অ্যালোভেরা জেল মুখে ব্যবহারের নিয়ম

অ্যালোভেরা জেল মুখে ব্যবহারের নিয়ম অনেক রকম হয়ে থাকে। এই আর্টিকেলে এলোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম, অ্যালোভেরা জেল কখন মাখে ও অ্যালোভেরা জেল এর উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে আশা করি আর্টিকেলটা অনেক উপকার হবে।

অ্যালোভেরা জেল মুখে ব্যবহারের সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে এই আর্টিকেলটা শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। অনেকেই সুন্দর হওয়ার জন্য প্রাচীনকাল থেকেই অ্যালোভেরা জেল বা ঔষধ ব্যবহার করে যাচ্ছে। বর্তমানে এর ব্যবহার কমলেও ত্বকের জন্য অ্যালোভেরা অনেক উপকারী।

অ্যালোভেরাতে রয়েছে বিভিন্ন ঔষধি গুনাগুন যা ত্বকের জন্য অনেক কার্যকরী। অ্যালোভেরাতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যামিনো অ্যাসিড, ভিটামিন, খনিজ এবং নানা উপকারী গুনাগুন। এটি বয়সের চাপ, চোখের নিচে কালো দাগ, ব্রণের দাগ ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে।

ত্বক ভালো রাখার পাশাপাশি চুলের স্বাস্থ্যের জন্যেও অ্যালোভেরা জেল বা তেল অনেক ভালো। যাইহোক, এরপরেও অনেকে জানেন না অ্যালোভেরা জেল মুখে ব্যবহারের নিয়ম এবং অ্যালোভেরা কিভাবে খেতে হয়। যদি অনেক জনের মধ্যে আপনিও একজন হয়ে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম ও অ্যালোভেরা জেল এর উপকারিতা

অ্যালোভেরা জেল মুখে ব্যবহারের নিয়ম

আধা টেবিল চামচ লেবুর রস, একটি ডিমের সাদা অংশ এর সাথে এক টেবিল চামচ অ্যালোভেরা ভালোভাবে মিশিয়ে নেওয়ার পর ১৫ থেকে ২০ মিনিট এই অ্যালোভেরা জেল মুখে ব্যবহার করতে হবে। তারপর, কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। এটি শরীরের যেকোন ত্বকে ব্যবহার করা যাবে।

অ্যালোভেরা ও লেবু উভয় শক্তিশালী ‘অ্যান্টি এজিং’ উপাদান সমৃদ্ধ, যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। প্রায় মহিলারা সরাসরি অ্যালোভেরা বা দোকান থেকে অ্যালোভেরা জেল কিনে সেটা ত্বকে ব্যবহার করে থাকে।

মুখের পাশাপাশি শরীরের ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল রাখতে নিয়মিত অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা গুরুত্বপুর্ন। এছাড়া, চুল শক্ত/মজবুত করতে অ্যালোভেরা জেলের ব্যবহার অনেক উপকারী। চুলের জন্য দোকানে অ্যালোভেরা শ্যাম্পু ও জেল পাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে বেশি ভালো হয় পাতার তাজা জেল ব্যবহার করা।

শুধু যে লেবুর রসের সাথে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করা যায় বিষয়টি তেমন না। অনেক গুলো এলোভেরা জেল ত্বকে ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে।

যেমন; মধু ও অ্যালোভেরা মিশিয়ে সেটা ত্বকে ব্যবহার করা যাবে, আবার অ্যালোভেরা সাথে টক দই মিশিয়ে অথবা নারকেল তেলে, হলুদের গুঁড়া, গোলাপ ইত্যাদি মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বক ফর্সা ও পরিষ্কার হবে।

  • // সতর্কতা … বিশেষজ্ঞদের মতে ক্ষত স্থানে এলোভেরা জেল ব্যবহার না করাই ভালো এবং দোকানের এলোভেরা জেল ব্যবহার না করে পাতার তাজা জেল ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো উপায়।
  • // সতর্কতা … হুট করে দোকান থেকে অথবা বাগান থেকে তাজা অ্যালোভেরার পাতা থেকে জেল নিয়ে সেগুলো ব্যবহার করা যাবে না। কারণ, অ্যালোভেরার জেলে কিছু বিষাক্ত উপাদান থাকে যার ফলে অ্যালার্জিসহ নানান সমস্যা দেখা দিবে।
  • // সতর্কতা … প্রথমে কিছু পানি ফুটাতে হবে এরপর অ্যালোভেরা থেকে জেল বের করে সেগুলো ফুটন্ত পানিতে দুই মিনিট রেখে সেগুলো ব্যবহার করতে হবে। এই অ্যালোভেরা জেল ফ্রিজে ৭-৮ দিনের বেশি রাখা যাবে না।

