ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর ১০টি উপায়

শরীর সুস্থ রাখতে চাইলে ব্যায়াম করার কোন বিকল্প নেই। ব্যায়াম করার মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা যায় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়। এছাড়া, আমাদের শরীরের জন্য ব্যায়ামের অনেক উপকারিতা রয়েছে। বিশেষ করে ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে চাইলে ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই। এরপরেও, ডায়েট বা ব্যায়াম ছাড়াই ওজন কমানো সম্ভব। তাই এর আর্টিকেলে আলোচনা করা হলো ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায়।

ব্যায়াম না করে ওজন কমানো বেশি কঠিন কাজ নয়। আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ ব্যায়াম করে না। তারা তাদের ওজন কিছু ঘরোয়া উপায়ে কমিয়ে থাকে। সে সকল ঘরোয়া উপায় এখানে আলোচনা করা হয়েছে। অনেকে মনে করে থাকে কম খেলে ওজন কমে যায়। আসলে এই ধারণা ভুল। এর ফলে শরীরের পুষ্টি গুণাগুণের অভাব দেখা দিবে, এছাড়া আরো নানা সমস্যা তো রয়েছে।

নারী এবং পুরুষ উভয়ের জন্য শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়া বেশ অস্বস্তিকর। বর্তমান সময়ে মানুষের অনিয়মিত জীবনযাপনের কারণে খুব বেশি পরিমাণে ওজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যা বেড়েই চলছে। আর এই কারণ হিসেবে আমাদের মাথায় সবার প্রথমে যে চিন্তা আসে সেটা হলো বেশি খাবার খাওয়া এবং ওজন কমানোর কথা চিন্তা করলে যে কথাটা মাথায় আসে সেটা হলো ডায়েট বা ব্যায়াম।

কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই সকল চিন্তা বা ধারণা সম্পূর্ন ভুল। কারণ বেশি খাওয়ার কারণে সবার ওজন বাড়ে না আবার ব্যায়াম বা ডায়েট করার কারণে সবার ওজন কমে না। তাই, এখানে বিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে ডায়েট বা ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর সেরা ১০টি উপায় সম্পর্কে জানানো হয়েছে।

Table of Contents

ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায়

ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর জন্য খাদ্য তালিকায় এবং জীবনযাপনে পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে। খাদ্যতালিকায় প্রচুর পানি, প্রোটিন, ফল ও সবজি যুক্ত করতে হবে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় খাবার খাওয়া এবং একটানা ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে। এছাড়া, অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলতে হবে এবং ব্যায়াম হিসেবে আপনি ২০-৩০ মিনিট হাঁটতে পারেন। তাহলে আপনার ওজন ধীরে ধীরে কমে যাবে।

দ্রুত ওজন কমানো ভালো কাজ নয়। চিকিৎসকরা বলে থাকে ওজন কমাতে হবে ধীরে ধীরে, তাহলে এটি বেশি কাজ আসে। এছাড়া বিশেষজ্ঞদের মতে, ওজন কমানোর জন্য জিমে গিয়ে ঘাম না ঝরিয়ে, খাবার খাওয়া বন্ধ না করে খাদ্যাভ্যাস এবং জীবন যাপনে পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে। প্রতিদিন অল্প অল্প করে এইসকল পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারলে ব্যায়াম না করে ওজন কমানো সম্ভব।

আরো পড়ূনঃ চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা

ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর সেরা ১০টি উপায়

শরীরের ওজন বৃদ্ধি শুধু যে বেশি বেশি খাবার খাওয়ার কারণে হয় তেমনটা না। ওজন বৃদ্ধির সাথে শরীরের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সংযোগ রয়েছে। যেমন ঔষধ, হরমোন ও বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণেও কিন্তু ওজন বৃদ্ধি পায়। তাই শুধু খাবার এবং জীবনযাপনের উপর নির্ভর করলে হবে না। আপনার যদি শারীরিক বা হরমোনের কোন সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আগে সেটির চিকিৎসা করতে হবে। যাইহোক, যদি আপনার শরীরের কোন সমস্যা না থাকে এবং আপনি যদি ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় খুঁজেন তাহলে নিচে ১০টি উপায় রয়েছে বিস্তারিত দেখে নিন।

১. অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলুন

আপনি যদি চান ব্যায়াম না করে ওজন কমাতে চান তাহলে সবার প্রথমে অস্বাস্থ্যকর খাবার গুলো এড়িয়ে চলুন। অস্বাস্থ্যকর খাবার গুলো মধ্যে রয়েছে; দোকানে তৈরি খাবার, চিপস, মিষ্টি, চানাচুর, আচার, চকলেট ইত্যাদি। এগুলোর স্বাস্থের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি আপনার শরীরের ওজন কমতে দিবে না। এগুলো না খেয়ে আপনি ফলমূল, ড্রাই ফ্রুট, বাদাম, সবজি, ঘরের তৈরি খাবার ইত্যাদি স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পারেন।

অনেকে মনে করে ডার্ক চকলেট স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এবং এটি খাওয়ার ফলে ওজন কমে। আমাদের জানা মতে এখন পর্যন্ত কোন বিশেষজ্ঞ এবং কোন ভেরিফাই আর্টিকেলে এই কথা বলা হয় নি। তাই, আপনি যদি সাধারণ কোন আর্টিকেলে দেখে থাকেন যে ডার্ক চকলেট খাওয়ার ফলে ব্যায়াম না করে ওজন কমানো যাবে তাহলে এর থেকে বিরত থাকুন। চকলেট স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তবে মাঝে মাঝে খাওয়া যেতে পারে।

২. খাওয়ার আগে গরম পানি বা সাধারণ পানি পান করুন

খাওয়ার আগে পানি পান করলে খিদে কমে যাবে এবং খাবার খুব সহজে হজম হতে সাহায্য করবে। আপনি যদি খাবার কিছুটা কম খেতে চান তাহলে খাওয়ার আগে ১ গ্লাস পানি করুন এরপর আপনার পেট কিছুটা ভরে যাবে। এর ফলে আপনার ওজন আগের তুলনায় অনেকটা কমে যাবে।

ওজন কমানোর জন্য গরম পানি অনেক উপকারী। কারণ গরম আপনি আমাদের শরীরের টক্সিন দূর করে এবং আমাদের শরীরে যে বাড়তি মেদ জমে তা প্রতিরোধ করে। তাই, আপনি চাইলে খাবার খাওয়ার আগে হালকা গরম পানি খেতে পারেন। লেবু, মধু এবং গরম পানি এগুলো ওজন কমাতে অনেক সাহায্য করে থাকে।

৩. পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানো

স্বাস্থ্যের জন্য ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। ঘুমের অভাবে স্বাস্থ্যের বারোটা বেজে যাবে। অনিয়মিত ঘুমের কারণে শরীরের ওজন অস্বাভাবিক ভাবে পরিবর্তন হয়ে থাকে। বিশেষ করে রাতে জেগে থাকলে ওজন বৃদ্ধি পাবে। তাই প্রতিদিন কমপক্ষে ৬-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করতে হবে।

গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা নিয়মিত ঘুমায় না, রাতে জেগে থাকে তাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। অনেকে মনে করে অতিরিক্ত ঘুম গেলে ওজন বেড়ে যায়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলে, ঘুমের অভাবে শরীরের ওজন বেড়ে যায়। তাই শারীরিক এবং মানসিক ভাবে ভালো থাকতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে।

৪. কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটুন

যারা ব্যায়াম করতে চান না তারা চাইলে খাবার খাওয়ার পর ১০-৩০ মিনিট হাঁটতে পারেন। এটিও অনেকটা ব্যায়ামের মতো কাজ করে থাকে। আপনি যদি ওজন কমাতে চান তাহলে অবশ্যই হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলবেন। এটি অন্যান্য সকল উপায়ের চাইতে বেশি কার্যকরী।

