ডেঙ্গু টেস্ট কখন করতে হয়

ডেঙ্গু জ্বর হলো একটি ভাইরাস জনিত রোগ, যা সংক্রমিত মশার কামড়ের মাধ্যমে মানুষের কাছে ছড়িয়ে যায়। এসিড মশা বা ডেঙ্গু মশা কামড়ের কারণে ভাইরাস সংক্রমণ হয় এবং ৩ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গ গুলো দেখা যায়। ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গ গুলোর মধ্যে রয়েছে বমি বা বমি বমি ভাব, জ্বর, মাথাব্যথা, পেশিতে ব্যথা ইত্যাদি। এই লক্ষণ বা উপসর্গ গুলো দেখার পর ডেঙ্গু টেস্ট বা পরীক্ষা করতে হয়। সঠিক সময়ের মধ্যে ডেঙ্গু টেস্ট (dengue test) করা না হলে বিপদ হতে পার, তাই ডেঙ্গু টেস্ট কখন করতে হয় সেটা জানা উচিত।

চিকিৎসকরা বলে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীরা যদি সঠিক সময়ের মধ্যে চিকিৎসা না নেই এবং অবহেলা করে তাহলে তাদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। যদি, সঠিক সময়ের মধ্যে চিকিৎসা নেওয়া হয় তাহলে ডেঙ্গু রোগের মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। অবহেলা করা হলে এই রোগ খুব ভয়াবহ অবস্থায় চলে যেতে পারে। গত বছর প্রায় ২ লাখের কাছাকাছি মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ৫০ জন বা তারও বেশি মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়।

বর্তমানে জ্বর হলে সবাই কম বেশি মনে করে ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে। ফলে তাদের মাথায় প্রথম চিন্তা আসে ডেঙ্গু জ্বর হলে করণীয় কি, ডেঙ্গু টেস্ট কোথায় করা হয় ইত্যাদি। তবে এটা সত্য দেশজুড়ে ডেঙ্গু রোগের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আক্রান্তের পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যুর সংখ্যাও ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেকের হয়তো জানা নেই ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার কত দিনের মধ্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে হয়, যার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।

যাইহোক, এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে ডেঙ্গু টেস্ট কখন করতে হয়, ডেঙ্গু টেস্ট রিপোর্ট পেতে কত সময় লাগে, ডেঙ্গু পরীক্ষার খরচ, ডেঙ্গু টেস্ট কোথায় করা হয়, ডেঙ্গু নেগেটিভ মানে, ডেঙ্গু জ্বর হলে করণীয় ইত্যাদি সকল বিষয় সম্পর্কে। আশা করি এই আর্টিকেলটা আপনাদের উপকার করবে।

ডেঙ্গু টেস্ট কখন করতে হয়

সাধারণত চিকিৎসকরা বলে, জ্বর আসার ৫ দিন পর ডেঙ্গু টেস্ট করতে হয়। তবে, অনেক চিকিৎসকরা বলে জ্বর ৪ থেকে ৫ দিনের বেশি হয়ে গেলে ডেঙ্গু পরীক্ষা করিয়ে লাভ নেই। ডেঙ্গু জ্বরের প্রথম দিন থেকেই শেষ ১০ দিন পর্যন্ত ডেঙ্গু পরীক্ষার ফলাফল ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। যেমন; জ্বর আসার ৯ – ১০ দিন পর ডেঙ্গু টেস্ট করানো হলে এই পরীক্ষায় শুধু নেগেটিভ ফলাফল আসতে পারে। তাই, চিকিৎসক জ্বর আসার ৪ থেকে ৫ দিন পর ডেঙ্গু টেস্ট করার পরামর্শ দেই।

সোজা কথা, জ্বর হলে ডেঙ্গু টেস্ট কখন করতে হয় সেদিকে খেয়াল না করে। জ্বর হওয়ার সাথে সাথে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। কারণ জ্বর হলেই যে ডেঙ্গু হবে তেমনটা কিন্তু নয়। ডেঙ্গু জ্বর বলে শুধু ডেঙ্গু টেস্ট করে বসে থাকলে হবে না। টাইফয়েড, নিউমোনিয়া, ফ্লু, প্রস্রাবের সংক্রমণ এবং অন্যান্য রোগের কারণে জ্বর হতে পারে। তাই প্রাথমিক অবস্থায় ডাক্তারের কাছে গিয়ে জ্বরের কারণ খুঁজে বের করতে হবে। এই ধরনের রোগ গুলো খুব জটিল তাই চিকিৎসকের উপর ছেড়ে দিন।