আরো পড়ুন: পাতলা চুলের জন্য শ্যাম্পু

এলোভেরা জেল ত্বকে ব্যবহারের নিয়ম – অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম

শুধুমাত্র সরাসরি পাতার তাজা এলোভেরা জেল ত্বকে ব্যবহার করা যেতে পারে অথবা অ্যালোভেরা জেলের সাথে মধু, লেবুর রস, হলুদের গুঁড়া ইত্যাদি মিশিয়েও ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্বকে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করলে বয়সের ছাপ দূর হয়। মুখে লাগালে চোখের চারপাশে কালো দাগ ও ব্রণের দাগ দূর হয়।

নিচে কয়েকটি উপায়ে এলোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে:

  • ডিমের সাদা অংশ ও লেবুর সঙ্গে: অ্যালোভেরা জেল এর সাথে ২/১ বা অর্ধের চামচ পরিমাণ লেবুর রস ও একটি ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। ১৫ থেকে ২০ মিনিট এটি রাখার পর পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। সবচেয়ে বেশি ভালো কুসুম গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করা।
  • মধুর সঙ্গে: ত্বকের ব্রণ দূর করার জন্য মধুর সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল অনেক কার্যকরী। অ্যালোভেরা জেলের সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করার কয়েক মিনিট পর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত করার ফলে ত্বকের স্বাস্থ্য অনেক বেশি ভালো হবে।
  • টক দই মিশিয়ে: ১ চা চামচ টক দইয়ের সাথে ২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল একসঙ্গে মিশিয়ে নেওয়ার পর ১৫ মিনিট ত্বকে লাগাতে হবে। যদি ত্বক তৈলাক্ত হয় তাহলে সমপরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন।
  • নারকেল তেলের সঙ্গে: ত্বক উজ্জ্বল, মসৃন ও ফর্সা করার জন্য অ্যালোভেরার সঙ্গে পরিমাণ মতো নারকেল তেল মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে হবে। কয়েক মিনিট রাখার পর ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • হলুদের সঙ্গে: ত্বক ফর্সা ও পরিষ্কার রাখার জন্য হলুদ অনেক কার্যকরী। হলুদের সঙ্গে অ্যালোভেরা মেশালে ত্বকের জন্য আরো ভালো হবে। এগুলোর সঙ্গে আরো কয়েক ফোঁটা গোলাপজল ও মধু মেশালে ত্বক পরিষ্কার, ফর্সা, উজ্জল ও মসৃন হবে। প্রথমে ১ চামচ অ্যালোভেরা জেল নিতে হবে এর সাথে ১ টেবিল চামচ মধু, কয়েক ফোঁটা গোলাপজল ও ১ চিমটি হলুদের গুঁড়া মেশাতে হবে। তারপর কয়েক মিনিট রাখার পর কুসুম গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।
  • ময়দা অথবা চালের গুড়া: ২ চা চামচ ময়দা অথবা চালের গুড়া, ১ চা চামচ গ্লিসারিনের সঙ্গে ১ টেবিল চা চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মুখে ও গলায় ব্যবহার করতে হবে। এর সাথে কয়েক চামচ উষ্ণ গরম দুধ মেশালে আরো ভালো হবে। এগুলো ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
  • মসুরের ডাল: যাদের চুলে খুশকি রয়েছে ও এলোমেলো তাদের অ্যালোভেরার জেলের সঙ্গে ভিজিয়ে রাখা মসুরের ডাল ব্লেন্ড করে সেটা ভালোভাবে মেশাতে হবে। এরপর এটি চুলে ব্যবহার করলে চুল হবে খুশকিমুক্ত ও ঝলমলে।

