সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ নিয়ে চিন্তিত? তাহলে জেনে নিন সঠিক সমাধান

ছোটবেলায় কমবেশি সকলেরই অর্ন্তবাস নিয়ে বিশেষ উৎসাহ থাকে। যে কোনও মেয়েদের স্কুলে প্রথম শ্রেণি থেকেই জোর দেওয়া হয় ‘টেপজামা’। এমনও কিছু স্কুল আছে যেকানে প্রার্থনার পর লাইনে দাঁড়িয়ে রীতিমতো দেখা হত সবাই টেপজামা পরেছে কিনা। উঁচু ক্লাসের সঙ্গে সঙ্গে বদলায় সেই নিয়ম। আর এখান থেকেই প্রথম আসক্তি তৈরি হয় ব্রা নিয়ে। বাড়ির মা-স্থানীয় সকলেই ব্যবহার করেন কিন্তু সবসময় তা লোকচক্ষুর আড়ালে রাখেন। যথাসম্ভব ছেলেদের অগোচরে। কিন্তু কেন এই বিশেষ বস্তুটির ব্যবহার তা নিয়ে কৌতুবল থাকেই। যে কৌতূহল থেকে বাচ্চারা শাড়ি-ব্লাউজ পরতে এতটা ভালোবাসে। তাদের ধারণা শাড়ি পরলেই বুঝি ব্রা পরা যায়। সঠিক ব্রা সাইজ না জানার কারণে অনেকেই দোকানে গিয়ে নানারকম সমস্যার সম্মুখীন হন। এমনকী দোকানে ছেলেরা থাকে বলে লজ্জায় অনেকেই বলতে পারেন না, ঠিক কি চাই। সঠিক ব্রা সাইজ সম্পর্কে জানা অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সঠিক ব্রা সাইজ এড়াতে পারে ব্রেস্ট ক্যানসারও।

সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ করবেন কিভাবে?


সঠিক ব্রা সাইজে নির্ধারণ না করে ব্রা (Bra) পরার কারণে সমস্যা বাড়ে। স্তনে রক্ত চলাচল ঠিকঠাক হয়ে না পাড়ার ফলে বড় বিপদও হতে পারে। তাই অন্তর্বাস কিনতে যাওয়ার আগে অবশ্য়ই সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণের বিষয়ে সতর্ক থাকুন। জেনে নিন কীভাবে সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণের জন্য অন্তর্বাসের মাপ নিতে হয়-
আপনি নিজের সঠিক ব্রা সাইজ খুঁজতে গিয়ে কোনও ভুল করবেন না। সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণের জন্য মাপ নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে একটি ব্রা পরতেই হবে। শুনতে অবাক লাগলেও এই কথা সত্যি। একটি নন-প্যাডেড কম্ফোর্টেবল ব্রা পরুন। যা আপনার একদম ফিট হয়। সেই ব্রা পরুন।
এবার খেয়াল রাখুন আপনার স্তন একদম সঠিক ভাবে আছে। তাতে কোনও অস্বস্তি হচ্ছে না আপনার। এরকম ব্রা বেছে নেবেন, যা কোনওভাবেই যেন আপনার অস্বস্তির কারণ হয়। পরুন সেই ব্রা। সুতির হলেই বেশি ভালো হয়।
প্রথমে এটা খেয়াল রাখবেন যে, সঠিক ব্রা সাইজ বেছে নেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট একটি মেজারিং টেপ প্রয়োজন।
প্রথমে স্তনের ঠিক নিচেই আলতো ভাবে ফিতা ধরুন। ফিতা ও শরীরের মাঝে এক আঙ্গুল পরিমাণ ফাঁকা রেখে পুরো ঘেরের মাপ নিন। ৩০, ৩২, ৩৪, ৩৬, ৩৮ যাই হোক যদি আপনার মাপটি বেজোড় সংখ্যায় আসে তবে ৫ ইঞ্চি যোগ করুন, আর জোড়সংখ্যায় আসলে ৪ ইঞ্চি যোগ করুন। আর এটাই হবে আপনার প্রকৃত ব্যান্ড সাইজ। যেমন স্তনের নিচের মাপ ২৯ ইঞ্চি পেলে, তাহলে ৫ ইঞ্চি যোগ করুন=৩৪ ইঞ্চি। আর এই মাপ যদি ৩২ ইঞ্চি হয় তবে ৪ ইঞ্চি যোগ করুন= ৩৬ ইঞ্চি হবে আপনার ব্যান্ড সাইজ।

ঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণের ক্ষেত্রে কাপ সাইজ কীভাবে বুঝবেন?
এবার স্তনের সর্বোচ্চ স্ফিত অংশে ফিতা ধরে মাপ নিন। এই মাপ থেকে সাইজ–এর মাপ বাদদিলেই আপনার কাপ সাইজ বেরিয়ে আসবে। যেমন আপনার সাইজ ৩৪, আর স্তনের মাপ এলো ৩৭। তাহলে আপনার ব্রার সাইজ ৩৪ সি। প্রতি ইঞ্চিতে এক সাইজ বেড়ে যায়। ১“= এ, ২” = বি, ৩“= সি. ৪“=ডি ইত্যাদি।
সঠিক ব্রা সাইজ এর ব্যবহার কিন্তু আপনার লুককে অনেকটাই ঠিক করে দেয়। আপনাকে কেমন দেখতে লাগবে, তাও ঠিক করে দিতে পারে। তাই সব সময় সঠিক স্টাইলের ব্রা বেছে নিন। দেখতেও ভালো লাগবে। আপনাকে অস্বস্তিতেও পড়তে হবে না।