ডেঙ্গু নেগেটিভ নাকি পজিটিভ সেটা পরীক্ষার মাধ্যমে শতভাগ সঠিকভাবে বলা খুব কঠিন। প্রথম বার ডেঙ্গু এনএস১ পরীক্ষায় হয়তো পজিটিভ আসতে পারে। কিন্তু, দুই দিন পর আবার আরেকটা ল্যাবে গিয়ে নেগেটিভ রিপোর্ট পেতে পারেন। তাই, ডেঙ্গু জ্বর নেগেটিভ নাকি পজেটিভ এটি নির্ভর করে লক্ষণ, উপসর্গ ও অন্যান্য পরীক্ষার ফলাফলের উপর। অ্যান্টিবডি বা অ্যান্টিজেন ডেঙ্গু এই পরীক্ষা গুলো অনেক গুরুত্বপুর্ণ। তবে, এর পাশাপাশি অণুচক্রিকা, রক্তের অ্যালবুমিন, শ্বেতরক্তকণিকা, হিমাটোক্রিট এই পরীক্ষা গুলোও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

আরো পড়ুন: খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায়

ডেঙ্গু জ্বর কত দিন থাকে

সাধারণত, ডেঙ্গু জ্বর ২ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত থাকে। বেশিরভাগ লোকের ডেঙ্গু জ্বর এক সপ্তাহের পর ভালো হয়ে যায়। বেশি হলে ডেঙ্গু জ্বর ২ সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যাবে। তবে, অনেক সময় পরিস্থিতি খুব খারাপ হতে পারে। এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকি পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। তাই জ্বর হলে ডাক্তারের কাছে যাওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

যদি জ্বরের সাথে মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাব, সর্দি, কাশি, পেশিতে তীব্র ব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা হাড়ে ও গাঁটে গাঁটে ব্যথা ইত্যাদি দেখা দেয় তাহলে ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ রয়েছে। ব্যথার সাথে ১০২ এর নিচে জ্বর থাকলে প্রতি ছয় ঘন্টা পর পর প্যারাসিটামল খেতে হবে। যদি জ্বর ১০২ এর উপরে হয় তাহলে প্যারাসিটামল সাপোজিটরি খেতে হবে। ডাক্তারের অনুমতি ছাড়া প্যারাসিটামল ব্যতীত অন্য কোনো ব্যথার ওষুধ ভুলেও খাওয়া যাবে। এমনকি প্যারাসিটামল খাওয়ার সময় ডাক্তারের অনুমতি নেওয়া উচিত। অন্যথায়, মৃত্যুঝুঁকি রয়েছে।

ডেঙ্গু জ্বর থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়ার জন্য বেশি বেশি প্রোটিন ও পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ফলের রস, ডাবের পানি, ওরস্যালাইন ইত্যাদি খেতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা গ্রহন করলে ডেঙ্গু জ্বরের ১ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যাবে।

আরো পড়ুন: ডিম খেলে কি প্রেসার বাড়ে

ডেঙ্গু জ্বরের টেস্টের নাম | ডেঙ্গু রোগের টেস্ট

ডেঙ্গু টেস্ট কি কি সেগুলো জেনে নিন:

