমে হাত ধুয়ে নিতে হবে এবং চোখ ধরার পর আবার হাত ধুতে হবে।
  • সুইমিং পুল ব্যবহার করা যাবে না।
  • হাঁচি-কাশির সময়ে মুখ ঢেকে রাখতে হবে।
  • ঘর থেকে কম বের হতে হবে এবং সুস্থ মানুষের কাছাকাছি কম যেতে হবে।
  • বিশ্রাম নিতে হবে এবং প্রয়োজনে ডাক্তারের সাথে দেখা করতে হবে।

আরো পড়ূনঃ লিভার ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা

চোখ ওঠার লক্ষণ

চোখ ওঠার লক্ষণ এবং চোখের সাদা অংশের রং ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। যেমন; চোখের সাদা অংশ লাল বা গোলাপি রঙের হতে পারে। এছাড়া, আরো যে সকল চোখ উঠার লক্ষণ রয়েছে সেগুলো হলো:

  • চোখ ওঠার সবচেয়ে প্রাথমিক লক্ষণ হলো চোখের সাদা অংশ যেটাকে বলা হয় কনজাংটিভা চোখ উঠলে এটি লাল হয়ে যায়। এটি প্রথমে এক চোখে হয়ে থাকে এরপর ধীরে ধীরে অন্য আরেকটি চোখে ছড়িয়ে পড়ে।
  • চোখের পাতা ফুলে যাওয়া এবং চোখ দিয়ে পানি পড়া।
  • কনজাংটিভা উপরের পাতলা স্বচ্ছ পর্দা ফুলে যাওয়া।
  • চোখের মধ্যে কিছু একটা আছে এমন অনুভূতি হওয়া।
  • চোখ জ্বালাপোড়া, চুলকানি, খচখচ ইত্যাদি অনুভব হওয়া।
  • ঘুম থেকে উঠে চোখের পাতা খুলতে কষ্ট হওয়া। মূলত এটি মিউকাস জাতীয় তরল বা পুঁজ এর কারণে হয়ে থাকে। এটি ছোঁয়াচে লক্ষণ।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসে পেট ব্যথা হওয়ার কারণ

চোখ ওঠার কারণ

চিকিৎসকদের মতে ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া দুটি কারণে চোখ ওঠার রোগ হতে পারে। এছাড়াও, এটি এলার্জির কারণে হতে পারে। বিশেষ করে এই রোগটা এমন সময় হয়ে থেকে যে সময়টাতে বা মৌসুমে বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকে। এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ। ফলে রোগীর ব্যবহার করা জিনিস অন্যরা ব্যবহার করলে এবং চোখ ধরে হাত পরিষ্কার না করলে এই রোগ ছড়ায়।

ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া ছাড়াও গনোরিয়া, ক্লামাইডিয়া, রসায়ন পদার্থ, অপরিষ্কার জীবনযাপন, ধুলাবালি, ছত্রাক বা ফাঙ্গাস, অ্যামিবা এবং অনন্যা পরজীবী কারণেও চোখ ওঠার রোগ হতে পারে। তাই কার কেন চোখ ওঠার রোগ হয়েছে সেটি নির্দিষ্ট করে বলা অনেক মুশকিল। তবে সাধারণত উল্লেখিত কারণ গুলোর জন্য হয়ে থাকে। তাই, এইসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।

ব্যাকটেরিয়ার কারণে যদি চোখ ওঠার রোগ হয়ে থাকে তাহলে চোখ জ্বালাপোড়ার সঙ্গে ময়লা বের হতে পারে। এই লক্ষণ কে বলা হয়ে থাকে ব্যাকটেরিয়া কনজাংটিভাটিস। আর যদি আপনার ভাইরাস ইনফেকশনের কারণে চোখ ওঠা রোগ হয়ে থাকে তাহলে চোখ লাল হয়ে যাবে এবং জ্বালাপোড়া করতে পারে।