সঠিক ব্রা সাইজ এর প্রকারভেদ


সঠিক ব্রা সাইজ সিলেক্টশন যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনিভাবে সঠিক স্টাইলের ব্রা সিলেকশনের ক্ষেত্রে বয়স, অ্যাকটিভিটি ও পোশাক সবদিকেই খেয়াল রাখা উচিত। একজন টিনেজার যে ধরনের ইনার ওয়্যার পরবে, সেইম ইনার ওয়্যার তো একজন মধ্য বয়সী নারীর জন্য পারফেক্ট হবে না। আবার যে নতুন মা হয়েছে, অথবা যে রেগুলার এক্সারসাইজ করছে বা জিমে যাচ্ছে তাদের জন্যও তো ব্রা একই রকম হবেনা। রেগুলার ব্রা এর সাথে নিজের কালেকশনে সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ করে আর কোন কোন ধরনের ব্রা রাখা উচিত এ বিষয়ে চলুন বিস্তারিত জেনে নেই-

টিনেজার ব্রা
যারা প্রথমবারের মতো আন্ডার গার্মেন্টস পরতে যাচ্ছে, তাদের জন্য এমন ব্রা সিলেক্ট করতে হবে যেটা ব্রেস্ট এরিয়াকে প্রোপারলি কভার করে কমফোর্টেবল ফিল দিবে। কয়েকটি টিনেজার ব্রা যেমন: Armela Tin Tin Pre Teen Bra, Armela Princess of Sixteen Teenage Bra ইত্যাদি।

রেগুলার ইউজের জন্য কমফোর্টেবল ব্রা
অফিস বা ভার্সিটিতে ব্যবহারের ক্ষেত্রে একদিকে যেমন সঠিক ব্রা সাইজ হতে হবে তেমনি হতে হবে কমফোর্টেবল।রেগুলার ইউজের জন্য এমন ব্রা সিলেক্ট করুন যা আপনাকে দিবে প্রোপার সাপোর্ট ও আল্টিমেট কমফোর্ট। এমনি কয়েকটি কমফোর্টেবল ব্রা হলো – Armela Cozy Classy Bra, Valene Rising Butterfly Full Coverage Wired Bra ইত্যাদি। সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ করতে পারলে ১৮ থেকে ৪০, সব বয়সের নারীরাই স্বাচ্ছন্দ্যে পরতে পারবেন। ব্রেস্টের শেইপ ঠিক রাখে,সুপার কমফোর্টেবল তাই সারাদিন পরে থাকলেও অস্বস্তি হয় না।

এক্সারসাইজের সময় স্পোর্টস ব্রা
জিম, জগিং, খেলাধূলা বা যোগ ব্যায়াম (exercise) করার সময় অবশ্যই পরতে হবে এই বিশেষ ব্রা। অনেকে কাজের জায়গাতেও পরেন এই ধরনের ব্রা। কী ধরনের পেশার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তার উপর নির্ভর করছে। তবে বিশেষ প্রয়োজন না পড়লে সারাদিন এই ব্রা পরে থাকার কোনও প্রয়োজন নেই। অবশ্যই স্পোর্টস ব্রা এর ক্ষেত্রেও সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ করা আবশ্যক। একটি স্পোর্টস ব্রা হলো -Armela High Impact Sports Bra,। এটি ফুল কভারেজ ব্রা তাই ব্রেস্টকে প্রোপারলি হোল্ড করে
সামনের দিকে চেইন থাকায় খুব সহজে খোলা ও পরা যায়
সফট ও কমফোর্টেবল ম্যাটেরিয়াল হওয়াতে ওয়ার্ক আউটের সময়ও অস্বস্তি লাগে না।

জন্য ম্যাটারনিটি ব্রা
নতুন মায়েরা যারা বেবিকে ব্রেস্টফিডিং করায়, তাদের জন্য সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ করে ম্যাটারনিটি নার্সিং ব্রা ব্যবহার করা প্রয়োজন। আর এমনিতেই এই সময় ব্রেস্ট শেইপে চেঞ্জ আসে। আরামদায়ক হবে, বেবিকে ফিড করানোর জন্য সামনে হুক সিস্টেম থাকবে, ব্রা সাইজ বড় করা যাবে, এই ধরনের ব্রা নতুন মায়েদের জন্য স্যুইটেবল। Valene Sweet Mom Maternity Nursing Bra এমনই একটি ব্রা।

পার্টি ওয়্যারের সাথে পুশ-আপ ব্রা
শাড়ি গাউন বা পার্টি ওয়্যারের সাথে সঠিক ব্রা সাইজ মেপে পুশ-আপ ব্রা পরলে বডি অ্যাপেয়ারেন্স পারফেক্ট থাকে। এগুলো প্যাডেড বা ডাবল প্যাডেড হতে পারে। পুশ-আপ ব্রা ব্রেস্ট টিস্যুকে প্রোপারলি লিফটিং করে, তাই ব্রেস্ট রাউন্ড ও ফার্মড দেখায়। এই ধরনের ব্রা ব্রেস্ট শেইপে ব্যালেন্স আনে, তাই দেখতেও ভালো লাগে। Armela Classic Uplift Push Up Bra বেশ ভালো অপশন।