  1. ডেঙ্গু এনএস ১: এটি ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য ২০০৬ সালে আবিষ্কার করা হয়। এর মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগটি সনাক্ত করা যায়। ডেঙ্গু পজিটিভ কি-না সেটি ডেঙ্গু এনএস ১ (NS1) এর মাধ্যমে দেখা যায়। চিকিৎসকরা বলে, জ্বরের প্রথম দিন থেকেই NS1 পরীক্ষার ফলাফল পজেটিভ হয়। ৪ থেকে ৫ দিন পর সেটি নেগেটিভ হয়ে যায়। ৫ দিনের বেশি হয়ে গেলে ডেঙ্গু এনএস ১ টেস্ট করে খুব একটা লাভ হয় না। তবে শুরুর দিকে এনএস ১ টেস্টের ফলাফল নেগেটিভ হলেই যে ডেঙ্গু হয় নাই সেটা নিশ্চিত ভাবে বলা খুব কঠিন। কারণ, পরের দিন পজেটিভ আসতে পারে।
  2. আইজিজি: শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কতটুকু আছে সেটা বোঝার জন্য ডাক্তাররা আইজিজি (IGG) পরীক্ষা দিয়ে থাকে। যদি রোগী আগে থেকে ডেঙ্গু রোগে সংক্রমণ থাকে তাহলে রক্তে আইজিজি পজিটিভ আসবে এবং বর্তমানে সে আবার দ্বিতীয়বারের মতো ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত। এর মানে হলো রোগীটি বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে, তাই বিশেষ সতর্ক অবলম্বন করতে হবে।
  3. ডেঙ্গু আইজিএম: সাধারণত, জ্বর আসার ৪-৫ দিন পর আইজিএম টেস্টের মাধ্যমে পজিটিভ কি-না সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। সাধারণত, চিকিৎসকরা এই টেস্টটি করার পরামর্শ দিয়ে থাকে। তবে জ্বর আসার ৯ থেকে ১০ দিন পর এই টেস্ট করে লাভ নেই। কারণ, তখন শুধু নেগেটিভ দেখাতে পারে। যদি আইজিএম পরীক্ষায় পজিটিভ আসে তাহলে বুঝে নিতে হবে রোগী ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত।
  4. সিবিসি: এই টেস্টটি মূলত রক্ত পরীক্ষা। এটি কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট নামেও পরিচিত। শরীরে কোন অস্বাভাবিকতা আছে কিনা তা এই টেস্টের মাধ্যমে খুব সহজে বোঝা যায়। এছাড়া, প্রয়োজনীয় কোষীয় উপাদানের ঘনত্বের পরিমাপ ও জানা যায়।
  5. প্রোথ্রোমবিন টাইম বা পিটি: রক্তের অংশের প্লাজমা জমাট বাঁধতে কত সময় নেই তা পরিমাপ করার জন্য প্রোথ্রোমবিন টাইম বা পিটি টেস্ট করা হয়।
  6. ইন্টারন্যাশনাল নর্মালাইজড রেশিও বা আইএনআর: রক্ত জমাট হতে কতটা সময় লাগে সেটি পরীক্ষার করার জন্য আইএনআর টেস্ট করানো হয়। কত দ্রুত রক্ত জমাট বাঁধছে সেটা খুব সহজে জানা যায়।
  7. ব্লিডিং টাইম ক্লটিং টাইম বা বিটিসিটি: সাধারণত ডেঙ্গু রোগীদের এই পরীক্ষার তেমন কোন প্রয়োজন হয়। চিকিৎসক যদি মনে করে রোগীর এটি প্রয়োজন রয়েছে তাহলে এই পরীক্ষা করতে হয়। অপারেশন করার আগে বিটিসিটি পরীক্ষা করতে হয়।

ডেঙ্গু টেস্ট রিপোর্ট পেতে কত সময় লাগে

সাধারণ, ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা বা তার চাইতে কম সময়ের মধ্যে ডেঙ্গু টেস্ট রিপোর্ট পাওয়া যায়। তবে, কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ডেঙ্গু টেস্ট রিপোর্ট দিতে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় নেই। তবে কারো ইমার্জেন্সী প্রয়োজন হলে সে ৩ ঘণ্টার মধ্যে ডেঙ্গু রিপোর্ট পেতে পারে। তবে, বিভিন্ন ধরনের ডেঙ্গু টেস্ট হয়ে থাকে। ডেঙ্গু পরীক্ষার ধরনের উপর নির্ভর করে সময় কম বেশি ও লাগতে পারে।