টিপস

  • এই সময় ভুলেও চোখে হাত দিবেন না।
  • এলার্জি জাতীয় খাবার কম খেতে হবে।
চোখ ফোলা কমানোর ঘরোয়া উপায়

যাইহোক, গবেষকরা বলে এই রোগের জন্য তেমন চিন্তার কারণ নেই। বিশ্রাম নেওয়া এবং ঘরোয়া চিকিৎসা মেনে চললে এই রোগ অল্প সময়ের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। ঘরোয়া চিকিৎসার পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চোখের ড্রপ এবং ঔষধ খেলে চোখের ব্যথা থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আরাম পাওয়া যাবে।

আরো পড়ূনঃ ছেলেদের মুখে ব্রণ দূর করার উপায়

চোখ ওঠার ঔষধ | চোখ উঠার ড্রপ এর নাম

চোখ উঠলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বিভিন্ন ধরণের চোখের ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে সেগুলো হলো:

  • আর্টিফিশিয়াল টিয়ার: এই ধরনের ড্রপ সকল ধরণের চোখ উঠার রোগীরা ব্যবহার করতে পারে। চোখ ফোলা, চোখ উঠা ইত্যাদি রোগের চিকিৎসায় এই ধরনের ড্রপ কার্যকরী। আর্টিফিশিয়াল টিয়ার এই ধরনের ড্রপ গুলো ফার্মেসিতে বিভিন্ন নামে পাওয়া যায়। যেমন; অ্যাকুয়াফ্রেশ, লুবজেল, টিয়ারফ্রেশ, ড্রাইলাইফ ইত্যাদি আরো বিভিন্ন ধরনের নাম রয়েছে। এই ধরনের চোখের ড্রপ কিভাবে ব্যবহার করতে হবে সেগুলো ঔষধের বক্সে বা গায়ে লেখা থাকবে।
  • অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ: এই ধরনের ড্রপ সব ধরনের রোগীরা ব্যবহার করতে পারে না। শুধুমাত্র যাদের চোখ উঠার রোগ ব্যাকটেরিয়ার কারণে তারাই এই ধরনের ড্রপ ব্যবহার করতে পারে। গনোরিয়া ও ক্ল্যামিডিয়া এই ধরনের ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশন হলে, চোখে পুঁজের মতো তরল জমলে এবং চোখ উঠার রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর্বল এমন রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ব্যাকটেরিয়াজনিত চোখ উঠার রোগীদের চিকিৎসকরা “ক্লোরামফেনিকল” নামক অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহারের পরামর্শ দেয়।
  • অ্যান্টিহিস্টামিন ড্রপ: অতিরিক্ত চুলকানি, এলার্জি ইত্যাদির কারণে চোখ ওঠা রোগ হলে চিকিৎসকরা এন্টিহিস্টামিন ড্রপ ব্যবহারের পরামর্শ দেয়। এলার্জি জনিত রোগীদের অনেক সময় মুখে খাওয়ার ঔষধ সেবন করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

নোটঃ অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ শুধুমাত্র ব্যাকটেরিয়াজনিত চোখ ওঠা রোগীরা ব্যবহার করতে পারবে যে। অন্যান্য কারণে যেমন এলার্জি ও ভাইরাস জনিত রোগীদের এই ড্রপ কাজ করবে না। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ২ বছরের নিচে বয়সী শিশুদের এই ড্রপ ব্যবহার করা নিষেধ।