টি-শার্ট ব্রা
এই ধরনের ব্রা হল বেসিক ব্রা, যা পরা যায় যে কোনও জামা-কাপড়ের ভিতরে। এই ধরনের ব্রা-এর বিশেষত্ব হল- জামা-কাপড়ের উপর থেকে স্ট্র্যাপ। ভাল ব্র্যান্ডের টি-শার্ট ব্রা সারাদিন পরে থাকলেও কষ্ট হয় না। কালো, সাদা ও স্কিন- এই তিন রঙের টি-শার্ট ব্রা কিনে রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ। তবে ইচ্ছে করলে পোশাকের সঙ্গে রং মিলিয়েও কিনতে পারেন।

প্যাডেড ব্রা
এই ধরনের ব্রা পার্টি বা ডেটিংয়ের জন্য ঠিকঠাক। যে কোনও লো-নেক ব্লাউজ বা লো-নেক ড্রেস এর নীচে পুশ-আপ ব্রা পরলে সুন্দর লাগে। প্যাডেড হলে স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বড় মনে হবে ব্রেস্ট। হালকা প্যাডিং থাকাই ভাল। তা না হলে অস্বাভাবিক লাগতে পারে।

শারীরিক সেট
ই লঁজারি একেবারেই ব্যক্তিগত সময়ের জন্য। সঙ্গীকে ছুঁয়ে যদি বিছানায় ‘অন্য’ হতে চান, তবে নিজের কালেকশনে একটি শারীরিক সেট রাখতেই হবে। বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা ব্রা এবং প্যান্টির সেটই হল শারীরিক সেট। সচরাচর স্বচ্ছ লেস দিয়ে তৈরি হয় এই বিশেষ লঁজারি, সিল্ক ফেব্রিকেরও হতে পারে।

বেবিডল
সঠিক ব্রা সাইজ হিসেবে বেবিডলে ভীষণ আকর্ষণীয় লাগে মেয়েদের। বিভিন্ন ধরনের বেবিডল পাওয়া যায় আজকাল। কোনওটা বেশি শারীরিক মিলন, তো কোনওটা সারাদিন পরে থাকার পক্ষে বেশ আরামদায়ক।

করসেট
করসেট এক সময়ে সব মেয়েরাই পরত। কিন্তু পরবর্তীকালে টু-পিস ব্রা-প্যান্টিই বেশি জনপ্রিয় হয় মেয়েদের মধ্যে। কারণ, পুরনো করসেটগুলির মধ্যে একটা দম বন্ধ করা ব্যাপার থাকত। তবে এখনকার দামি ব্র্যান্ডের করসেট যথেষ্ট আরামদায়ক। তাছাড়া শরীরকে সুন্দর ভাবে শেপ-আপ করে দেয় করসেট। ড্রেস বা ফিটেড সালোয়ার-কামিজের নীচে করসেট পরলে ভাল লাগে।

ক্যামিসোল
বিদেশে ব্রা-এর পরিবর্তে শুধুই ক্যামিসোল পরার চল রয়েছে। আমাদের সমাজে মেয়েদের অনেক বুঝেশুনে চলতে হয়। তাই ওটা সম্ভব না। সবচেয়ে ভাল, বাড়িতে ক্যামিসোল পরা। এতে পোশাকের নীচে একটা আরামদায়ক সার্পোটও পাওয়া যায়।

টিনেজারদের ক্ষেত্রে সঠিক ব্রা এর ব্যবহার


টিনেজারদের মধ্যে সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ ও ব্রা এর ব্যবহার নিয়ে অনেকটা অস্বস্তি থাকে। এই বয়সের শারীরিক গঠনের পরিবর্তনের ফলে পোশাক পরিধানে কমফোর্ট হতে পারে না হতে পারে না। মানবদেহে পিউবার্টি (এ স্টেজে মেয়েরা ১০-১৪ এবং ছেলেরা ১২-১৬ বছর বয়সে সেক্সুয়ালি ম্যাচিউর হয়) এমন একটি স্টেজ যখন শরীরে অনেক বড় পরিবর্তন আসে। ছেলে-মেয়েরা হুট করেই বড় হয়ে যায়, মুখে ব্রণ হয়, টিনেজার মেয়েরা তাদের প্রথম পিরিয়ডের মুখোমুখি হয়, মেয়েদের চেস্ট বড় হতে থাকে। বড় হওয়ার ঠিক এ মুহুর্তেই মেয়েদের প্রথম ব্রা ব্যবহার করার অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়।এ সময়টিতে অবশ্যই মায়েদের খেয়াল রাখতে হবে। তাদের সাথে ব্রা এর ব্যবহার ও সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণের বিষয়ে সম্পর্কে জানাতে হবে। চলুন জেনে নেই কি কি লক্ষণ দেখলে একজন মায়ের বুঝতে হবে যে তার সন্তানের ব্রা ব্যবহার প্রয়োজন-

১) ব্রেস্ট ডেভেলপ হলে
আপনি যদি বুঝতে পারেন আপনার সন্তানের চেস্ট বড় হচ্ছে, সাথে একটু ডিফারেন্টও- তখন বুঝতে হবে এবার প্রতিদিনের পোশাকের সাথে নিত্য সঙ্গী হতে চলেছে ব্রা। শরীর যখন পিউবার্টির মধ্য দিয়ে যায়, তখন শরীরে ইস্ট্রোজেন নামক এক ধরনের হরমোন তৈরি হয়। এই হরমোনের কারণেই ব্রেস্ট আস্তে আস্তে বড় হয়।