আরো পড়ুন: ছেলেদের মুখে ব্রণ দূর করার উপায়

অ্যালোভেরা জেল এর উপকারিতা | ত্বকে অ্যালোভেরার উপকারিতা

অ্যালোভেরা জেল ত্বকের জন্য অনেক উপকারী, এটি ত্বককে উজ্জ্বল ও মসৃন করে এবং সহজে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। অ্যালোভেরা জেল রোদে পুড়া দাগ দূর করতেও সাহায্য করে। ত্বকে চুলকানির জন্য অ্যালোভেরার জেল ব্যবহার করা যায়। ত্বকের পাশাপাশি চুল পড়া, খুশকি, চুলের শুষ্ক ভাব ইত্যাদি সমস্যা দূর করে অ্যালোভেরা জেল।

এক নজরে অ্যালোভেরার উপকারিতা:

  • ত্বকের যৌবন ধরে রাখতে সাহায্য করে।
  • ত্বক সজীব রাখে।
  • চুল বৃদ্ধি, উজ্জ্বল ও মসৃণ করতে সাহায্য করে।
  • ত্বক ফর্সা করে।
  • সানবার্ন দূর করে।
  • ঠোঁট উজ্জ্বল ও কোমল করে।
  • নিয়মিত ব্যবহার করলে মেছতার দাগ কমে।
  • বিভিন্ন চর্মরোগ ও ক্ষত সারায়।
  • হাড় ও মাংসপেশি শক্তিশালী করে।
  • শরীরে জমে থাকা মেদ দূর করে।
  • শরীরকে হাইড্রেট রাখে।
  • অ্যালোভেরা জুস ক্লান্তি দূর করে এবং হজম শক্তি বাড়ায়।

অ্যালোভেরা ব্যবহারের অপকারিতা | অ্যালোভেরার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

অতিরিক্ত অ্যালোভেরা জেল বা রস ব্যবহার করলে অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন; চামড়া ফুলে যাওয়া, চুলকানি, ত্বক ফুসকুড়ি, গলা জ্বালা, বুকে ব্যথা ও শ্বাস কষ্ট হওয়া। এছাড়া অ্যালোভেরার রস পান করলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কারণ; এতে অ্যানথ্রাকনোজ নামে একটি পদার্থ থাকে।

নিয়মিত অতিরিক্ত অ্যালোভেরা ব্যবহারের ফলে এটি সিউডো মেলানোসিস কোলি-এর কারণ হিসেবে দায়ী। যার ফলে কলোরেক্টাল ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক গুণ বাড়িয়ে দেই।

দীর্ঘ সময় ধরে অতিরিক্ত অ্যালোভেরা রস খেলে পেলভিসে রক্ত গঠন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ফলে কিডনির ক্ষতি হবে। এছাড়া এটি অতিরিক্ত অ্যাড্রেনালিন সৃষ্টি করতে পারে যার কারণে হৃদরোগের আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যের অবস্থা আরো ক্ষতি হবে।

গর্ভাবস্থায় হুবহু মায়েদের অ্যালোভেরা জেল এবং রস ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ; এটি গর্ভাশয় সংকোচন উদ্দীপিত করে গর্ভপাত এবং জন্মের সমস্যা করতে পারে।

// Note… গর্ভাবস্থায় অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

আরো পড়ুন: চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা

ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরার পুষ্টি গুণাগুণ

অ্যালোভেরায় প্রায় ২০ ধরনের খনিজ উপাদান এবং বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন রয়েছে। যেমন: ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৬, বি১২ ইত্যাদি। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ১৮ থেকে ২০ ধরনের অ্যামাইনো এসিড রয়েছে। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্যাটি এসিড, ফলিক এসিড, কোলিন ইত্যাদি রয়েছে। এগুলোর পাশাপাশি ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক, কপার, ক্রোমিয়াম, ম্যাংগানিজ ইত্যাদি ভালো উৎস রয়েছে।

এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার অনেক গুলো উপায় রয়েছে। যেমন: ১ চিমটি হলুদের গুঁড়া ও ১ চা চামচ মধুর সাথে এলোভেরা মিশিয়ে মুখে ও ত্বকে মাখলে ত্বক খুব সহজে ফর্সা হবে।

এছাড়া নিয়মিত লেবু, ডিম ও অ্যালোভেরা রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ত্বকে ২০-৩০ মিনিট মেখে রাখার পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিলে ত্বক ধীরে ধীরে ফর্সা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

অনেকে টক দই খেতে পছন্দ করে তারা চাইলে ১ চামচ টক দইয়ের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে ত্বকে মাখলে ত্বক ফর্সা, উজ্জ্বল ও মসৃন হবে। অথবা নারকেল তেলের সঙ্গে মেশাতে পারেন।