৫. চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন

ওজন কমাতে চাইলে এখন থেকে চিনি খাওয়া বাদ দিন। ১ চা-চামচ চিনিতে ১৬% ক্যালরি যা আপনার ওজন বাড়িয়ে দিবে। চিনিযুক্ত খাবার বাদ দেওয়া মানে আপনাকে মিষ্টি জাতীয় সকল খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। যদি কোন প্রকার ব্যায়াম না করে ওজন কমাতে চান তাহলে আপনাকে এই কাজটি অবশ্যই করতে হবে। আপনার ওজন যদি স্বাভাবিক থাকে তাহলে আপনি চিনি কম পরিমাণে খেতে পারেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, হৃদপিণ্ডের নানা জটিলতার কারণ হিসেবে চিনি দায়ী। এছাড়া, চিনি বিপাক ক্রিয়া ধীর করে দেয়। তাই চিনি এড়িয়ে যাওয়ার কোন বিকল্প পদ্ধতি নেই।

আরো পড়ূনঃ ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে জেনে নিন

৬. বেশি করে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান

শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে চাইলে এবং ওজন কমাতে চাইলে বেশি বেশি প্রোটিন জাতীয় খাবার খাবেন। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের তালিকায় ডিম, মাংস, মাছ, ডাল, বাদাম, বীজ ইত্যাদি রাখতে পারেন। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার ফলে বিপাক ক্রিয়া বৃদ্ধি পায় এবং পেটের ক্ষুধা অনেক কমিয়ে দেয়। ফলে শরীরের ওজন কমতে থাকে।

আপনার যদি সকালে মাখন, পাউরুটি ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে সেগুলো বাদ দিয়ে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান। প্রোটিন জাতীয় খাবার অনেক গুলো রয়েছে। আপনি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা থেকে যেকোন একটি বা দুটি খাবার সকালের জন্য বেছে নিতে পারেন।

৭. ফাইবারযুক্ত খাবার খান

বিভিন্ন গবেষনায় বলা হয়েছে, ফাইবারযুক্ত খাবার ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি দীর্ঘ সময় ক্ষুধামুক্ত রাখতেও সাহায্য করে থাকে। যাদের কোলেস্টেরল এর সমস্যা রয়েছে এটিও নিয়ন্ত্রন রাখতে ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া যেতে পারে। ফাইবারযুক্ত খাবার তালিকায় ব্রকোলি, বাদাম, জাম, আপেল, আলো, ডাল, শুকনো ফল আরো অনেক ধরনের খাবার রয়েছে।

৮. বেশি বেশি সালাদ খান

বিভিন্ন ধরনের সালাদ যেমন: শসা, গাজর, মাশরুম, ব্রকোলি, টমেটো, লেবু, লেটুসপাতা, ইত্যাদি ওজন কমানোর জন্য বেশ কার্যকরী। বিশেষ করে আপনি চাইলে এমনিতে বেশি বেশি শসা খেতে পারেন। শসা শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে। আপনি দিনে দুই একবার সালাদ খেতে পারেন এতে কোন অসুবিধা নেই।

আরো পড়ূনঃ ছেলেদের মুখে ব্রণ দূর করার উপায়

৯. ফলমূল ও সবজি খান

শরীরের জন্য ফলমূল এবং সবজি খাওয়ার কোন বিকল্প নেই। ভিটামিন ও খনিজ এই দুটির চাহিদা সবচেয়ে বেশি মেটানো সম্ভব ফলমূল ও সবজি খাওয়ার মাধ্যমে। এটি কিন্তু আমাদের শরীরের ওজন বাড়ায় না বরং ওজন কমানোর পাশাপাশি হাড়ের স্বাস্থ্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, ত্বক, মস্তিষ্ক, হৃদযন্ত্র ইত্যাদি সকল কিছু ভালো রাখে। তাই, আপনাকে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় ফলমূল ও সবজি রাখতেই হবে।

১০. খাবার ভালো করে চিবিয়ে বা ধীরে ধীরে খান

ওজন কমানোর জন্য শুধু খাবার খেলে হবে না, খাবার খাওয়ার সময় কয়েকটি বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। এর মধ্যে একটি হলো ওজন কমানোর জন্য খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খেতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসকল ব্যক্তিরা খাবার খাওয়ার সময় ধীরে ধীরে বা চিবিয়ে খাই না তাদের ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। আর খাবার চিবিয়ে খেলে ক্যালরির পরিমাণ হ্রাস পায় তাই ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সুযোগ থাকে না।