২) বন্ধুদের দেখে আগ্রহী হলে
টিনেজ মেয়েদের মধ্যে অনেকেই ব্রা পরে। যদি আপনার সন্তানের বান্ধবীরাও ব্রা পরে তাহলে আপনিও আপনার সন্তানের ব্রা পরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। শারীরিক গঠন অনুযায়ী আপনার সন্তান আনকমফোর্ট ফিল করলে তখন সিদ্ধান্ত নিন।

৩) স্তনে ব্যথা হলে
স্তন বড় হওয়ার সাথে সাথে ব্যথা হতে পারে। এ সময় শরীরের হরমোনগুলোর কারণে স্তনের আশেপাশের স্কিনে টান লাগে, স্তনে থাকা ফ্লুইডের লেভেল চেঞ্জ হয়ে যায়। মূলত এসব কারণেই ব্যথা হয়। যদি এ ধরনের কোনো ব্যথা বা অস্বস্তি হয়, তবে একদম ভড়কে না যেয়ে ব্রা পরার সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।

৪) খেলাধুলার সময় অস্বস্তি হলে
অনেক মেয়েই টিনেজ বয়সে খেলাধুলা বা ব্যায়াম করে। দৌড়াদৌড়ি, খেলা বা ব্যায়ামসহ যে কোনো ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটিজ করার সময় স্তন বেশি মুভ করতে পারে। এমন হলে ব্রা কেনার উপযুক্ত সময় হয়ত সেটাই। বাইরের অ্যাক্টিভিটিজগুলো করার সময় চাইলে স্পোর্টস ব্রা ব্যবহার করা যায়।

সত্যি বলতে টিনেজার মেয়েরা কখন প্রথম ব্রা পরবে তার কোনো ম্যাজিকাল এইজ বা সময় নেই। উপরে লেখা কোনো ঘটনার মুখোমুখি হলে ব্রা কেনার কথা ভাবতে হবে। লাইফের বেশ বড় একটি চেঞ্জ এটি ব্যবহারের মাধ্যমে শুরু হয় বলে প্রথম দিকে কিছুটা আনকমফোর্টেবল লাগতে পারে। এমন হলে মা-বাবা, বড় বোন অথবা ক্লোজ কারও সাথেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলা যায়।

মায়েরা টিনেজ মেয়ের প্রথম ব্রা কবে কিনবেন?

সাধারণত মেয়েদের জন্য প্রথম ব্রা কেনার বয়স ১০-১১ বছর। মায়েরা সরাসরি না বললেও মেয়ের কথা বা আচরণেও বোঝা যায় সে ব্রা ব্যবহার করতে চাচ্ছে কিনা। কীভাবে বুঝবেন আপনার মেয়ে ব্রা কিনতে চাচ্ছে বা পরতে চাচ্ছে কিনা-
১.মেয়ে যদি ব্রা কেনার কথা নিজে থেকে বলে
২.যদি মেয়ের বান্ধবীরা সঠিক ব্রা সাইজ পরে
৩.যদি চেস্ট নিয়ে সে ডিজকমফোর্ট ফিল করে

কীভাবে বুঝবেন আপনার মেয়ের ব্রা প্রয়োজন কিনা?


যদি মেয়ে নিজ থেকেই ব্রা কেনার কথা বলে তাহলে বুঝতে হবে তার ব্রেস্ট বাডস ডেভেলপ হচ্ছে। অর্থাৎ ব্রেস্ট টিস্যু ডেভেলপ হচ্ছে। মেয়েদের ক্ষেত্রে এমনটি সাধারণত ৮-১৪ বছর বয়সের মধ্যে হয়। তাই মেয়েদের ঠিক কোন বয়সে প্রথম ব্রা পড়া উচিত তার নির্দিষ্ট কোনো বয়স নেই। যে বয়স থেকে মেয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকবে সে বয়স থেকেই ব্রা পরা যায়। সবচেয়ে ভালো হয় মেয়েকে জিজ্ঞেস করে নিলে। মেয়েকে জিজ্ঞেস করার পর সে যদি দোকানে গিয়ে ব্রা কিনতে না চায় তবে সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ করে অনলাইনেও অর্ডার করতে পারেন।

সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ করে ব্রা পড়ার সুবিধা

সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ করে ব্রা পরার কোনো সুনির্দিষ্ট স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে এমন দাবির সমর্থনে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। আসলে, কিছু গবেষণা পরামর্শ দিয়েছে যে ব্রা পরা আসলে স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, যে মহিলারা ব্রা পরেন না তাদের স্তন ঝুলে যাওয়ার ঝুঁকি কম ছিল সেই মহিলাদের তুলনায় যারা নিয়মিত ব্রা পরেন। আরেকটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে মহিলারা সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ না করে আঁটসাঁট বা সংকুচিত ব্রা পরেন তাদের ইন্টারট্রিগো হওয়ার ঝুঁকি বেশি ছিল, একটি ত্বকের জ্বালা যা স্তনের নীচে ঘটতে পারে।