ডেঙ্গু টেস্ট কোথায় করা হয় | Dengue Test

বাংলাদেশে যতগুলো সরকারি হাসপাতাল রয়েছে, সব সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু টেস্ট বা ডেঙ্গু পরীক্ষা করানো যাবে। ২০২৩ সালের ১২ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই তথ্য জানানো হয়। এছাড়া, তারা বলে এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে এবং আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। জ্বরের সাথে খুব তীব্র মাথা ব্যথা, পাতলা পায়খানা, পেশীতে ব্যথা, বমি বমি ভাব ও হাড়ে ব্যথা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং প্রয়োজন হলে ডেঙ্গু টেস্ট করতে হবে।

এছাড়া, স্বাস্থ্যকর খাবার ও তরল জাতীয় খাবার যেমন; পানি, ডাবের পানি, ফলের রস ও স্যুপ ইত্যাদি খেতে হবে। খাবারের পাশাপাশি মশার কামড় থেকে বাঁচতে হবে। তার জন্য যতটা সম্ভব শরীর ঢেকে রাখতে হবে এবং ঘুমানোর সময় মশারি টানাতে হবে।

আরো পড়ুন: পায়খানার সাথে রক্ত পড়া বন্ধের উপায়

ডেঙ্গু মশা কামড়ানোর কত সময় পর জ্বর হয়

ডেঙ্গু মশা কামড়ানোর ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে জ্বর আসে। এছাড়া, ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হওয়ার ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু লক্ষণ গুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়। চিকিৎসকরা এই সময়টার নাম দিয়েছে ইনকিউবেশন পিরিয়ড। ডেঙ্গু জ্বর আসার পর এই জ্বর রোগীর শরীরে আর ৫-৭ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে।

একজন মানুষের সারাজীবনে সর্বোচ্চ ৪ ধরনের ডেঙ্গু হতে পারে সেগুলো হলো: ডেন ১, ডেন ২, ডেন ৩ এবং ডেন ৪। এর মানে হলো একজন মানুষের তার জীবনে সর্বোচ্চ ৪ বার ডেঙ্গু হতে পারে। চিকিৎসকরা বলে, যেকোন এক ধরনের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পর যদি সেটা ভালো হয়ে যায় তাহলে তার শরীরে যে এন্টিবডি তৈরি হয়, সেটি সারাজীবনের জন্য কাজ করবে। ফলে পুনরায় এই ধরনের ডেঙ্গু হওয়ার সম্ভবনা নেই। তখন ভিন্ন আরেক ধরনের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে পারে। এভাবে সর্বোচ্চ ৪ ধরনের হতে পারে।

সাধারণত, শীতকালে এসিড বা ডেঙ্গু মশা স্বাভাবিকের চাইতে বেশি বেঁচে থাকে। গরম কালে এসিড মশা কম বেঁচে থাকে কারণ; তাদের এই সময় বৃদ্ধি ও বংশবিস্তার দ্রুত হয়। তবে ডেঙ্গু বা এসিড মশা গড়ে ১৫-৪০ দিন পর্যন্ত বাঁচে। তাপমাত্রার ওপর এটি নির্ভর করে। দিনে বা রাতে যে কোন সময় এসিড মশা কামড়াতে পারে। এমন এক সময় ছিল শুধুমাত্র দিনের বেলা কামড়াতো। মানুষের শরীরে শুধুমাত্র একটি স্ত্রী এডিস মশা গড়ে ৪ থেকে ৬ বার পর্যন্ত কামড়ায়, তাও আবার পেটে ডিম থাকা অবস্থায়।

ডেঙ্গু রোগ এক মানুষ থেকে জন্য মানুষে ছড়ায় না। এটি কোন ধরনের ছোঁয়াচে রোগ নয়। তাই অন্য কেউ চাইলে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সাথে থাকতে পারে, তার ব্যবহার করা জিনিস ব্যবহার করতে পারবে। শুধুমাত্র এসিড মশা কামড়ালে এই রোগ হয়।

ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হবে

ডেঙ্গু জ্বর হলে ডাবের পানি, স্যুপ, আসা দিয়ে তৈরি রং চা, পাকা কলা, পাকা পেঁপে, তরমুজের রস, বিভিন্ন ফলের রস, ভাত, সুজি এবং পানি খেতে হবে। ডেঙ্গুরুলে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির অভাব দেখা যায় তাই বেশি বেশি তরল জাতীয় পানি বা অন্যান্য খাবার খেতে হবে। সবুজ শাকসবজি, ডালিম ও খনিজ সমৃদ্ধ ফল খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া, গরুর দুধ, ছাগলের দুধ, মহিষের দুধ ডেঙ্গু জ্বর রোগীদের জন্য উপকারী।