আরো পড়ূনঃ হাত পা অবশ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

উচ্চতা অনুযায়ী ওজন কত হওয়া ভালো

উচ্চতাওজন সীমা
৪ ফুট ২ ইঞ্চি২৯.৮ – ৩৭ কেজি
৪ ফুট ৩ ইঞ্চি৩১.৩ – ৩৮.৮ কেজি
৪ ফুট ৪ ইঞ্চি৩২.২ – ৪০ কেজি
৪ ফুট ৫ ইঞ্চি৩৩.৭ – ৪১.৯ কেজি
৪ ফুট ৬ ইঞ্চি৩৪.৭ – ৪৩.১ কেজি
৪ ফুট ৭ ইঞ্চি৩৬.৩ – ৪৫ কেজি
৪ ফুট ৮ ইঞ্চি৩৭.৩ – ৪৬.৩ কেজি
৪ ফুট ৯ ইঞ্চি৩৯ – ৪৮.৩ কেজি
৪ ফুট ১০ ইঞ্চি৪০ – ৪৯.৭ কেজি
৪ ফুট ১১ ইঞ্চি৪১.৬ – ৫১.৭ কেজি
৫ ফুট৪২.৭ – ৫৩.১ কেজি
৫ ফুট ১ ইঞ্চি৪৪.৪ – ৫৫.২ কেজি
৫ ফুট ২ ইঞ্চি৪৫.৬ – ৫৬.৬ কেজি
৫ ফুট ৩ ইঞ্চি৪৭.৪ – ৫৮.৮ কেজি
৫ ফুট ৪ ইঞ্চি৪৯.২ – ৬১.১ কেজি
৫ ফুট ৫ ইঞ্চি৫০.৪ – ৬২.৬ কেজি
৫ ফুট ৬ ইঞ্চি৫২.২ – ৬৫ কেজি
৫ ফুট ৭ ইঞ্চি৫৩.৫ – ৬৬.৪ কেজি
৫ ফুট ৮ ইঞ্চি৫৫.৪ – ৬৮.৮ কেজি
৫ ফুট ৯ ইঞ্চি৫৬.৭ – ৭০.৪ কেজি
৫ ফুট ১০ ইঞ্চি৫৮.৬ – ৭৩ কেজি
৫ ফুট ১১ ইঞ্চি৬০ – ৭৪.৫ কেজি
৬ ফুট৬২ – ৭৭ কেজি
৬ ফুট ১ ইঞ্চি৬৩.৩ – ৭৮.৭ কেজি
বিএমআই বের করার নিয়ম
আপনি যদি উচ্চতা অনুযায়ী আপনার ওজন বেশি নাকি কম সেটি জানতে চান তাহলে বিএমআই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। তার জন্য আপনি নিচের নিয়ম অনুসরণ করুন।

  • বিএমআই = ওজন ÷ উচ্চতা (ফুট × ইঞ্চি)

আমাদের বিএমআই যদি ১৮.৫ এর নিচে হয়ে থাকে তাহলে এটি অস্বাভাবিক কম ওজন। যদি ১৮.৫ থেকে ২৪.৯ হয় তাহলে এটি স্বাভাবিক ওজন। যদি ২৫.০ থেকে ২৯.৯ হয় তাহলে এটি অতিরিক্ত ওজন। আর যদি ৩০ এর বেশি হয় তাহলে স্থূল বা খুব মোটা।

বয়স অনুযায়ী ওজন কত হওয়া ভালো

  • ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী একজন পুরুষের সর্বোচ্চ ওজন হওয়া উচিত ৮৩.৪ কেজি এবং একই বয়সে একজন মহিলার ওজন হওয়া উচিত ৭৩.৪ কেজি।
  • ৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সে একজন মহিলার ওজন সর্বোচ্চ ৭৬.৭ কেজি পর্যন্ত হওয়া উচিত এবং পুরুষের ওজন ৯০.৩ কেজি পর্যন্ত হওয়া উচিত।
  • ৪০ থেকে ৪৯ বছর বয়সী একজন পুরুষের ওজন ৯০.৯ কেজি পর্যন্ত হওয়া স্বাভাবিক এবং একজন মহিলার ক্ষেত্রে ৭৬.২ কেজি হওয়া স্বাভাবিক।
  • ৫০ থেকে ৬০ বছর বয়সি একজন পুরুষের ওজন সর্বোচ্চ ৯১.৩ কেজি হওয়া উচিত এবং একই বয়সে একজন মহিলার সর্বোচ্চ ৭৭ কেজি হওয়া উচিত।