সামগ্রিকভাবে, একটি ব্রা পরার সিদ্ধান্ত একটি ব্যক্তিগত পছন্দ যা ব্যক্তিগত স্বাচ্ছন্দ্য এবং পছন্দের উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত। এমন কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই যে ব্রা পরার কোন সুনির্দিষ্ট স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে এবং শরীরের স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপের জন্য এটি প্রয়োজনীয় নয়। সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ করে ব্রা পড়ার ক্ষেত্রে কিছু সুবিধা আছে বলে অনেকেই মনে করেন। যেমন-

১) সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ করে ব্রা পরিধান করলে এটি স্তনকে সুরক্ষিত রাখে। বাহিরের আঘাত থেকে স্তনকে সুরক্ষিত রাখে। অনেক সময় নিচের দিকে ঝুকে কাজ করতে হয়, তখনের অস্বস্তিবোধ এড়াতে ব্রা দরকার

২) পোষাকের সাথে অনেক সময় স্তনের আকার মিল থাকে না। পোষাকের সাথে মানিয়ে নিতে সঠিক ব্রা সাইজ অনেক প্রয়োজন পরে।

৩) অনেক সময় স্তনকে সাপোর্ট দিতে সঠিক ব্রা সাইজ দরকার পরে। যেমন দৌর ঝাপ বা অন্য কোনো কাজ করার সময় স্তন অস্বাভাবিক ভাবে নাড়াচড়া করলে স্তনের আকার পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। এ সময় স্তনকে সাপোর্ট করে।

৪) সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ করে ব্রা পরলে তা স্তনের ওজন ধরে রাখে। ব্রা স্তনের ওজনকে ব্রেস্ট লাইন ও কাধেরে মাঝে ভাগ করে দেয়। তার মাঝে ব্রা প্রায় ৮০ শতাংশ ভর বহন করে। বাকি ২০ শতাংশ বহন করে কাথ। (কিন্তু ব্রা ঠিক মত ফিট না হলে সে ওজনটা পুরোটাই কাধে চলে যায়। যার ফলে কাবেও ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে, এমনকি স্তনেও এ ব্যথা হতে পারে)

৫) অনেক সময় শারিরীক সমস্যা বা বিভিন্ন কারনে স্তনেরর আকার স্বসাভাবিক থাকে না, তখন সঠিক ব্রা সাইজ স্তনের আকারকে পরিবর্তন করে স্বাভাবিক করে দেয়।

তা ছাড়া ব্রা না পরারও অনেক উপকারিরা আছে। গবেষকরা বলে ব্রা না পরলে আরো উপকারিতা বেশি ব্রা পরলে স্তনের উপর আলাদা চাপ পরে থাকে যার ফলে স্তনে রক্ত ঠিকমত পৌঁছাতে পারে না। এমনকি এর বেশি প্রয়োগে স্তনের টিস্যুগুলোও শক্ত হয়ে যায়।

ব্রা না পরার একাধিক উপকারিতা

অনেক মহিলাদেরই ব্রা সম্পর্কে নানান মিথ প্রচলিত আছে। তারা মনে করেন স্তনের গঠন এবং সৌন্দর্য বজায় রাখতে সব সময় ব্রা পরে থাকা প্রয়োজন। অনেকে বাড়িতে থেকেও নিজেকে ব্রা থেকে আলাদা করতে পারেন না। কষ্ট হলেও সৌন্দর্যের কথা মাথায় রেখে, সেই কষ্ট সহ্য করেন অনেক মহিলা। তবে আপনাদের জানা উচিৎ একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে বেশিরভাগ সময় ব্রা পরে থাকলে ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। কিন্তু এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে ব্রা পরলে সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে। বাস্তবে অধিক সময় ধরে ব্রা পরে থাকলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক ব্রা না পরার উপকারিতা।

রক্ত চলাচল ঠিক থাকে
দীর্ঘক্ষণ ব্রা পড়ে থাকলে বুকে বেশ চাপ অনুভব হয়। এতে পিঠ এবং বুকের মাংসপেশিতে রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। যা শরীরের পক্ষে মোটেও সুখকর নয়।

স্তনের ত্বক ভালো থাকে
ব্রা পড়ে থাকলে ঘাম হয়ে ত্বকে নোংরা জমে। এতে রোমছিদ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যার ফলে ত্বকে চুলকানি, র‍্যাসের মতো সমস্যা দেখা দেয়।

ব্রেস্টের সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে
সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ না করে ভুল সাইজের ব্রা অধিক সময় ধরে পড়ে থাকলে স্তনের টিস্যুগুলো শক্ত হতে শুরু করে। এতে স্তনে ঠিক ভাবে রক্ত পৌছাতে পারে না। তবে ব্রা না পড়লে স্তনে রক্ত সঞ্চার ভালো হয়। যার ফলে স্তন সুস্থ থাকে।

শ্বসন প্রক্রিয়ার সার্বিক উন্নতি হয়
সব সময় ব্রা পড়ে থাকলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। বিশেষ করে গরম কালে এই সমস্যা বেশি লক্ষ্য করা যায়। অনেকেই রাত্রে ব্রা পরেই ঘুমিয়ে পরেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে এটি স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। এতে ঘুমের মাঝে সাফোকেশন দেখা দেয়। যা খুবই মারাত্মক। তবে ব্রা না পড়ে থাকলে এই ধরনের সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়।

সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ না করলে হতে পারে বিভিন্ন স্বাস্থ্য ঝুঁকি