অ্যালোভেরা জেল চুলে ব্যবহারের নিয়ম

১ম নিয়ম:

  • প্রথমে গাছ থেকে একটি ভালো অ্যালোভেরা পাতা কেটে নিতে হবে।
  • অ্যালোভেরা পাতাটি নরমাল পানি দিতে একবার ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
  • এরপর পাতা থেকে ১ চামচ পরিমাণ জেল বা রস সংগ্রহ করতে হবে।
  • তারপর, সরাসরি অ্যালোভেরা জেল দিয়ে আপনার চুলে ভালোভাবে ঘষতে হবে।
  • ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে।
  • তারপর শ্যাম্পু দিয়ে মাথার চুল ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।

২য় নিয়ম:

  • প্রথমে গাছ থেকে একটি ভালো অ্যালোভেরা পাতা কেটে নিতে হবে।
  • অ্যালোভেরা পাতাটি নরমাল পানি দিতে একবার ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
  • এরপর পাতা থেকে ১ চামচ পরিমাণ জেল বা রস সংগ্রহ করতে হবে।
  • তারপর, নারকেল তেলের সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল বা রস ভালোভাবে মেশাতে হবে।
  • চুলে অ্যালোভেরা ব্যবহারের আগে শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
  • এরপর, অ্যালোভেরা ও নারকেল তেল মেশানো মিশ্রণটি চুলে মাখতে হবে।
  • এই মিশ্রণটি ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখার পর গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

৩য় নিয়ম:

  • প্রথমে গাছ থেকে অ্যালোভেরা পাতা কেটে নিয়ে ১ চামচ পরিমাণ জেল বা রস সংগ্রহ করতে হবে।
  • এরপর, সামান্য মধু ও ১ চা চামচ টক দই সঙ্গে এই অ্যালোভেরা জেল ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।
  • তারপর, চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত এই মিশ্রণটি ভালোভাবে লাগাতে হবে।
  • ৪০ মিনিট পর স্বাভাবিক পানি দিয়ে চুল পরিষ্কার করে নিতে হবে।

৪র্থ নিয়ম:

  • প্রথমে গাছ থেকে একটি অ্যালোভেরা পাতা কেটে নিতে হবে।
  • তারপর সেটি পানি দিয়ে ভালোভাবে দিয়ে নিতে হবে।
  • এরপর, অ্যালোভেরার পাতা থেকে অর্ধেক বা এক বোতল পরিমাণ পরিমাণ মতো রস বা জেল সংগ্রহ করতে হবে।
  • তারপর, পরিমাণ মতো পানি সঙ্গে অ্যালোভেরার জেল মিশিয়ে একটি বোতলে সংগ্রহ করতে হবে।
  • এটি বাইরে যাওয়ার আগে চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত স্প্রে করে নিতে হবে।
  • এরপর বাড়িতে আসার পর চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

৫ম নিয়ম:

  • গাছ থেকে একটি অ্যালোভেরার পাতা কেটে নিয়ে ২ টেবিল চামচ রস বা জেল সংগ্রহ করতে হবে।
  • ২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরার জেলের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ পেঁয়াজের রস মেশাতে হবে।
  • তারপর মিশ্রণটি চুলে মেখে ২০ মিনিট অপেক্ষা করার পর পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।

আরো পড়ুন: দাঁতের মাড়ি শক্ত করার উপায়

সচরাচর প্রশ্ন ও উত্তর – FAQ

মুখের জন্য কোন জেল ভালো?

মধু ও অ্যালোভেরা জেল মুখের জন্য অনেক ভালো। যাদের মুখ বেশি তৈলাক্ত ও অতিরিক্ত ত্বকের ব্রণ রয়েছে তাদের জন্য মধু ও অ্যালোভেরা জেল অনেক কার্যকরী। এটি ব্যবহারের নিয়ম অনেক সহজ। অ্যালোভেরা ও পরিমাণ মতো মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখে মাখতে হবে।

শুধু এলোভেরা মাখলে কি হয়?