চোখ ফোলা কমানোর ঘরোয়া উপায়

  • পর্যাপ্ত ঘুম: চোখ ফোলা কমানোর জন্য নিয়মিত সঠিক সময়ের মধ্যে ঘুমাতে হবে। প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানোর মাধ্যমে চোখের ফোলা কমানো সম্ভব। ঘুমের কারণেও চোখের ফোলা এবং নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই, নিয়মিত ঘুমাতে হবে।
  • টি-ব্যাগ: চায়ের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের ফোলা কমাতে সাহায্য করে। চোখের ফোলা স্থানে টি-ব্যাগ লাগানোর সময় চোখ বন্ধ করে রাখবেন যাতে চোখে কিছু না পড়ে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা: পানির অভাবে চোখের ফোলাভাব বেড়ে যায়, তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। চিকিৎসকরা, প্রতিদিন ৭-৮ গ্লাস পানি পান খাওয়ার পরামর্শ দেয়।
  • শসা: চোখের ফোলা ভাব এবং চোখের নানা উপকারিতার জন্য শসা অনেক কার্যকরী। চোখের ফোলা ভাব কমানোর জন্য প্রতিদিন সর্বনিম্ন ১০ মিনিট শসা লাগানো উচিত। আপনি চাইলে তুলোর মধ্যে শসার রস লাগিয়ে চোখে ফোলা স্থানে লাগাতে পারেন।
  • সবুজ শাকসবজি: চোখের ফোলা ভাব কমানোর অবশ্যই ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, ইত্যাদি জাতীয় সবুজ শাকসবজি খেতে হবে।

FAQ

চোখ ওঠা রোগ কিভাবে ছড়ায়

সাধারণত যোগাযোগের মাধ্যমে এই রোগ একজন থেকে অন্য জনের কাছে ছড়িয়ে পরে। যেমন; চোখ ওঠা রোগীর ব্যবহার করা জিনিস অন্য ব্যাক্তি ব্যবহার করলে এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই চিকিৎসকরা রোগীকে বাসায় থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকে।

চোখ উঠা সারতে কত দিন লাগে?

সাধারণত, সঠিক চিকিৎসা এবং বিশ্রামের ফলে চোখ উঠা রোগ থেকে ৭ থেকে ৮ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যাওয়া সম্ভব। বেশি হলে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ দিন মতো লাগতে পারে। চোখ উঠা রোগ হলে চিন্তার কারণ নেই, বিশ্রাম এবং ঘরোয়া উপায়ে এই রোগ ভালো হয়ে যায়।

চোখ ওঠা কি ছোঁয়াচে?

কিছু কিছু কারণে চোখ ওঠা যেমন; এলার্জির কারণে যদি চোখ ওঠা রোগ হয়ে থাকে তাহলে এটি ছোঁয়াচে নয়। যদি ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের কারণে এই রোগ হয়ে থাকে তাহলে এটি ছোঁয়াচে। আর এই সময় ঘরে থাকা উত্তম।

চোখ উঠলে কি চশমা পরে থাকতে হয়?

আমাদের সমাজে একটি কথা প্রচলিত রয়েছে কেউ যদি চোখ ওঠা রোগীর চোখের দিকে থাকায় তাহলে তারও এই রোগ হতে পারে। সে কারণে অনেকে বলে চোখ উঠলে চশমা পড়তে হবে। কিন্তু, প্রকৃতপক্ষে চোখ উঠলে চশমা পড়তে হবে এই কথা কোন চিকিৎসক বলে না। তবে এলার্জির কারণে যদি চোখ উঠা রোগ হয়ে থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে সানগ্লাস পড়া ভালো। সেক্ষেত্রে নিয়মিত সানগ্লাস পরিষ্কার করতে হবে। গবেষণা থেকে জানা যায়, এলার্জিজনিত চোখ ওঠার লক্ষণ উপশমে সানগ্লাস অনেক উপকারী।

শেষ কথা

চোখ ওঠলে চিন্তার কারণ নেই, শুধুমাত্র ঘরে থেকে নিয়মিত ঘরোয়া চিকিৎসা গুলো মেনে চললে হবে। সবচেয়ে বেশি ভালো হয় যদি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ এবং ড্রপ ব্যবহার করা হয় তাহলে ২ সপ্তাহের মধ্যে এই রোগ থেকে ভালো হয়ে যাওয়ার সম্পূর্ণ সম্ভবনা রয়েছে। তাই আপনি যদি এখনো চোখ ফোলা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে এই আটিকেলটি সম্পূর্ণ না পড়েন তাহলে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত দেখার অনুরুধ রইল।

Leave a Comment

error: Content is protected !!