ডেঙ্গু জ্বর হলে মশলাদার, তৈলাক্ত ও ভাজা খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এই ধরনের খাবার খাওয়া যাবে না। এছাড়া, ফ্রিজে রাখা ৩ দিনের বেশি পানি ফেলে দিতে হবে। এগুলো খাওয়া যাবে না। অতিরিক্ত চিনি লবণ ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। প্রক্রিয়াজাত খাবার, বাহিরের খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

ডেঙ্গু নেগেটিভ মানে কি

ডেঙ্গু নেগেটিভ মানে বুঝায় ডেঙ্গু হয়নি। আর ডেঙ্গু পজেটিভ মানে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হওয়াকে বোঝায়। অনেক সময় ডেঙ্গু নেগেটিভ হলে আমরা অনেকেই খুশি হয়ে যায়। কিন্তু জেনে রাখুন ডেঙ্গু নেগেটিভ মানে এই না যে ডেঙ্গু হয় নি। প্রথম বার ডেঙ্গু নেগেটিভ আসলে পরের বার পরীক্ষায় ডেঙ্গু পজেটিভ আসতে পারে। তাই, নিয়মিত চিকিৎসা করতে হবে।

অনেকেই প্রশ্ন করে ডেঙ্গু জ্বর হলে গোসল করা যাবে? চিকিৎসকরা এই বিষয়ে বলে জ্বরের সঙ্গে গোসলের কোন সম্পর্ক নেই। তাই ডেঙ্গু জ্বর হলে গোসল করা যাবে। ডেঙ্গু হলে সাধারণত জ্বর ও ঠান্ডা লাগে তাই এই সময় কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করা উচিত এবং গোসল করার পর চুল দ্রুত শুকিয়ে ফেলতে হবে।

আরো পড়ুন: ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর ১০ লক্ষণ

ডেঙ্গু পরীক্ষার খরচ

বাংলাদেশের সকল সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার খরচ ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। বাংলাদেশের সকল বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার খরচ ৩০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ডেঙ্গুর বিভিন্ন পরীক্ষার মূল্য: এনএস-১ টেস্ট ৩০০ টাকা, আইজিএম টেস্ট ৩০০ টাকা, সিবিসি টেস্ট ৪০০ টাকা।

ডেঙ্গু জ্বর হলে করণীয়

ডেঙ্গু জ্বর হলে প্রচুর পরিমাণ বিশ্রাম নিতে হবে। ডেঙ্গু জ্বর ৭-১৪ দিনের বেশি স্থায়ী হলে ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে, এমনি মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। জ্বর ১০২ এর নিচে হলে প্যারাসিটামল খেতে পারেন। প্রতি ৬ ঘণ্টা পর পর খাওয়া যাবে। এছাড়া ডাবের পানি, ডালিম, তরমুজ, বিভিন্ন ফলের রস ও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে।

যাইহোক, ডেঙ্গু রোগ হলে বসে থাকবেন না। সঠিক সময়ের মধ্যে চিকিৎসা নেওয়ার চেষ্টা করবেন। অতিরিক্ত চিন্তার কারণ নেই। সঠিক সময়ের মধ্যে চিকিৎসা নিলে এই রোগ ভালো হয়ে যাবে। সবসময় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী জীবনযাপন করতে হবে তাহলে ডেঙ্গু রোগ ভালো হয়ে যাবে।

আমি “Health Bissoy” ও বাংলাদেশের অনেক ওয়েবসাইটে সহকারী কন্টেন্ট স্ট্রাটেজিস্ট হিসাবে কাজ করি। পড়াশোনার পাশাপাশি আমি একজন এসইও এক্সপার্ট এবং জুনিয়র ওয়েব ডেভেলপার। ২০২৩ সাল থেকে আমি বাংলাদেশের অনেক ওয়েব সাইটে কন্টেন্ট স্ট্রাটেজিস্ট ও ডিজাইনার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি।

Leave a Comment

error: Content is protected !!