এলোভেরা মাখলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যাবে। যেমন; মুখের ব্রণ দূর হবে, তৈলাক্ত ভাব দূর হবে, ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃন হবে, ত্বক ফর্সা হবে ইত্যাদি। এছাড়া অ্যালোভেরাতে থাকা অ্যান্টি-ফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বকের জন্য অনেক উপকারী।

অ্যালোভেরা মুখে মাখলে কি হয়?

অ্যালোভেরা মুখে মাখলে তৈলাক্ত ভাব দূর হবে, মুখের ব্রণ কমে যাবে এবং মুখ উজ্জ্বল ও মসৃন হবে। তাই নিয়মিত মুখে অ্যালোভেরা দিয়ে তৈরি জেল বা অ্যালোভেরা পাতার তাজা রস মাখা উচিত।

অ্যালোভেরা জেল কখন মাখে?

অ্যালোভেরা জেল যখন ইচ্ছা তখন ত্বকে ব্যবহার করা যাবে। তবে সবচেয়ে বেশি ভালো হয় ঘুমানোর পূর্বে অ্যালোভেরা জেল ত্বকে মাখা। এতে অন্যান্য সময়ের চাইতে অতিরিক্ত উপকারিতা পাওয়া যাবে।

অ্যালোভেরা জেল কি ত্বকের জন্য ক্ষতি?

অ্যালোভেরা জেল ত্বকের জন্য যেমন ভালো তেমনি এটি ত্বকের জন্যেও ক্ষতিকর। অতিরিক্ত অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করার ফলে এলার্জির সমস্যা বেড়ে যাবে, চামড়া ফুলে যাবে, ত্বক ও চুলকানির সমস্যা বৃদ্ধি পাবে এবং নানা ধরনের রোগ সৃষ্টি হবে।

এলোভেরা কি মুখের কালো দাগ দূর করে?

অনেক গুলো গবেষণা অনুযায়ী নিয়মিত এলোভেরা ব্যবহারের ফলে মুখের কালো দাগ দূর হবে। তবে এর পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রমাণ নেই। কারণ: মুখের কালো দাগ জন্ম থেকে শুরু করে বিভিন্ন রোগের কারণে হতে পারে যা ঔষধ ও ক্রিমের মাধ্যমে দূর করা অনেক কঠিন।

এলোভেরা মুখে কত সময় রাখতে হয়?

এলোভেরা মুখে ১০ মিনিট থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত রাখা যাবে। তবে অনেক সময় ৬০ মিনিট বা তারও বেশি রাখা যাবে। কিন্তু ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে এলোভেরা জেল ধুয়ে ফেলা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অতিরিক্ত ত্বকের জন্য ক্ষতি।

অ্যালোভেরা জেল দিনে কতবার লাগানো উচিত?

অ্যালোভেরা জেল দিনে ১ বার লাগানো উচিত। ত্বকে অ্যালোভেরা লাগানোর আগে আলতোভাবে পরিস্কার করে নিতে হবে। ব্রণের দাগ বা দাগের উপর খুব কম পরিমাণে দিনে ২ বার অ্যালোভেরা জেল লাগানো যাবে।

অ্যালোভেরা কি রাতে মুখে লাগানো যায়?

হ্যাঁ, আপনি চাইলে সারারাত অ্যালোভেরা জেল মুখে লাগিয়ে রাখতে পারেন। তবে এর আগে আপনার চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ,অনেকের ক্ষেত্রে অ্যালোভেরা ক্ষতিকর।

অ্যালোভেরার জুস কাদের খাওয়া উচিত নয়?

অনেকের রোগীদের অ্যালোভেরার জুস খাওয়া নিষেধ। যেমন; হৃদরোগ, কিডনির সমস্যা, অন্ত্রের সমস্যা, হেমোরয়েডস, ডায়াবেটিস ইত্যাদি। আপনি যদি নিয়মিত ঔষধ সেবন করেন তাহলে অ্যালোভেরার জুস খাওয়ার আগে ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।

এই আর্টিকেলে সম্পূর্ন এই সঠিক ভাবে অ্যালোভেরা জেল মুখে ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আর্টিকেলটা অ্যালোভেরা জেলের সঠিক ব্যবহার ও ত্বক ফর্সা, উজ্জ্বল ও মসৃন করতে সাহায্য করবে। এলোভেরা জেল ত্বকে ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে ফুল গাইড দেওয়া হয়েছে আশা করি আর্টিকেল টা শেষ পর্যন্ত পড়েছেন।

Leave a Comment

error: Content is protected !!