অনেকেরই ধারনা থাকে ব্রা যত ফিটিং হবে ব্রেস্টের শেপ দেখতে তত ভাল লাগবে। কিন্তু বাড়ি ফিরে ব্রেস্টে চুলকুনি, দম বন্ধ লাগা, ব্রেস্টে ব্যথা এমনটা কত বার হয়েছে বলুন তো আপনার সঙ্গে? অতিরিক্ত টাইট ব্রা শুধ অস্বস্তি বাড়ায় না, ক্ষতি করে স্বাস্থ্যেরও। জেনে নিন কী ভাবে।

১। কোমরে ব্যথা- যদি স্তন ভারী হয় এবং সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ না করে পরেন, তাহলে পিঠে ব্যথা হয়। ভুল সাইজের ব্রা বুকে চাপ দেয়। সেই সঙ্গেই ভারী স্তনের কারণে পিঠ ঝুঁকে কোমরে ব্যথা হয়। অতিরিক্ত টাইট ব্রা পাঁজরে চাপ দেয় ফলে কোমরে ব্যথা হয়।

২। স্তনে ব্যথা- সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ না করে ব্রা পরার সবচেয়ে খারাপ প্রভাব স্তনে ব্যথা। ব্রা যদি খুব টাইট হয় তাহলে স্তনে রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হয় না। ফলে ব্যথা হয়।

৩। কাঁধ ও ঘাড়ে ব্যাথা- ব্রা খুব টাইট হলে স্ট্র্যাপ কাঁধে অতিরিক্ত চাপ দেয়। কাঁধ থেকে ব্যথা ছড়ায় ঘাড় পর্যন্ত।৪। লিম্ফ বাহিকায় ব্লকেজ- ব্রেস্ট খুবই পাতলা হয়। ব্রা-এর চাপে লিম্ফ ভালভ ও ভেসেলে চাপ পড়ে। যা বড়সড় শারীরিক সমস্যা ডেকে আনতে পারে।

৫। ব্রেস্ট লিগামেন্ট- সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ না করে বা অতিরিক্ত ফিটিং ব্রা পরলে স্তনের লিগামেন্টে খারাপ প্রভাব পড়ে। যার ফলে ব্যথা হয়। স্তন ঝুলে যায়।

৬। ত্বকের ক্ষতি- টাইট ব্রা ত্বকেরও ক্ষতি করে। চুলকুনি, লাল ব্যথাযুক্ত র্যাশ দেখা যায় স্তনে।

ব্রা পড়লে কি স্তন ক্যান্সার (cancer) হয়?

সারাক্ষণ ব্রা পরে থাকলে কিংবা সঠিক ব্রা সাইজ ব্যবহার না করলে স্তন ক্যান্সার হয়, এমন কোন নিশ্চিত প্রমাণ এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের কাছে নেই। আবার স্তন ক্যান্সার যে হয়ই না, সেটাও গ্যারান্টি দিয়ে বলা যাবে না। কিন্তু হ্যাঁ, সারাক্ষণ ব্রা পরে থাকার আরও কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। যেমন, একই ব্রা সারাদিন পরে থাকায় স্তনে (breast) র্যাশ বা ত্বকের নানান রকম অসুখ হতে পারে। সারাক্ষণ ব্রা পরে থাকার ফলে ঘাম হয়, ফলে নানান রকম ফাঙ্গাল ইনফেকশন হতে পারে। সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ না করে ব্রা ব্যবহার করতে ব্রা এর ফিতায় কাঁধ ও পিঠে ত্বক ক্ষতিগ্রস্থ (harmful) হতে পারে, কাঁধ বা পিঠে এবং বুকে ব্যথা হতে পারে টাইট ব্রা এর কারণে।

কাপের নিচে কাঠি বসানো ব্রা কিংবা পুশ আপ ব্রা সারাক্ষণ পরে থাকলে স্তনে অস্থায়ী লাম্প দেখা দিতে পারে। এই লাম্পগুলো থেকে যে অন্য অসুখ হবেই না, এমন কোন নিশ্চয়তা নেই। আপনার কাপ সাইজ যদি কম হয়ে থাকে, অর্থাত্‍ স্তন যদি আকারে ছোট হয়ে থাকে তাহলে বক্ষবন্ধনী পরার কোন প্রয়োজন নেই। কিন্তু যদি আপনার ব্রায়ের কাপ সাইজ হয়ে থাকে ডি বা ডি এর বেশী, অর্থাত্‍ যদি স্তন আকারে বড় হয়ে থাকে তাহলে ব্রা পরা আপনার জন্য ভালো। এতে স্তন শেপ হারানোর সম্ভাবনা কমবে এবং আপনি নানান রকমের অস্বস্তিকর অবস্থা থেকে পরিত্রান পাবেন।

নারীদের ব্রা নির্বাচনে ১০ টি ভুল

নারীরা তাদের শরীরকে আরো আকর্ষণীয় দেখাতে যে ব্রা ব্যবহার করেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিনিয়ত এর আকার, রং, ডিজাইন সব কিছুই বদলে যাচ্ছে। স্তনযুগলকে স্বাস্থ্যসম্মত ও শেপে রাখতে উপযুক্ত ব্রা ব্যবহার করা উচিৎ। অন্তর্বাস বলে কখনই যেন অবহেলা করে কম দামের বা অপরিচ্ছন্ন ব্রা ব্যবহার করবেন না।
পছন্দের দিক দিয়ে ভিন্নতা থাকলেও বিশ্বের প্রায় প্রতিটি নারী ব্রা নির্বাচনে সময় বেশ কিছু ভুল করেন। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক ব্রা নির্বাচনে ১০টি সাধারণ ভুল…