বয়স অনুযায়ী ওজন কত হবে এই স্বাভাবিক সীমাগুলো অসুস্থ, প্রাপ্তবয়স্ক এবং গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন হওয়া স্বাভাবিক।

ওজন কমানোর উপায়

নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন কমাতে চাইলে নিচের উপায় গুলো অনুসরন করুন। ওজন কমানোর উপায় গুলো অনুসরণ করলে আপনার জিমে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।

  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
  • চিনি, মিষ্টি ও ক্যাফেইন জাতীয় খাবার ত্যাগ করুন।
  • ফলমূল খান তবে জুস ত্যাগ করুন।
  • প্রোটিন ও আঁশযুক্ত খাবার বেশি বেশি খান।
  • মদ খাওয়া বন্ধ করুন।
  • আইসক্রিম খাওয়া বন্ধ করুন।
  • চর্বিযুক্ত মাছ ও মাংস ত্যাগ করুন।
  • চর্বিযুক্ত খাবার ত্যাগ করুন।
  • সালাদ খাওয়ার চেষ্টা করুন।
  • খাবার খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হাঁটুন।
  • ঘুমানোর ২ থেকে ৩ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করুন।
  • দিনে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা ঘুমান।

আরো পড়ুন: গর্ভাবস্থায় বেশি ঘুমালে কি হয়?

FAQ

কিভাবে ওজন কমানো যায়?

ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করুন এবং খাবারের তালিকায় পরিবর্তন নিয়ে আসুন। বেশি বেশি সালাদ ও ফাইবার জাতীয় খাবার খান। চিনি ও মিষ্টিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। আপনি চাইলে চা ও কফি খেতে পারেন।

চিকন হওয়ার খাদ্য তালিকা কি?

চিকন হওয়ার খাদ্য তালিকায় বেশি বেশি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন; মাছ, মাংস, ডিম, দুধ এবং ফাইবার জাতীয় খাবার যেমন; আপেল, আলো, বাদাম, শুকনো ফল ইত্যাদি রাখতে হবে। এর পাশাপাশি বেশি করে সালাদ খেতে হবে। খাবার খাওয়ার সময় অবশ্যই চিবিয়ে খেতে হবে যাতে খাবার ঠিকমতো হজম হয়।

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় কি?

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর জন্য হাটা, সাইকেল চালানো, সাতার কাটা, হাই-ইনটেনসিটি ট্রেনিং, সার্কিট ট্রেনিং, ওয়েট ট্রেনিং এই ব্যায়াম গুলো করা উচিত। এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি, আঁশযুক্ত খাবার ও রোজার মাধ্যমে মেয়েদের ওজন কমানো সম্ভব।

ওজন কমানোর জন্য কি ব্যায়াম করা উচিত?

অবশ্যই, ওজন কমানোর জন্য ব্যায়াম অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ডায়েটের পাশাপাশি ব্যায়াম করলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ওজন কমে। হাঁটা, দৌড়ানো ও সাঁতার কাটার মতো ব্যায়াম গুলো করে ওজন কমানো যাবে।

শেষ কথা

অতিরিক্ত ওজন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তেমনটি কম ওজন বা চিকন সাস্থ্যও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই আপনার যদি অতিরিক্ত পরিমাণে ওজন বেড়ে যায় তাহলে আপনি ওজন কমানোর চেষ্টা করতে পারেন। কিন্তু আপনার যদি ওজন স্বাভাবিক থাকে এবং আপনার চলাফেরা কোন অসুবিধা না হয় তাহলে আপনার ওজন কমানোর কোন প্রয়োজন নেই। তবে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য আপনাকে নিয়মিত ৬-৮ ঘণ্টা একটানা ঘুমাতে হবে এবং খাদ্যতালিকায় কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে।

Leave a Comment

error: Content is protected !!