১. সস্তা ব্রা – অনলাইনে অফার দেখে ব্রা কেনা অনেকটা বাজার থেকে সস্তা দামে কেনার মতোই বোঝায়। সস্তা ব্রা ও ভালোমানের ব্রা’য়ের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। মানসম্পন্ন ব্রা গুলো পরতে যেমন আরামদায়ক, তেমনি ধোঁয়ার পরেও এর গুণগত মান আগের মতোই থাকে। তবে সস্তা ব্রা গুলো এক ধোঁয়াতেই মলিন হয়ে যায়।

২. ব্রার সাইজ বদল- নারীরা তাদের স্বাস্থ্য অনুযায়ী সঠিক ব্রা সাইজ নির্বাচনে সব থেকে বেশি ভুল করেন। শরীরের ব্রা যদি ঠিকমতো না বসে তাহলে বুঝতে হবে আপনার নির্বাচনে ত্রুটি আছে। প্রত্যেক নারীর শরীরে ওজন বেড়ে যাওয়া, ওজন হ্রাস পাওয়া, গর্ভাবস্থা ও হরমোজনিত কারণে বেশ পরিবর্তন দেখা দেয়। তাই ব্রা’র সাইজে পরিবর্তন আসাটাই স্বাভাবিক। তাই সব সময় সঠিক ব্রা সাইজ নির্বাচনে সতর্ক থাকা দরকার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

৩. ব্রা এর পুনরাবৃত্তি- অনেক নারী মনে করেন, একটি ব্রা টানা দুদিন পড়ে থাকলে তা প্রসারিত হবে। ধারণাটি আসলেই ভুল। ইলাস্টিকের স্ফীত হওয়াতে শরীরের তেমন কোন পরিবর্তন আসবে না। তবে এটি খুবই অস্বাস্থ্যকর শরীরের জন্য।

৪. ওয়াশিং মেশিনে ধোঁয়া- অনেকেই ব্রা ওয়াশিং মেশিনে পরিষ্কার করেন। তবে ব্রা হাতে ধোঁয়া সব থেকে নিরাপদ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে যদি একান্তই ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করতে হয়, তবে একটি ব্যাগে ব্রা রেখে তারপর তা ধোঁয়া যেতে পারে।

৫. সাইজে সমস্যা- অনেকেই হয়তো জানেন না, বাজারের ব্রা এর ব্র্যান্ডের সঙ্গে এর সাইজেও পরিবর্তন হয়। তাই আজ এক ব্র্যান্ডের পড়লেন এবং আগামী দিন একই সাইজের তবে অন্য ব্র্যান্ডের ব্রা কিনে আনলেন সেক্ষেত্রে সঠিক ব্রা সাইজ নির্বাচনে সতর্ক থাকতে হবে।

৬. মেয়াদোত্তীর্ণ ব্রা – একটি ব্রা এর সময়সীমা ৬ থেকে ৯ মাস। তবে অনেকেই যদি ব্রা টানা একবছর পড়েন তাহলে তা আসলেই সীমার বাইরে চলে যায়। ব্রা অকেজো হওয়ার আগে হুক ভেঙ্গে যায় এমনকি ফোমের তার বাঁকা হয়ে যায়।

৭. যত্রতত্র রেখে দেওয়া- ব্রা আলাদা করে সংরক্ষণ করুন। কাপড় যেভাবে যত্নসহকারে রাখা হয় ঠিক তেমন করেই ব্রা সংরক্ষণেও যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। অনেকেই ব্যবহারের পর ব্রা হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখেন। অনেকেই আবার কাপড়ের সঙ্গে রেখে দেন। এতে ফোমের ব্রা এর সাইজে পরিবর্তন আসাটা স্বাভাবিক। তাই ব্রা সংরক্ষণে আলাদা ড্রয়ার ব্যবহার করা একান্ত জরুরি।

৮. সাদা ব্রা পরিধান- অনেকেই মনে করেন, সাদা রঙের ব্রা যেকোন কাপড়ের নিচে পরা সম্ভব। বেশিরভাগ নারী অন্যান্য রঙের তুলনায় সাদা রঙের ব্রা নির্বাচনকেই বেশি প্রাধান্য দেন। গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রা এর রঙের পরিবর্তনের সঙ্গে মেজাজেও পরিবর্তন ঘটে। লাল রঙের ব্রা মন-মেজাজ ভালো রাখে বলে এক গবেষণায় পাওয়া গেছে। তাই কেবল এক রঙের কাপড় ব্যবহার না করে বিভিন্ন রঙের ব্রা পরিধানের চেষ্টা করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

৯. লুজ ফিটিং ব্রা – অনেকেই সঠিক ব্রা সাইজ নির্বাচন না করে লুজ ফিটিং ব্রা পড়তে পছন্দ করেন। তবে ঢিলেঢালা কাপড় শরীরের জন্য আরামদায়ক হলেও ব্রা লুজ পড়া ঠিক নয়। এতে ত্বকে ব্যথা অনুভূত হয়। এমনকি স্তনের আকৃতিতেও পরিবর্তন দেখা দেয়।

১০. যথেষ্ট পরীক্ষা না করা- একই ধরনের ব্রা পড়তে অভ্যস্ত অনেকেই। নিয়মিত একই ধরনের ব্রা ব্যবহার করা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। বাজারে ভিন্ন ভিন্ন আউটফিটের ব্রা পাওয়া যায়। চাইলেই পছন্দের ড্রেসের সঙ্গে মিলিয়ে ট্রাই করতে পারেন।

আরও দেখুন অ্যালোভেরা জেল মুখে ব্যবহারের নিয়ম

আরও দেখুন হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায়

ব্রা ব্যবহারের খুঁটিনাটি

প্রথম ব্রা ব্যবহারের সময় বেশ কিছু প্রশ্ন তৈরি হয়। যেমন- কীভাবে ব্যবহার করবো, কিভাবে সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ করব, ঘুমানোর সময়ও পরতে হবে কিনা, কীভাবে যত্ন নিবো এমন নানা প্রশ্ন। আমি চেষ্টা করছি সহজে কিছু পয়েন্ট বলে দেওয়ার।

১) যদি আপনার ব্রেস্ট টিস্যুর গ্রোথ বেশি হয়, তাহলে স্পোর্টস, টিউব কাপ বা ক্রপ টপের বদলে সঠিক ব্রা সাইজ হিসেবে AA কাপ সাইজের ব্রা বেছে নেওয়া যায়। এমন হলে অবশ্যই সফট কাপযুক্ত ব্রা বেছে নিতে হবে।

২) সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণের ক্ষেত্রে ব্রেস্টের মাপ বোঝার জন্য প্রতি চার সপ্তাহ অর্থাৎ এক মাস পরপর মাপ দিতে হবে। যদি খুব বেশি পরিবর্তন না হয়, তাহলে টিনেজ ব্রা গুলোই রেগুলার ব্যবহার করা যাবে।

৩) রাতে ঘুমানোর আগে ব্রা খুলে রাখতে হবে। কিছু ব্রা প্যাডিং হয়, সেগুলো পরে রাতে ঘুমালে ব্রেস্টের ডেভেলপমেন্ট বন্ধ হয়ে যায়। তাই সচেতন থাকতে হবে এ বিষয়েও।

৪) ইউজ করার পর ব্রা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। হার্শ কেমিক্যালযুক্ত কোনো প্রোডাক্ট নয়, বরং মাইল্ড ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে নিলেই হবে।

৫) ইনার ওয়্যার যদি প্রোপারলি ফিট না হয় অর্থাৎ সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ করতে না পারলে, তাহলে ব্রেস্ট এর শেইপ চেঞ্জ হয়ে যেতে পারে। সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ না করে ব্রা ব্যবহার করলে অনেক মেয়েরই স্তন ঝুলে যায়, ব্যাকপেইন হয়। তাই সঠিক ব্রা সাইজ মেপে ব্রা চুজ করা খুবই ইম্পরট্যান্ট।

৬) শপ হোক বা অনলাইন, ব্রা সিলেকশনে ম্যাটারিয়ালের দিকে খেয়াল রাখা খুবই জরুরি। ভুল ম্যাটেরিয়াল দিয়ে তৈরি ব্রা বেশিক্ষণ পরে থাকলে ইচিং, ইনফেকশন, স্যাঁতস্যাঁতে ফিল হতে পারে। এতে কাজে মন বসানো যাবে না। সব সময় অস্বস্তি লাগবে।

এই‌ সম্পর্কে আরও জানুন

তাই সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ করে ব্রা পরিধান করা অতীব জরুরি।

রাতে কি ব্রা পড়ে ঘুমানো যায়?

রাতে ব্রা না পড়াই ভালো। এতে করে মাংসপেশি সচল থাকে এবং ব্লাড সারকুলেশন ভালো হয়।

ব্রা এর কি সাইজ বদল হয়?

জি, বয়স ও ওজনের তারতম্যের ফলে ব্রা এর সাইজ পরিবর্তিত হয়ে থাকে।

একটি ব্রা কতদিন ব্যবহার করা যায়?

একটি ব্রা এর সময়সীমা ৬ থেকে ৯ মাস।

ব্রা পড়লে কি স্তন ক্যান্সার (cancer) হয়?

সারাক্ষণ ব্রা পরে থাকলে কিংবা সঠিক ব্রা সাইজ ব্যবহার না করলে স্তন ক্যান্সার হয়, এমন কোন নিশ্চিত প্রমাণ এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের কাছে নেই। আবার স্তন ক্যান্সার যে হয়ই না, সেটাও গ্যারান্টি দিয়ে বলা যাবে না। কিন্তু হ্যাঁ, সারাক্ষণ ব্রা পরে থাকার আরও কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। যেমন, একই ব্রা সারাদিন পরে থাকায় স্তনে (breast) র্যাশ বা ত্বকের নানান রকম অসুখ হতে পারে। সারাক্ষণ ব্রা পরে থাকার ফলে ঘাম হয়, ফলে নানান রকম ফাঙ্গাল ইনফেকশন হতে পারে। সঠিক ব্রা সাইজ নির্ধারণ না করে ব্রা ব্যবহার করতে ব্রা এর ফিতায় কাঁধ ও পিঠে ত্বক ক্ষতিগ্রস্থ (harmful) হতে পারে, কাঁধ বা পিঠে এবং বুকে ব্যথা হতে পারে টাইট ব্রা এর কারণে।


Leave a Comment

error: Content is protected !!